তৃণমূল ও তার শাখা সংগঠনের প্রচারে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া অন্য কোনও নেতা-নেত্রীর ছবি ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি হল।
বারাসতে দলের শাখা সংগঠন তৃণমূল ‘যুবা’র প্রচারে দলীয় নির্দেশ লঙ্ঘনের ঘটনার প্রেক্ষিতেই নতুন করে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করতে হয়েছে তৃণমূল নেতৃত্বকে। পার্থ চট্টোপাধ্যায় বুধবার নির্দেশ দিয়েছেন, এ বার থেকে দলনেত্রীর ছবি ছাড়া আর কারও ছবি ব্যবহার করা যাবে না। একই ভাবে এ দিনই তপসিয়ায় তৃণমূল ভবনে সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের ডেকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি শঙ্কুদেব পণ্ডাও বলেছেন, পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন বা ফ্লেক্সে দলনেত্রী এবং দলের নির্বাচনী প্রতীক জোড়া ঘাস ফুল ছাড়া ছবি লাগিয়ে প্রচার করা যাবে না।
লোকসভা ভোটের মুখে পার্থবাবুদের এমন নির্দেশের নেপথ্যে রয়েছে ২৪ ঘণ্টা আগে বারাসতে তৃণমূল যুবার সমাবেশের প্রচার নিয়ে সংগঠনের বাড়াবাড়ি। সংগঠনেরই সিদ্ধান্ত ছিল, মমতা ছাড়া দলের আর কোনও নেতা-নেত্রীর ছবি ব্যবহার করা হবে না। কিন্তু তা মানা হয়নি। যুবার সমাবেশের পোস্টার, কাট-আউট সংগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবিতেই ছয়লাপ করা হয়েছিল। অভিযোগ পেয়ে অভিষেক সমাবেশে যাননি। কিন্তু লোকসভা ভোটের আগে দলের ও শাখা সংগঠনের এই ধরনের কাজে রাশ টানতে এবং সংগঠনে শৃঙ্খলা বজায় রাখতেই তিনি নির্দেশ দিয়েছেন বলে পার্থবাবু ব্যাখ্যা দিয়েছেন। কিন্তু তার পরেও সেই নির্দেশ অমান্য করায় দলীয় নেতৃত্ব বিরক্ত ও বিব্রত। পার্থবাবু বলেন, “ভোটের সময়ে দলনেত্রী, দলীয় প্রতীক ও প্রার্থীর ছবি দিয়ে প্রচার চলতে পারে। কিন্তু দলের কোনও সভা বা সম্মেলন নিয়ে দলনেত্রী ছাড়া আর কারও ছবি থাকবে না।”
ছবি-কাণ্ডের জল এত দূর গড়িয়েছে যে, উত্তর ২৪ পরগনার যুবার সভাপতিকে পদ থেকে সরানো ছাড়াও গোটা রাজ্য সংগঠন পুনর্গঠিত করার নির্দেশও অভিষেককে দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের এক সূত্রের ইঙ্গিত, লোকসভা ভোটের আগে যুবার সর্বভারতীয় সভাপতি পদে অভিষেককে রেখে সংগঠন ভেঙে দেওয়া হয়তো হবে না। কিন্তু শীর্ষ নেতৃত্ব সংগঠনকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনতে চান। দলীয় নির্দেশ অমান্য করা এবং অতি উৎসাহী নেতা-কর্মীদের কাজে দলের ভাবমূর্তি নষ্টের ঘটনা আটকাতেই তাঁরা কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছেন। শাসক দলের ছাত্র নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, লোকসভা ভোট পর্যন্ত সংগঠনের সভাপতির অনুমোদন ব্যতীত কর্মসূচি নেওয়া যাবে না। |