শুধু ঘোষণাই সার নয়। উত্তরবঙ্গের জন্য আলাদা হেলথ ডিরেক্টরেট আগামী এক থেক দেড় মাসের মধ্যেই পুরদস্তুর কাজ শুরু করবে। বুধবার শিলিগুড়িতে এ কথা জানিয়ে দিলেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন সৎপতী। এমনকী জয়েন্ট ডিরেক্টর পদমর্যাদার এক জন আধিকারিক ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গ হেলথ ডিরেক্টরেটে যোগ দিয়েছেন। তাঁর নাম বিধান মিশ্র। নতুন চালু এই হেলথ ডিরেক্টরেটে তিনি যুগ্ম সচিব হিসাবেও কাজ করবেন। তাতে শুধু এখানকার হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করাই নয় তা কার্যকরি করতে নির্দিষ্ট সীমানর মধ্যে অর্থ মঞ্জুরও করতে পারবেন। উত্তরকন্যাতেই তাঁর দফতর। ইতিমধ্যেই তিনি সেখানে বসছেন।
রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন সৎপতি এ দিন বলেন, “আগামী এক দেড় মাসের মধ্যেই উত্তরবঙ্গের এই ডিরেক্টরেট কাজ শুরু করবে। কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গের স্বাস্থ্য পরিষেবার কাজ নজরদারি করার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছিল। পাশাপাশি কোনও কাজের জন্য এখান থেকে স্বাস্থ্য আধিকারিকদের কলকাতায় গিয়ে কাজ করিয়ে আনতেও সমস্যা ছিল। কাজেরও ক্ষতি হচ্ছিল। এই সমস্যা মেটাতেই মুখ্যমন্ত্রী আলাদা ডিরেক্টরেট করার সিদ্ধান্ত নেন।”
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গের স্বাস্থ্য পরিষেবার কাজ এখন থেকে এই ডিরেক্টরেটের মাধ্যমে দেখভাল হওয়ায় স্বাস্থ্য দফতরের কাজ কিছুটা কমবে। সে কারণে আধিকারিকদের একাংশকে উত্তরবঙ্গে পাঠানো হবে। তা ছাড়া তৃতীয় এবং চতুর্থ শ্রেণির কিছু কর্মী নিয়োগ করা হবে এই ব্যবস্থা কার্যকর করতে। উত্তরবঙ্গের ৭টি জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, ব্লক হাসপাতাল, প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলির সমস্যা, পরিকাঠামো, ওষুধ, সরঞ্জাম কোনও কিছুর প্রয়োজন হলে এই হেলথ ডিরেক্টরেট থেকেই সেগুলি নিয়ন্ত্রিত হবে। তবে স্বাস্থ্য নীতি সম্পর্কে কোনও ব্যাপার বা যুগ্ম সচিবের নির্দিষ্ট সীমার বাইরে কোনও প্রকল্পে অর্থ মঞ্জুরের বিষয়টি স্বাস্থ্য ভবন থেকেই অনুমোদন হবে।
স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, বিভিন্ন স্বাস্থ্য কর্মসূচিগুলি ঠিক মতো নজরদারি করতে এই হেলথ ডিরেক্টরেট বিশেষ উপযোগী হবে। জেলা হাসপাতাল, ব্লক হাসপাতাল-সহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির কাজ নজরদারি করতে সুবিধা হবে। দীর্ঘদিন ধরেই শিলিগুড়ি হাসপাতালে স্থায়ী সুপার নেই। তাতে সমস্যা হচ্ছে। বিভিন্ন সংগঠন, রাজনৈতিক দলগুলির তরফেও এ ব্যাপারে আন্দোলন হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিকর্তা এ দিন জানান, ইতিমধ্যেই শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের জন্য স্থায়ী সুপার নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁর নাম অমিতাভ মণ্ডল। দুই সপ্তাহের মধ্যেই তিনি এই হাসপাতালে স্থায়ী সুপার হিসাবে কাজে যোগ দেবেন।
এ দিন শিলিগুড়ি দার্জিলিং জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকদের, শিলিগুড়ি এবং দার্জিলিং জেলা হাসপাতাল, কার্শিয়াং, কালিম্পং-সহ সমস্ত ব্লক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নিয়ে বৈঠক করেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা। তিনি জানান, রাজ্যের ৪০ টি হাসপাতালে চিকিৎসক-কর্মী-আধিকারিক মিলিয়ে ৮৫টি পদে লোক নিয়োগ করা হয়েছে। রাজ্যের তরফে ‘ফ্রি ড্রাগ পলিসি’ নেওয়া হয়েছে। তাতে জরুরি পরিষেবা জন্য সমস্ত ওষুধ সরকারি হাসপাতালগুলিতে নিখরচায় মিলবে। অত্যাবশ্যকীয় ওষুধ নিখরায় দেওয়া হবে বহির্বিভাগে এবং হাসপাতালগুলির অন্তর্বিভাগে ভর্তি রোগীদের। পেয়িং ওয়ার্ডগুলিতে কিছু ওষুধ কিনতে হতে পারে। |