বাংলায় নতুন ১১ ট্রেন, তৃণমূল বলছে ধোঁকা

১২ ফেব্রুয়ারি
পূর্ণাঙ্গ বাজেটও নয়, মন্ত্রকের পূর্ণাঙ্গ দায়িত্বেও ছিলেন না বঙ্গসন্তান। দু’দিক থেকেই সীমিত ক্ষমতা নিয়েই ১১টি নতুন ট্রেন ও দু’টি নতুন লাইন সমীক্ষার প্রতিশ্রুতি পেল রাজ্য। পশ্চিমবঙ্গকে রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীর উপহার।
সদ্য প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হয়েছেন অধীরবাবু। সামনেই লোকসভা নির্বাচন। স্বাভাবিক ভাবেই রাজ্যের জন্য নতুন ট্রেন ও প্রকল্প আদায় করে নেওয়ার তৎপরতা ছিল তাঁর। চলতি অন্তর্বর্তী বাজেটে নতুন বড় মাপের কোনও রেল প্রকল্প ঘোষণার পথে হাঁটতে চায়নি কেন্দ্র। ফলে ভরসা ছিল নতুন ট্রেনই। আর তাতেই বাজিমাত করেছেন অধীর। আজ রেলমন্ত্রী মল্লিকার্জুন খার্গে যে ৩৮টি নতুন ট্রেন ঘোষণা করেছেন, তার মধ্যে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ট্রেন ছুঁয়ে গিয়েছে রাজ্যকে। যার মধ্যে প্রিমিয়াম ট্রেন ছ’টি। এক্সপ্রেস ট্রেন ৪টি। একটি মেমু। এ ছাড়াও বহরমপুর থেকে করিমপুর ও বহরমপুর থেকে সাঁইথিয়া পর্যন্ত নতুন লাইনের সমীক্ষা বাজেট নথিতে ঢুকিয়ে দিতে পেরেছেন অধীর।
বাজেট পেশ করতে সংসদ পৌঁছলেন রেলমন্ত্রী মল্লিকার্জ্জুন খার্গে ও রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী। ছবি: এ পি।
রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল অবশ্য একে বিপর্যয়ের রেলবাজেট বলেই আখ্যা দিচ্ছেন। তাঁদের বক্তব্য, এই বাজেটের মাধ্যমে রাজ্যবাসীর চোখে ধুলো দেওয়া হয়েছে। রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে বরাদ্দ রাজ্যের জন্য আদায় করতেন, তার এক শতাংশও করতে পারেননি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।
আজ সকালে রেলমন্ত্রী বাজেট পড়ার সময়ই তৃণমূলের শুভেন্দু অধিকারী, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, রত্না দে নাগের মতো সাংসদেরা ওয়েলে নেমে বাংলাকে বঞ্চনার অভিযোগে সরব হন। পরে লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখনই রেলমন্ত্রী হিসাবে বাজেট পড়েছেন, বাংলার জন্য অজস্র প্রকল্পের ঘোষণা শুনে আমরা অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি। এই বাজেটে লোকদেখানো ভাবে পশ্চিমবঙ্গে কিছু নতুন ট্রেন দেওয়া হয়েছে বটে। কিন্তু তা আসলে মানুষকে ধোঁকা দেওয়ারই সামিল।”
কেন?
সুদীপের বক্তব্য, বেশির ভাগ ট্রেনই সাপ্তাহিক। যে প্রকল্পগুলি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, তার মধ্যে এক ডানকুনি ছাড়া আর কোনও ক্ষেত্রেই বরাদ্দ ঘোষণা না-করে সেগুলিকে কার্যত খুন করে ফেলা হয়েছে।
যদিও এই যুক্তি মানতে চাননি অধীর। তাঁর কথায়, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে বড় মাপের প্রকল্পগুলি শুধু ঘোষণা করাই হয়েছে। কিন্তু জমি অধিগ্রহণ তো দূরস্থান, আর্থিক বরাদ্দও করা হয়নি।” মমতার পর তৃণমূলের মন্ত্রীরাও একই পথে চলেছেন। এখন সরকার জমি অধিগ্রহণ করে দিলেই রেল তার কাজ শুরু করতে পারবে বলে দাবি করেন অধীর। তিনি যে রাজ্যের বিষয়ে আন্তরিক তা বোঝাতে গিয়ে বলেন, “সকালে দেখি বালুরঘাট-হাওড়া ট্রেনটি তালিকায় নেই। সঙ্গে সঙ্গে খার্গের কাছে গিয়ে বলি ওই ট্রেনটি দিতেই হবে।” অধীরের দাবি মেনে একেবারে
শেষ মুহূর্তে ওই এক্সপ্রেসটি তালিকায় ঢোকান খার্গে। দীর্ঘ দিনের দাবি মেটায় অধীরবাবুকে অভিনন্দন জানিয়েছেন স্থানীয় আরএসপি সাংসদ প্রশান্ত মজুমদার।
যদিও তৃণমূলের আর এক সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী এই বাজেটকে ব্যাখ্যা করেছেন ‘বিপর্যয়’ হিসাবে। তাঁর মতে, রেলের সংস্কারের নামে সাধারণ মানুষকে বিপদের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছে। রেলভাড়ার ক্ষেত্রে বিমানের মতো ‘ডায়নামিক ফেয়ার স্ট্রাকচার সিস্টেম’ গঠনের তীব্র নিন্দা করছে তৃণমূল। শুভেন্দুবাবুর মতে, বিমানের মতো রেলের ভাড়াও বাড়া-কমা হলে বহু মানুষ সমস্যায় পড়বেন। তাঁর কথায়, “যাঁরা রেলে যাতায়াত করেন তাঁরা অধিকাংশই সাধারণ মানুষ। নতুন ব্যবস্থায় ছুটি বা উৎসবের সময় রেলের ভাড়া কয়েক গুণ বাড়লে দারিদ্রসীমার কাছে থাকা মানুষেরা গভীর সমস্যায় পড়বেন।” যদিও পাল্টা যুক্তিতে অধীরের বক্তব্য, “প্রিমিয়াম ট্রেন তারাই চড়বেন, যাদের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়ের সামর্থ্য রয়েছে। যাদের নেই, তাদের জন্য ওই রুটে নিয়মিত ট্রেন পরিষেবা তো রইলই।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.