লক্ষ বার উৎসব হবে, পাল্টা জবাব মুখ্যমন্ত্রীর
ৎসব নিয়ে বিরোধী-কটাক্ষের জবাব দিতে উৎসব-মঞ্চকেই বাছলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পানাগড়ে লালবাবা ময়দানে দ্বিতীয় মাটি উৎসবের উদ্বোধনে শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “উৎসবের মধ্য দিয়ে সংস্কৃতির বিকাশ হয়। কিছু হিংসুটে লোক বলে, কেন উৎসব হবে? আমি বলি, কেন হবে না? একশো বার হবে, লক্ষ বার হবে।”
তৃণমূলের সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে সরকারি টাকায় উৎসব করা নিয়ে বামেদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর চাপান-উতোর চলছে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এক সময়ে তৃণমূলের সরকারকে ‘উৎসবের সরকার’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন। মমতা প্রত্যুত্তরে বলেছিলেন, “উৎসব করব না তো কি শ্রাদ্ধ করব!” পরে বুদ্ধবাবু বলেছিলেন, “শ্রাদ্ধ করতে বলিনি, মানুষের কাজ করতে বলেছি।”
মুখ্যমন্ত্রী ও প্রসেনজিতের সঙ্গে এক কন্যাশ্রী। পানাগড়ের বিরুডিহায়। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম।
সম্প্রতি রাজ্য সরকার যে প্রশাসনিক ক্যালেন্ডার বের করেছে, সেখানে মোট ৬০টি উৎসবের উল্লেখ রয়েছে। সেই সূত্র ধরে গত ৯ ফেব্রুয়ারি ব্রিগেডে দলীয় সমাবেশের মঞ্চ থেকে বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছিলেন, “তা হলে প্রতি সপ্তাহে একের বেশি উৎসব হবে? আমরা বলতে বাধ্য হচ্ছি, শ্রাদ্ধই তো করছেন। জনগণের দেওয়া করের টাকার শ্রাদ্ধ।” প্রশাসন সূত্রের খবর, গত বছর মাটি উৎসব করতে খরচ হয়েছিল প্রায় ১২ কোটি টাকা। এ বার বাজেট ধরা হয়েছে প্রায় ১৫ কোটির। দু’সপ্তাহ আগে দুর্গাপুরে গিয়ে রাজ্য বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসুও বলেন, “রামকৃষ্ণ দেব বলেছিলেন, ‘টাকা মাটি, মাটি টাকা’। এই সরকার মাটি উৎসব করে যেন সে কথাকেই সত্য বলে প্রমাণ করছে।”
যাবতীয় সমালোচনার প্রত্যুত্তরেই যেন এ দিন সিপিএমের নাম না করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যখন ছিলেন, আপনারা উৎসব করতে পারেননি কেন? জ্যাঠা উৎসব, কাকা উৎসব এ সব হত। উৎসব মানে বিশেষ একটি জিনিসকে মহিমান্বিত করা। মাটি উৎসবে আমি মাটিকে মহিমান্বিত করব। মাটিই তো সব। সব ভালবাসার তীর্থস্থান হল মাটি উৎসব। দরকার হলে, এক দিন সারা ভারত এমন উৎসব করবে।”
এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে উৎসবে যোগ দেন প্রসেনজিৎ ও মহাশ্বেতা দেবী। প্রদীপ জ্বেলে উৎসবের সূচনা করে মহাশ্বেতাদেবী বলেন, “বহু উৎসব-অনুষ্ঠান দেখেছি। কলকাতাতেও দেখেছি। তবে সব থেকে বড় উৎসব আজ দেখলাম। লোক-উৎসব। মমতা হাজার-হাজার শ্রমজীবী মানুষের কথা মঞ্চে তুলে দিলেন।” সারা দেশ এক দিন এই উৎসবকে অনুসরণ করবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এর পরেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ভাষণ দেওয়া, কুৎসা, গালাগালি, অপপ্রচার খুব সহজ। কাজ করে দেখানো শক্ত। এটা মাথায় রাখতে হবে।” তাঁর সংযোজন, “চলচ্চিত্র উৎসব, গান উৎসব, মাটি উৎসব, চারুকলা উৎসব, যাত্রা উৎসব, নাট্য উৎসব কত উৎসব। উৎসবের মধ্য দিয়ে শুধু গানবাজনা হয় না। উৎসবের মধ্যে সামগ্রিক বিকাশ হয়, সাংস্কৃতিক বিকাশ হয়, দিশা তৈরি হয়।”

তেলঙ্গানা প্রশ্নে মমতার আক্রমণ
পৃথক তেলঙ্গানা রাজ্য গঠন নিয়ে কংগ্রেসকে আক্রমণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার বর্ধমানের পানাগড়ে মাটি উৎসবের উদ্বোধন মঞ্চে তেলঙ্গানা প্রসঙ্গ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কটাক্ষ, “একটা তেলঙ্গানা করতে গিয়েই ল্যাজেগোবরে দশা!” ঠিক ভোটের মুখে পৃথক রাজ্য গঠন নিয়ে তাড়াহুড়ো যে তাঁর নাপসন্দ, তা বুঝিয়ে দিয়ে মমতা বলেন, “ভোটের আগে যাঁরা এগুলি করেন, তাঁদের বোঝা উচিত, গ্রহণযোগ্যতা ভোটের আগে তৈরি করা যায় না। প্রতি দিন কাজ করে তৈরি করতে হয়, প্রতি ক্ষণে করতে হয়।” পৃথক তেলঙ্গানা রাজ্য গঠনের বিরোধিতা আগেই করেছেন তৃণমূল নেত্রী। কেন্দ্র তেলঙ্গানা গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেই এ রাজ্যে গোর্খাল্যান্ডের দাবি ফের মাথাচাড়া দেয়। যা সামলাতে বিস্তর বেগ পেতে হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে। তেলঙ্গানা ঘিরে উত্তাপ পাহাড়ে প্রভাব ফেললেও ফেলতে পারে বলে প্রশাসনের একাংশের আশঙ্কা। এই পরিস্থিতিতে তেলঙ্গানা নিয়ে বৃহস্পতিবার লোকসভায় যা হয়েছে, এ দিন তারও তীব্র সমালোচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর মন্তব্য, “গুঁতোগুঁতি করতে হয় না, চোখে স্প্রে করতে হয় না, আর চেয়ারও ছুড়তে হয় না। বুদ্ধি দিয়ে কাজ করতে হয়। বুদ্ধি থাকলে কাজ হয়। বুদ্ধিই তো নেই!”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.