হঠাৎ বৃষ্টিতে কোপ আলু-পেঁয়াজে
শীতের মাঝেই বৃষ্টি হওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন চাষিরা। টানা বৃষ্টির ফলে চাষের খেতে জমেছে জল। ফলে দেখা গিয়েছে ক্ষতির আশঙ্কা। এই আবহাওয়া চলতে থাকলে সমস্যা আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা।
সমস্যা মেটানোর জন্য কোথাও কোথাও চাষিরা জমিতে নালা কেটে জল বের করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ জল বের করার জন্য পাম্প মেশিন ব্যবহার করছেন। চাষিরা জানিয়েছেন, এই মরসুমে বর্ষার পরেও অতিবৃষ্টির কারণে এমনিতেই রবি শস্যের জন্য প্রয়োজনীয় জমি তৈরি করতে দেরি হওয়ায় অন্যান্য বছরে এই সময়ে আলু, সব্জি ও পেঁয়াজ মাঠ থেকে তোলা শুরু হয়ে গেলেও এ বছর সেটা এখনও হয়নি। কালনা-১ ব্লকের নান্দাই পঞ্চায়েতের ঘুঘুডাঙা, দুর্গাপুর, নাগরগাছি, নতুনগ্রাম এলাকার পেঁয়াজ চাষিদের আক্ষেপ, কয়েক দিনের মধ্যেই সুখসাগর প্রজাতির পেঁয়াজ চাষের জমি থেকে তোলা শুরু হবে। অনেকে তার প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছেন।
জল জমেছে পেঁয়াজ খেতে। কালনায় মধুমিতা মজুমদারের তোলা ছবি।
কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টি পুরো পরিস্থিতিটাই বদলে গিয়েছে। এর পরে কতটা ফসল তাঁরা জমি থেকে তুলতে পারবেন সেটা নিয়ে সংশয় থাকছে। এলাকার পেঁয়াজ চাষি রবিন হাওলাদার, সেলিম শেখরা জানান, বৃষ্টির ফলে চাষের জমিতে নামলেই গোড়ালি কাদায় ডুবে যাচ্ছে। কালনার চাষি মোজাঙ্কর শেখ জানান, পেঁয়াজ চাষের নীচু জমিগুলিতে কোথাও কোথাও হাঁটু সমান উচ্চতায় জল জমে গিয়েছে। তাঁর আশঙ্কা, “এর ফলে পেঁয়াজ পচে যাওয়ার আশঙ্কা থাকছে।”
শুধু পেঁয়াজ নয়, এই বৃষ্টিতে ক্ষতি হতে পারে আলু ও সব্জি চাষের ক্ষেত্রেও। কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মরসুমে কালনা-১, কালনা-১ ব্লক-সহ মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকায় জ্যোতি আলুর চাষ হয়েছে। কিছু দিন আগে টানা মেঘলা আবহাওয়া থাকার কারণে আলু চাষের বেশির ভাগ জমিতেই নাবি ধসা রোগ দেখা গেলেও সম্প্রতি আকাশ পরিষ্কার থাকায় সেই সংক্রমণ ছড়াতে পারেনি। কিন্তু পুনরায় মেঘলা আবহাওয়া তৈরি হওয়ায় আলুর খেতে ফের নাবি ধসা রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা দেখা গিয়েছে। ফুলকপি, বাঁধাকপি, বিম, মটরশুঁটি, বীট, গাজর বেগুন-সহ নানা সব্জির খেতেও জল জমে রয়েছে।
জেলা কৃষি দফতর থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, দু’দিনের টানা বৃষ্টিতে জেলার সব মহকুমাতেই আলু চাষে ক্ষতি হয়েছে। বর্ধমান জেলায় এ বছর আলু চাষ হয়েছে মোট ৭৩,৩৮৬ হেক্টর জমিতে। বিভিন্ন মহকুমা থেকে আসা তথ্য অনুযায়ী এ পর্যন্ত ২৭,৩০০ হেক্টর আলু চাষের জমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এই মরসুমে ৩৮,৯৫৫ হেক্টর জমিতে সর্ষে চাষ হয়েছিল। এর মধ্যে ক্ষতি হয়েছে ১৩,০০০ হেক্টর জমিতে। মুসুরি ডালের চাষ হয়েছিল ৭,৬৪০ হেক্টর জমিতে। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ১,৪৯৩ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে কালনা মহকুমার বহু চাষের জমিই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
কালনা মহকুমার কৃষি আধিকারিক আশিস কুমার বারুই ক্ষয়ক্ষতির রির্পোট জেলা কৃষি দফতরে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন। মহকুমা কৃষি দফতরের সহ কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, “জমির জল নেমে গেলেও ক্ষতির আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। সব্জি খেতে গোড়া পচা রোগ দেখা দিতে পারে। তবে এই বৃষ্টির ভাল দিকও রয়েছে। বোরো ধান ও ফলের চাষের ক্ষেত্রে এই বৃষ্টি অনুকূল।” পার্থবাবুর পরামর্শ, “বৃষ্টি বন্ধ হওয়ার পরে চাষিদের সব্জি খেতে ছত্রাকনাশক স্প্রে করা উচিত।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.