|
|
|
|
প্রণবকে বিঁধেও তাঁকেই অনুসরণ
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি
১৭ ফেব্রুয়ারি |
আরও এক বার নাম না করে পূর্বসূরির সমালোচনা করলেন। আবার পূর্বসূরির দেখানো পথে হেঁটেই অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার চেষ্টাও চালালেন পালানিয়প্পন চিদম্বরম! মনমোহন সিংহ সরকারের শেষ বাজেটেও অর্থনীতির সঙ্কট এবং তার সমাধান নিয়ে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে চিদম্বরমের বিরোধ আরও এক বার স্পষ্ট হয়ে গেল।
প্রণববাবু রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরেই তাঁর একাধিক সিদ্ধান্ত বদলে ফেলতে শুরু করেছিলেন চিদম্বরম। গত বছর বাজেট পেশ করতে গিয়ে প্রণব-জামানার অবসানের ইঙ্গিতই যেন দিয়েছিলেন তিনি। একাধিক বিষয়ে প্রণববাবুর নেওয়া সিদ্ধান্তের পরোক্ষ সমালোচনা করতেও ছাড়েনি। সমালোচনা এ বারেও করলেন। কিন্তু তার পরেও সঙ্কট কাটাতে প্রণব-দর্শনেই আস্থা রাখলেন তিনি। অন্তর্বর্তী বাজেটে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে আজ চিদম্বরম উৎপাদন শুল্কের হার ১২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করেছেন। আন্তর্জাতিক মন্দার হাত থেকে অর্থনীতিকে বাঁচাতে ঠিক যে পথে হেঁটেছিলেন প্রণব। ২০০৯ সালের অন্তর্বর্তী বাজেটে তিনিও উৎপাদন শুল্ক কমিয়ে বিক্রি বাড়াতে চেয়েছিলেন।
প্রণব জমানায় শুল্ক হার কমানোয় রাজকোষ ঘাটতি বেড়ে গিয়েছিল। সে জন্য একাধিক বার প্রণববাবুর সমালোচনা করেছেন চিদম্বরম। প্রকাশ্যেই। আজ তিনিও ফের সে পথেই হাঁটার পরে প্রশ্ন উঠেছে, প্রণবের নীতির সঙ্গে তাঁর নীতির ফারাক কোথায়?
সাংবাদিক বৈঠকে এর জবাব দিতে গিয়ে ফের প্রণব-নীতিরই সমালোচনা করে চিদম্বরমের দাবি, “এই দু’টোর মধ্যে কোনও তুলনাই হয় না। দু’টো সম্পূর্ণ আলাদা। সেই সময় আসলে টাকা ধার করে খরচ করা হয়েছিল। আজকে আমরা যেটা করেছি, তা হল নির্দিষ্ট কিছু শিল্প বেছে তাদের কর বাবদ সুরাহা দিয়েছি। বলা হয়েছে, কম কর দাও, বেশি বিক্রি করো। কোনও টাকা ধার করা হয়নি, কোনও ব্যয়ও হয়নি।” এই শুল্ক ছাঁটাইয়ের ফলে সরকারের বিরাট কিছু রাজস্ব ক্ষতি হবে বলেও মানতে নারাজ চিদম্বরম। তাঁর যুক্তি, শুল্ক কমানোর ফলে যেটুকু কর বাবদ আয় কমবে, বিক্রি বাড়লে সেই ক্ষতি পূরণ হয়ে যাবে। |
বিস্তারিত... |
অর্থ মন্ত্রকের একটা অংশ অবশ্য প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী সম্পর্কে বর্তমান অর্থমন্ত্রীর এই মূল্যায়ন মানতে রাজি নয়। তাঁদের বক্তব্য, ওই সময় উৎপাদন শুল্ক কমানো ছাড়া অন্য কোনও
উপায় ছিল না। তা ছাড়া প্রণববাবু একার মতে কোনও সিদ্ধান্ত নেননি। গোটা মন্ত্রিসভাই তাতে সিলমোহর বসিয়েছিল। যাতে সামিল ছিলেন চিদম্বরম নিজেও।
তা ছাড়া আন্তর্জাতিক মন্দার হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে তিন দফায় ‘স্টিমুলাস প্যাকেজ’ ঘোষণা করা হয়। প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় অর্থ মন্ত্রকের দায়িত্বে ছিলেন স্বয়ং মনমোহন।
তৃতীয় দফায় ২০০৯ সালের অন্তর্বর্তী বাজেটে উৎপাদন শুল্ক ও পরিষেবা করের হার কমানো হয়। কিন্তু সেই বাজেটের প্রস্তুতি আগেই সারা হয়ে গিয়েছিল।
অর্থ মন্ত্রকের আর একটি সূত্র বলছে, কর ব্যবস্থার সংস্কারে কিছুই করতে পারেননি চিদম্বরম। তা সে প্রত্যক্ষ কর বিধি (ডিটিসি) হোক বা পণ্য পরিষেবা কর (জিএসটি)। এই দু’টি কর সংস্কারের কাজ হলে অর্থনীতি চাঙ্গা হত। আজ অবশ্য এ জন্য বিরোধীদের দিকেই আঙুল তুলেছেন চিদম্বরম।
যদিও অর্থ মন্ত্রকের একাংশের মতো বিরোধীরাও বলছেন, চিদম্বরম তো এ বিষয়ে ঐকমত্যই গড়ে তুলতে পারেননি। তাঁদের বক্তব্য, প্রণববাবুর জমানাতেই জিএসটি চালুর কাজ সব থেকে বেশি এগিয়েছিল। |
|
|
|
|
|