দক্ষ সংগঠক তো নই, তাই পাশে কেউ নেই: কুণাল
ত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত, বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে ভাল সংগঠকের সার্টিফিকেট দিয়ে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেষ পর্যন্ত তাঁর পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।
আর ‘দক্ষ সংগঠক না-হওয়ার জন্যই আমার পাশে কেউ নেই’ বলে খেদ প্রকাশ করে রবিবার ফের তির্যক মন্তব্য করেছেন তৃণমূলেরই সাসপেন্ড হওয়া সাংসদ কুণাল ঘোষ।
সারদা গোষ্ঠীর বিপুল আর্থিক কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত কুণালবাবু গ্রেফতার হওয়ার আগে-পরে নাম না-করে বিভিন্ন নেতার বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন, এখনও দেগে চলেছেন। এ দিনও বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। রবিবার তাঁকে আদালতে তোলার কথা ছিল। তার আগেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে ফের হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে নেওয়া হয়। এ দিন ওই সাংসদকে আদালতে হাজির করানো যায়নি।
বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে কুণাল ঘোষ। রবিবার। —নিজস্ব চিত্র।
অসুস্থতার মধ্যেও শাসক দলকে তোপ দাগার সুযোগ নষ্ট করেননি কুণালবাবু। শনিবারেই বর্ধমানের এক সভায় পাড়ুই হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত, তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগের দিন পাড়ুইয়ের বিক্ষুব্ধ তৃণমূল প্রার্থী হৃদয় ঘোষের বাবা সাগর ঘোষ খুন হন। সেই হত্যাকাণ্ডে অন্যতম মূল অভিযুক্ত অনুব্রতকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না, তা নিয়ে শুধু সাধারণ মানুষ বা বিরোধী দলগুলো নয়, প্রশ্ন তুলেছে কলকাতা হাইকোর্টও। এর মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী শনিবারের সভায় জানান, অনুব্রত দক্ষ সংগঠক। তাই তিনি শেষ পর্যন্ত তাঁর পাশে থাকবেন।
প্রকাশ্য জনসভায় অনুব্রতকে দলনেত্রীর সেই বরাভয়ের সূত্রেই নিজেকে টেনে তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তির্যক মন্তব্য করেন ওই দল থেকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত হওয়া সাংসদ কুণালবাবু। তাঁর কটাক্ষ, তিনি সংগঠক হিসেবে দক্ষতা দেখাতে পারেননি বলেই দলীয় নেতৃত্বকে পাশে পাচ্ছেন না, যেমন পাচ্ছেন অনুব্রত। কুণালবাবুর অভিযোগ, তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। সারদা অর্থ লগ্নি সংস্থার সঙ্গে তিনি কোনও দিনই জড়িত ছিলেন না বলে এ দিন ফের দাবি করেন ওই সাংসদ। মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে ফের অনশনও শুরু করেছেন কুণালবাবু। গত শুক্রবার বারুইপুর থানার পুলিশি হাজতে থাকার সময়েই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। সে-দিনও তাঁকে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হওয়ার পরে পুলিশ তাঁকে ফের নিজেদের হেফাজতে নেয়।
পুলিশি সূত্রের খবর, হাজতে থাকাকালীন কুণালবাবু মাঝেমধ্যে গ্লুকোজের জল আর চা খেলেও কোনও খাবার মুখে তোলেননি। এ দিন আদালতে হাজিরা দেওয়ার আগে নিয়মমাফিক ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরীক্ষায় ধরা পড়ে, তাঁর রক্তচাপ কমে গিয়েছে। চিকিৎসকেরা সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে ভর্তি করিয়ে নেন।
হাসপাতালে শুয়েই কুণালবাবু সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “চার দিকে প্রতিহিংসার আগুন। তদন্তকারী অফিসারদের দেখে মায়া হয়। তাঁদের জোর করে মিথ্যা মামলা সাজাতে হচ্ছে।” কুণালবাবু জানান, তাঁর বিরুদ্ধে মোট ১২টি মামলা ছিল। তার মধ্যে ছ’টিতে জামিন পেয়েছেন তিনি। দলীয় নেতৃত্বকে কটাক্ষ করার সঙ্গে সঙ্গে ওই সাংসদ আশঙ্কা প্রকাশ করেন, বেশি কথা বললে তাঁকে আরও মামলায় জড়িয়ে দেওয়া হতে পারে। তাই প্রতিবাদ জানাতে তিনি অনশনের পথ বেছে নিয়েছেন।
অসুস্থ হয়ে পড়ায় কুণালবাবুকে এ দিন আদালতে তোলা না-গেলেও তাঁর মামলার কাগজপত্র এজলাসে পেশ করে পুলিশ। কুণালবাবুর আইনজীবী সৌমিত্র অধিকারী জানান, আজ, সোমবার ওই সাংসদকে আদালতে তোলা হবে। পুলিশের কাছে কেস ডায়েরিও চেয়েছে আদালত।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.