বয়কট সামলাতে আগে তোপ, পরে চা-কৌশল
বিধানসভা কক্ষের ভিতরে প্রবল আক্রমণ। আবার নিজের ঘরে চা-চক্রে আহ্বান। এই জোড়া কৌশলেই বিরোধীদের বয়কট-নীতি মোকাবিলার চেষ্টা চালালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিনের শেষে অবশ্য বলা যাচ্ছে না, শাসক-বিরোধী সম্পর্কে পুরোপুরি বরফ গলার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেল। কারণ, বিধানসভায় প্রশ্নো্ত্তর-পর্বে মুখ্যমন্ত্রীর অংশগ্রহণের দাবি থেকে সরে আসেনি বিরোধীরা।
এই অধিবেশনের আগে পর্যন্ত তাঁর হাতে-থাকা ৮টি দফতর নিয়ে জমা পড়া বামেদের ৬৪টি প্রশ্নের মধ্যে মাত্র একটির উত্তর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী! চলতি অধিবেশনে গত শুক্রবার তাঁর জন্য নির্ধারিত প্রশ্ন-পর্ব বাতিল হয়েছে। আগামী শুক্রবারও প্রশ্ন রাখা যাবে না বলে ঠিক হয়েছে। তিনি প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যাচ্ছেন বলেই পূর্ব ঘোষণামতো সোমবার রাজ্যপালের ভাষণের উপরে বিতর্কে মুখ্যমন্ত্রীর জবাবি বক্তৃতা বয়কট করেছে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস। এর আগে বিধানসভার ৭৫ বর্ষপূর্তির সমাপ্তি অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার দিনও বয়কটের কৌশল নিয়েছিল বিরোধী শিবির। এই পরিস্থিতিতে অস্বস্তি সামাল দিতেই এ দিন প্রথমে আক্রমণের পথে গিয়েও পরে সৌজন্যের মোড়কে বিরোধীদের সঙ্গে সেতু-বন্ধনের চেষ্টা হয়েছে বলে পরিষদীয় সূত্রের ব্যাখ্যা।
জবাবি বক্তৃতায় বিরোধীদের তীব্র আক্রমণ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কংগ্রেস ও বামেদের ফাঁকা আসন দেখিয়ে মন্তব্য করেছিলেন, “ওদের বাইরে পাঠিয়ে দিয়েছে। ওই আসন এর পরে আমরাই দখল করব মানুষের আশীর্বাদে!” মুখ্যমন্ত্রীর ওই মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়াও হয়েছিল বিরোধী শিবিরের তরফে। কবি জীবনানন্দ দাশের জন্মদিন বলে তাঁর কবিতার একটি উদ্ধৃতি এ দিনের বক্তৃতায় ব্যবহার করেন মুখ্যমন্ত্রী। যার জের টেনে বিরোধী দলনেতা পাল্টা কটাক্ষ করেছিলেন, “এক দিন ওই বিরোধী আসনে বসেই ওঁদের বলতে হবে, আবার আসিব ফিরে!” আর কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়ার প্রতিক্রিয়া ছিল, “বিরোধীদের আসন দখল করে নেব, এ তো ভয়ঙ্কর কথা! জ্যোতি বসু বা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের দাম্ভিকতা দেখেছি। জাতীয়তাবাদী বলে দাবি করা এক মুখ্যমন্ত্রীর দম্ভ এই দেখছি!”
পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে দেখে অর্থমন্ত্রীর বাজেট চলাকালীন পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে দূত করে সূর্যবাবু ও মানসবাবুর কাছে চায়ের আসরের আমন্ত্রণ পাঠান মুখ্যমন্ত্রী। সৌজন্যের আহ্বানে সাড়া দিয়ে সূর্যবাবু, মানসবাবু ও কংগ্রেস পরিষদীয় দলনেতা মহম্মদ সোহরাব যান মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে।
চায়ের অবসরে মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের বলেন, অনেক সময় তিনি আসেন, যখন বিরোধীরা উপস্থিত থাকেন না। সব প্রশ্নের জবাব তিনিই দেবেন, এমন না-ও হতে পারে। বিরোধী দলনেতা মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন, তা হয় না। মুখ্যমন্ত্রীকে শুক্রবার করে এসে প্রশ্নের জবাব দিতে হবে। মানসবাবু, সোহরাব আবার বলেন, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে একতরফা বঞ্চনার অভিযোগও ঠিক নয়। মানসবাবু ওই ফাঁকেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে নবান্নে দেখা করার সময় চেয়ে নিয়েছেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.