জঞ্জাল ফেলার নির্দিষ্ট জায়গার অভাবে শহরের ভিতরে এবং জাতীয় সড়কের ধারে জঞ্জাল ফেলছে খোদ পুরসভাই। এ দিকে জমা জঞ্জাল থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। সমস্যাটি রামপুরহাটের। পুরপ্রধান অবশ্য দাবি করছেন, শহর আগের থেকে আরও বেশি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। কিন্তু শহর ঘুরলে অন্য চিত্র ধরা পড়বে।
পুরসভা সূত্রে খবর, শহর পরিষ্কার করার জন্য প্রতি মাসে রামপুরহাট পুরসভার ১৭টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলদের পাঁচ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। তেমনই জঞ্জাল ফেলার শ্রমিক এবং পুরসভার তিনটি ট্রাক্টরে মাল বহনের জন্য (জ্বালানি) প্রায় তিন লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়। অথচ পরিকল্পনার অভাবে শহরের প্রাণকেন্দ্র পাঁচমাথা মোড়ে (যেখানে রয়েছে মহকুমাশাষক, মহকুমা পুলিশ আধিকারিকের কার্যালয়, ট্রেজারি অফিস, শহরের প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান) আজও জঞ্জাল ফেলা হয়। এ ছাড়া, বামনি গ্রাম মোড় লাগোয়া কাছেই রয়েছে মহকুমা শ্রম দফতর, এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ অফিস-সহ আরও তিনটি অফিস। ওই অফিসগুলিতে যাওয়ার পথে জাতীয় সড়কের ধারে এবং শহরের ভিতরে জনবসতি এলাকায় প্রতিদিন জঞ্জাল ফেলা হচ্ছে। একই অবস্থা সানঘাটা কাঁদর লাগোয়া জাতীয় সড়কে। |
রামপুরহাটে তোলা নিজস্ব চিত্র। |
৯ এবং ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে ভাঁড়শালাপাড়ায় প্রতিদিন বাজার বসে। ওই বাজারের জঞ্জাল জাতীয় সড়কের ধারে ফেলা হয়। ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূলের পূর্ণিমা মণ্ডল, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফব-র স্বপন দত্ত বলেন, “এলাকা বাড়ছে। ময়লা ফেলার জায়গার অভাব আছে। তা হলে বাজারের আবর্জনা কোথায় ফেলব?” স্বপনবাবু তো বলেই ফেললেন, “ওয়ার্ডের আবর্জনা যেখানে ফেলা হয় সেখানে যদি বাজারের আবর্জনা ফেলা হয়, তা হলে তো এলাকাবাসীর বাস করা দায় হয়ে পড়বে। তা ছাড়া, বাজারের দোকানদারই বা কোথায় যাবে। তাই তারা বাধ্য হয়ে জাতীয় সড়কের ধারে ৯ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে জঞ্জাল ফেলে।”
পূর্ণিমা মণ্ডল বলেন, “আমার ওয়ার্ডে ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা নাই। সপ্তাহে একদিন ওয়ার্ডে ট্রাক্টর এসে জমে থাকা আবর্জনা নিয়ে যায়। কিন্তু একটা বাজারের দৈনন্দিনকার জঞ্জাল যদি জায়গার অভাবে জাতীয় সড়কের ধারে ফেলা হয়, আমি কী করব?” পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, জঞ্জাল ফেলার জায়গা শহরের বাইরে ২০০৬-২০০৭ আর্থিক বছরে কেনা হয়। কিন্তু ওই জায়গা ক্রমশ ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে নতুন জায়গা খোঁজা হচ্ছে এবং ওই জায়গায় পুরসভার তরফে প্রকল্পের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
পুরপ্রধান অশ্বিনী তিওয়ারির দাবি, “শহর পরিষ্কার করার টাকা পুরসভার নিজস্ব আয় থেকে খরচ করা হয়। আয় বাড়ানোর কোনও পরিকল্পনা নেওয়া হলে বাধা দেওয়া হয়। ভাঁড়শালাপাড়া এলাকার বাজার থেকে আমাদের কোনও আয় হয় না। তাই পরিষেবা দেব কী করে? তবুও আগের থেকে শহর অনেক শহর এখন পরিষ্কার থাকে।” বুধবারের মধ্যে জঞ্জাল অন্যত্র সরানোর ব্যবস্থা করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন পুরপ্রধান। |