রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মোটরবাইক চুরির ঘটনা বিধাননগর কমিশনারেট এলাকায় ঘটেছে বেশ কয়েক বার। ধরাও পড়েছে দুষ্কৃতীরা। কিন্তু রাতে আবাসনে হানা দিয়ে রক্ষীকে বেঁধে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে মোটরবাইক চুরি সাম্প্রতিক কালে ঘটেনি। তাই রবিবার ভোর রাতে তেঘরিয়ার কলুপুকুরে ওই ঘটনা নতুন কোনও দুষ্কৃতী-দলের কাজ বলেই মনে করছেন তদন্তকারী অফিসারেরা।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, গত তিন মাসে বিধাননগর কমিশনারেটের এয়ারপোর্ট ডিভিশন থেকে আটটির মতো চোরাই মোটরবাইক উদ্ধার হয়েছে। ওই এলাকায় মোটরবাইক চুরির ঘটনায় দুষ্কৃতীদের তিনটি দলকে পুলিশ চিহ্নিতও করেছে। এক অফিসার জানিয়েছেন, ওই দলগুলি ‘আটঘরা গ্যাং’, ‘হাতিয়াড়া গ্যাং’ ও ‘অর্জুনপুর গ্যাং’ নামে পরিচিত। পুলিশের দাবি, এলাকার কয়েকটি গ্যারাজ থেকেই ওই সব চোরাই মোটরবাইক কাজীপাড়া, আমডাঙা হয়ে বনগাঁ পেরিয়ে বাংলাদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, যে দুষ্কৃতীরা ধরা পড়েছে তারা সাধারণত রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মোটরবাইক চুরিতেই সিদ্ধহস্ত। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, কেউ হয়তো মোটরবাইক রেখে কোনও শপিং মলে ঢুকলেন। কিছু পরে বেরিয়ে দেখলেন, বাইক নেই। অথবা মোটরবাইক আবাসনের বাইরে রেখে ভিতরে ঢুকলেন। বাইরে এসে দেখলেন, মোটরবাইক নেই। চালকের অসাবধানতায় চুরি যাওয়ার প্রবণতা বেশি ছিল। তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছে, অধিকাংশ মোটরবাইক চুরি হয়েছিল দুপুরে। যখন রাস্তা থাকে অপেক্ষাকৃত নির্জন।
তাই রাতে রক্ষীকে বেঁধে চুরির ঘটনায় নতুন দলের হাত আছে বলেই মনে করছে পুলিশ। রবিবার রাতেই তেঘরিয়ার ওই আবাসনের বাসিন্দাদের সঙ্গে পুলিশের বৈঠক হয়। সেখানে নিজেদের ক্ষোভ উগরে দেন আবাসিকেরা। এক আবাসিক বলেন, “এর পরে বুঝতেই তো পারছি না মোটরবাইক রাখব কোথায়? আবাসনের গ্যারাজ থেকেই যদি বাইক চুরি যায়, তা হলে নিরাপত্তা বলে তো কিছুই নেই।” অভিযোগ, এলাকায় রাতে পুলিশি টহলদারি কার্যত চোখে পড়ে না। রবিবার ভোরে রক্ষীকে বেঁধে প্রায় মিনিট কুড়ি ধরে কার্যসিদ্ধি করে দুষ্কৃতীরা। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশি টহলদারি থাকলে দুষ্কৃতীরা এতক্ষণ ধরে চুরি করার সাহস পেত না।
পুলিশ অবশ্য দাবি করেছে, টহলদারি আগের থেকে অনেকটাই বেড়েছে। গত কয়েক মাসে বেশ কয়েক জন মোটরবাইক-চোর ধরা পড়েছে। বিধাননগর কমিশনারেটের এডিসিপি সন্তোষ নিম্বলকর বললেন, “টহলদারি তো রয়েছেই। তার সঙ্গে সঙ্গে আবাসনগুলিতে নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য ক্লোজ্ড সার্কিট টিভি বসাতে বলা হয়েছে। যে আবাসনে মোটরবাইক চুরির ঘটনা ঘটেছে, সেখানে ক্লোজ্ড সার্কিট টিভি থাকলে আমাদের তদন্ত করতে অনেক সুবিধা হত।” |