গোটা বিরোধী পক্ষের অভিযোগ, প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যাওয়ার জন্যই মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় গরহাজির থাকেন। কিন্তু পাশাপাশি সব পক্ষেরই বিধায়কদের হাজিরার করুণ চিত্র ধরা পড়ল বুধবার বিধানসভায়! মুখ্যমন্ত্রী-সহ এক ঝাঁক মন্ত্রী উত্তরবঙ্গে। পাশাপাশি এ দিন বিধানসভায় অনুপস্থিত ছিলেন শাসক দলের বহু বিধায়ক। বিরোধী শিবিরের অবস্থাও আশাপ্রদ নয়! বিধায়কদের গরহাজিরায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনে বিধায়কদের অধিকাংশ আসন যে ফাঁকা, তা নজরে পড়েছে স্পিকারেরও। পরে এ ব্যাপারে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “দিনের পর দিন বিধায়কেরা গরহাজির থাকলে সভার কাজ মুশকিল হয়ে পড়বে! বিধায়কদের সচেতন হতে হবে।” এই নিয়ে আজ, বৃহস্পতিবারই পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সরকারি মুখ্য সচেতক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের সঙ্গে তিনি কথা বলবেন বলে স্পিকার জানান। বিরোধী দলনেতা সূর্যবাবু সভার বাইরে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী নিজেই বিধানসভার গুরুত্ব কমিয়ে দিয়েছেন! সেই কারণেই বিধায়কদের আগ্রহও কমে গিয়েছে।” অধিবেশন চলাকালীন শিলিগুড়িতে মন্ত্রিসভার বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প ঘোষণা করছেন, এমনটা এ রাজ্যে তো বটেই, অন্য কোনও রাজ্যেও কখনও ঘটেছে কি না সন্দেহ প্রকাশ করেন সূর্যবাবু। |
গলায় পোস্টার ঝুলিয়ে বাম বিধায়ক। বুধবার বিধানসভায়। ছবি: রাজীব বসু। |
রাজ্যপালের ভাষণ দিয়ে বাজেট অধিবেশন শুরুর পরে এ দিন ছিল ওই তার উপরে আলোচনার প্রথম দিন। প্রথমার্ধে প্রশ্নোত্তর পর্বে বিধায়কের সংখ্যা কম ছিল। দ্বিতীয়ার্ধে আলোচনার সময় ছিল ৪ ঘন্টা। বক্তা ১৪ জন। ওই পর্বে হাজিরার হাল ছিল আরও খারাপ! তৃণমূল বিধায়ক ধীমান রায়ের বক্তব্যের মাধ্যমে দিনের কাজ শেষ হওয়ার সময় শাসক দলের ২৬ এবং কংগ্রেস ও বাম মিলে বিরোধী পক্ষের ২৫ জন বিধায়ক ছিলেন। তার আগে প্রথমার্ধে জনজীবনে বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা বৃদ্ধি নিয়ে ফ্রন্ট মুলতবি প্রস্তাব আনে। প্রস্তাবে ওই বিষয়ের সঙ্গেই ছিল বাম বিধায়কদের হুমকি, ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ। এবং এ নিয়ে অভিযোগ জানানোর পরেও বিধায়কদের নিরাপত্তা দিতে সরকার ব্যর্থ বলে অভিযোগ করেন বামেরা। বিরোধী দলনেতা প্রস্তাবটি পড়ার সময়ে সরকার পক্ষের কিছু বিধায়ক কিছু মন্তব্য করেন। বাম শিবির থেকে বেশ কিছু পোস্টার তুলে ধরা হয়। যে অল্পসংখ্যক বাম বিধায়ক ছিলেন, তাঁরা ওয়েলে নেমে ‘ঘোড়া কেনাবেচা বন্ধ করো’ স্লোগান দিতে থাকেন। সঙ্গে ছিল কিছু কার্টুনের ছবি। মুলতবি প্রস্তাব গৃহীত না হওয়ায় কিছু সময়ের জন্য তাঁরা ওয়াক আউট করেন। |