উৎসব ভুলে পরের নিশানা আই লিগ
নাসিমকে নামানোটা ফাটকা নয়, বলছেন মহমেডান কোচ
তেতাল্লিশ বছর পর শিল্ড চ্যাম্পিয়ন হওয়ার চব্বিশ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই মহমেডান স্পোর্টিং কিন্তু নতুন নিশানা বেছে নিল! কোচ সঞ্জয় সেন থেকে শিল্ড জয়ের মহানায়ক নাসিম আখতার, রহিম নবি থেকে লুসিয়ানো সকলেরই এখন চাঁদমারি আই লিগ।
তাই কোনও উৎসবে সায় নেই সাদা-কালো জার্সিধারীদের। মেহরাজ থেকে নির্মল সকলেই বলছেন, “উৎসব কীসের। এখনও অনেক কাজ বাকি। আই লিগে প্রথম পাঁচে শেষ করতে হবে আমাদের।” তেরো দলের আই লিগে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে এই মহমেডান আপাতত দ্বাদশ স্থানে। সোমবারই আই লিগের ম্যাচ খেলতে পুণে উড়ে যাচ্ছেন পেনরা। বুধবার বালেওয়াড়িতে প্রতিপক্ষ পুণে এফসি। বাকি এগারো ম্যাচ থেকে লিগ টেবলে প্রথম পাঁচে ঢুকে পড়াই এখন নতুন চ্যালেঞ্জ সঞ্জয়ের দলের সামনে।
সর্বভারতীয় পর্যায়ে ট্রফি শিকারে ব্যর্থ এই অদৃশ্য ট্যাগই গত কয়েক দশকে সেঁটে গিয়েছিল মহমেডানের গায়ে। এ বার একই মরসুমে ডুরান্ড কাপ এবং আইএফএ শিল্ড জিতে শতাব্দীপ্রাচীন ক্লাবের থেকে সেই ট্যাগ উপড়ে ফেলেছেন লুসিয়ানোরা।
সর্বভারতীয় ট্রফির জন্য কলকাতার অন্য দুই প্রধানে যখন হাহাকার, তখন মহমেডানের ব্রাজিলীয় ডিফেন্ডার লুসিয়ানো জোর গলায় বলছেন, “মহমেডানের ট্রফিহীন যুগ অতীত। আরও ট্রফি আসবে আমাদের তাঁবুতে। উই আর ব্ল্যাক-উই আর হোয়াইট, উই আর ইন্ডিয়ান ডিনামাইট।”
খুশির বিরিয়ানি

শিল্ড জয়ের আনন্দে এক টেবলে মেহরাজউদ্দিন, দীপেন্দু ও নাসিম।
রবিবার দক্ষিণ কলকাতায় এক বন্ধুর বাড়িতে। ছবি: উৎপল সরকার।
বছরের শুরুতে হাজার সমস্যায় জর্জরিত সাদা-কালো শিবিরের এই ‘ফিল গুড’ পরিবেশের কারণ জানতে চাইতেই সঞ্জয় বললেন, “কিছুই না। ছেলেদের আত্মবিশ্বাসটা ফেরাতে পেরেছি।” রবিবার ছেলের সায়েন্স অলিম্পিয়াড নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন মহমেডান কোচ। তার মধ্যেই বললেন, “নাসিম কিন্তু প্র্যাকটিসে পেনাল্টি ভাল বাঁচায়। সেটা মাথায় ছিল। তাই ওকে সেমিফাইনাল থেকেই বেঞ্চে রেখেছিলাম। ম্যাচ টাইব্রেকারে গড়ালেই নামানোর প্ল্যান ছিল। এটা কোনও ফাটকা নয়। প্ল্যানমাফিক স্ট্র্যাটেজি।” এ-ও বললেন, “আগেই কিন্তু বলেছিলাম, বাংলাদেশের দলটা ভাল খেলছে ঠিকই কিন্তু অপরাজেয় নয়। সেটাই ফাইনালে প্রমাণ করা গিয়েছে।” ঐতিহাসিক শিল্ড জয়ের জন্য অনেক অভিনন্দনবার্তা এসেছে মহমেডান কোচের কাছেপ্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, নইমুদ্দিন, মৃদুল বন্দ্যোপাধ্যায়রা। দেশের সম্মান রক্ষার জন্য শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছে ইস্টবেঙ্গলও।
ফাইনালে মহমেডানকে সমতায় ফেরানো মেহরাজ বলছেন, “সঞ্জয়দা এখন দলটাকে এক সুতোয় বেঁধেছেন। আর প্রি-সিজন অনুশীলনটা ভাল হওয়ায় আমরা অন্য দলের চেয়ে অনেক ফিট।” ফাইনালে টাইব্রেকারের নায়ক নাসিমের সঙ্গে সতীর্থ দীপেন্দু বিশ্বাসকে নিয়ে এ দিন দুপুরে বিরিয়ানি খেতে যান মেহরাজ। সেখান থেকে ফেরার পথে দেড় বছর প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলের বাইরে থাকা শনিবারের মহানায়ক নাসিম বললেন, “জানতাম ম্যাচ টাইব্রেকারে গেলে কোচ নামাবেন। মাঠে নামার আগে কোচ ‘গো অ্যান্ড এনজয়’ বলতে ওঁকে বলেছিলাম, ‘এ বার আমার সময়। চিন্তা করবেন না’।”
কিন্তু দলকে শিল্ড জেতানোর পরেও আই লিগে সুযোগ পাবেন কি? নাসিমের গলায় আত্মবিশ্বাস, “নিজের দিনে আমিই সেরা। প্র্যাকটিসে ভাল খেললে কোচ নিশ্চয়ই সুযোগ দেবেন। ইস্টবেঙ্গলে খেলার সময় নইমস্যার বলতেন, সুযোগ না পেলেও নিজেকে তৈরি রাখবে। আমি সে ভাবেই নিজেকে তৈরি রাখছি।” এই জোশের মাঝেও নাসিমের গলায় হঠাৎই বিষাদের সুর। “শিল্ড পেলাম ভাল কথা। কিন্তু যাঁদের জন্য এই ট্রফি জয়, সেই সমর্থকদের দু’জন তো অকালেই চলে গেল। মনটা তাই ভাল নেই।”
হাওড়ার প্রয়াত ওই দুই মহমেডান সমর্থকের জন্যই রবিবার সকালে রেড রোডের ধারে ক্লাব তাঁবুতে পতাকা উত্তোলন করা হয়নি। কামারুদ্দিন-সহ মহমেডানের কয়েক জন কর্তা সারা দিন দৌড়ঝাঁপ করেছেন ওই দুই সমর্থকের শেষকৃত্যের ব্যবস্থাপনায়। সোমবার সকালে শিল্ড জয়ের পতাকা উত্তোলন হবে বলে খবর ক্লাব সূত্রে।

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.