দুই চ্যানেলকে তলব, অনশনে অসুস্থ কুণাল
তারা চ্যানেলের তলব পড়েছিল আগেই। সারদা কমিশন এ বার ‘চ্যানেল-১০’ এবং ‘এখন সময়’ চ্যানেল কর্তৃপক্ষকে হাজির হওয়ার নোটিস পাঠাচ্ছে। কমিশনের চেয়ারম্যান শ্যামলকুমার সেন শুক্রবার জানান, সারদা সংস্থার কর্ণধার সুদীপ্ত সেনের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেই ১৯ ফেব্রুয়ারি ওই দু’টি চ্যানেলের প্রতিনিধিদের হাজির থাকতে বলা হচ্ছে।
সুদীপ্তকে এ দিন ফের কমিশনে হাজির করানো হয়। এর মধ্যেই সারদা কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত, সাংসদ কুণাল ঘোষ অনশনের জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। বৃহস্পতিবার বারুইপুর থানার লক-আপে রাখার পর থেকে তিনি জল স্পর্শ করছিলেন না। শুক্রবার সন্ধ্যার পরে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালের খবর, তাঁকে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। তাই রাতে তাঁকে ফের লক-আপে নিয়ে যাওয়া হয়।
জবানবন্দিতে কুণালবাবু যাঁদের নাম করেছেন, তাঁরা বিপদে পড়বেন জেনেই সারদা কাণ্ডে সিবিআই তদন্ত এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে এ দিন ধর্মতলায় বিরোধী দলগুলির এক অবস্থান মঞ্চে মন্তব্য করেন তৃণমূল থেকে সদ্য কংগ্রেসে ফেরা সোমেন মিত্র। লোকসভা ভোটের আগে সারদা কাণ্ডকে হাতিয়ার করে এক মঞ্চে হাজির হয়ে তৃণমূলের উপরে চাপ বাড়াতে চাইছে প্রধান বিরোধী দলগুলি। ‘চিট ফান্ড সাফারার্স ইউনিটি ফোরাম ও সারা ভারত ক্ষুদ্র আমানতকারী এবং এজেন্ট সুরক্ষা কমিটি’র উদ্যোগে ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে ২৪ ঘণ্টার অবস্থান আন্দোলনে অন্যান্য দলের নেতাদের সঙ্গেই ছিলেন সোমেনবাবু।
লোকসভা ভোটের মুখে সারদা কেলেঙ্কারি নিয়ে তৃণমূলের উপরে চাপ বাড়াতে শুক্রবার ধর্মতলায় অবস্থানে
বসে বিভিন্ন বিরোধী দল। সূর্যকান্ত মিশ্র ও সোমেন মিত্রের সঙ্গে ছিলেন শিক্ষাবিদ সুনন্দ সান্যালও। —নিজস্ব চিত্র।
এ দিনই সুদীপ্তকে জেরা করতে শ্যামলবাবু ছাড়াও হাজির ছিলেন কমিশনের অন্য দুই সদস্য অম্লান বসু ও যোগেশ চট্টোপাধ্যায়। শ্যামলবাবু বলেন, “জেরার মুখে সুদীপ্ত জানান, চ্যানেল-১০-এর পুরো মালিকানা তাঁর। দেবকৃপা ব্যাপার লিমিটেড (এখন সময়)-কে তিনি ১২ কোটি টাকা দিয়েছেন। ভিবজিওর প্রাইভেট লিমিটেডকে দিয়েছেন তিন কোটি ৫০ লক্ষ।” তাঁর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেই ওই তিন সংস্থার বর্তমান কর্তাদের হাজির থাকার নোটিস পাঠানো হচ্ছে বলে জানান শ্যামলবাবু। চ্যানেল-১০ এবং দেবকৃপা ব্যাপার লিমিটেডের যে-পরিমাণ শেয়ার তাঁর হাতে আছে বলে সুদীপ্ত দাবি করেছেন, তা সত্য কি না, তা যাচাই করতে চায় কমিশন। সেই জন্য জেরা পর্বে রেজিস্ট্রার অব কোম্পানির প্রতিনিধিদের হাজির থাকার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। এখন চ্যানেল-১০ চালায় এমপ্লয়িজ ফোরাম। তাদের প্রতিনিধিকে ১৯ ফেব্রুয়ারি ডাকা হয়েছে। তবে দেবকৃপার পক্ষে কে হাজির থাকবেন, জানা যায়নি।
কমিশনের খবর, এ দিন হাজির থাকার কথা ছিল অসমের প্রাক্তন সাংসদ মাতঙ্গ সিংহের। সুদীপ্ত কমিশনে জানিয়েছেন, তিনি মাতঙ্গকে ২৮ কোটি টাকা দিয়েছেন। তাই মাতঙ্গকে তলব করা হয়। শ্যামলবাবু জানান, অস্ত্রোপচারের কারণে মাতঙ্গ এ দিন আসতে পারেননি। ১৫ দিন পরে হাজির থাকতে পারবেন বলে বৃহস্পতিবার চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি। তাঁর আবেদনের ভিত্তিতে ৪ মার্চ তাঁকে হাজির থাকতে বলা হয়েছে।
তৃণমূলকে চাপে ফেলতে এ দিন ধর্মতলায় আয়োজিত অবস্থান মঞ্চে ছিলেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রও। তাঁর দাবি, সরকারে থাকার সময়েই তাঁর দল বেআইনি লগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল। তিনি বলেন, “আমাদের আমলে বেশ কিছু লগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। গ্রেফতারও করা হয়েছিল কয়েকটি সংস্থার মালিকদের। ওই সব সংস্থাকে নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি বিলও পাঠানো হয়েছিল রাষ্ট্রপতির কাছে।” তাঁর দাবি, শুধু সারদা নয়, সেবি-র কালো তালিকায় থাকা সব আর্থিক সংস্থার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হোক। কিন্তু বর্তমান সরকার ওই সব সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে কি না, তা নিয়ে তাঁর সংশয় আছে। ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, “লগ্নি সংস্থার তছরুপে আমাদের কেউ যুক্ত থাকলে তার বিরুদ্ধেও সরকার ব্যবস্থা নিক।” লগ্নি সংস্থা নিয়ে রাজ্য সরকার এবং নাম না-করে মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করেন কংগ্রেসের সোমেনবাবু।
মঞ্চে ছিলেন সিপিআই-এর রাজ্য সম্পাদক মঞ্জু মজুমদার, পিডিএস নেতা সমীর পূততুণ্ড, আরএসপি-র মনোজ ভট্টাচার্য-সহ বিভিন্ন দলের নেতারা। ছিলেন শিক্ষাবিদ সুনন্দ সান্যাল, ব্যঙ্গচিত্র কাণ্ডে অভিযুক্ত অম্বিকেশ মহাপাত্রও। শুধু সারদা নয়, অন্যান্য অর্থ লগ্নি সংস্থার বহু এজেন্ট, আমানতকারীও অবস্থানে যোগ দেন। সব দলকেই ডাকা হয়েছিল বলে জানান ফোরামের আহ্বায়ক, নকশাল নেতা অসীম চট্টোপাধ্যায়।

কাঁচকলা মিছিল
হাতে হাতে কাঁচকলা! কারও কাঁধে কাঁচকলার কাঁদি! কলেজ স্কোয়ার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত শুক্রবার কাঁচকলা হাতে এমনই অভিনব মিছিল করল ফরওয়ার্ড ব্লকের যুব লিগ! তাদের অভিযোগ, সারদা কেলেঙ্কারি থেকে টেট একের পর এক ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার ধোঁকা দিয়ে চলেছে সাধারণ মানুষকে। উপকৃত হয়েছে শুধু শাসক দল ও তাদের ঘনিষ্ঠেরা। যুব লিগের নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, সেই জন্যই কাঁচকলা নিয়ে প্রতীকী মিছিল। ধর্মতলায় এ দিন মিছিল শেষ হয় অর্থলগ্নি সংস্থার হাতে প্রতারিতদের নিয়ে অবস্থান-মঞ্চের কাছেই। ফ ব-র তরুণ বিধায়ক আলি ইমরান রাম্জকে (ভিক্টর) ওই মঞ্চে বক্তৃতার জন্য ডেকে নেন উদ্যোক্তারা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.