তৃণমূলের এক কর্মীকে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল দলেরই এক গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী-সহ আট জনের বিরুদ্ধে। মৃতের নাম কৃষ্ণ বিশ্বাস (৩৮)। তাঁর বাড়ি শান্তিপুরের ফুলিয়া প্রফুল্লনগর এলাকায়। মঙ্গলবার রাতের ওই ঘটনায় নিহতের পরিবার শান্তিপুর থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিন জনকে আটক করা হয়েছে।
শান্তিপুর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তথা শান্তিপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তপন সরকার বলেন, “নিহত ব্যক্তি আমাদের দলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তাঁকে চক্রান্ত করে ডেকে এনে খুন করা হয়েছে।” কিন্তু অভিযোগ তো উঠছে দলেরই এক পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামীর বিরুদ্ধে। তপনবাবু বলেন, “তাঁকে যারা খুন করেছে তারা যে দলেরই হোক, আমরা তাদের কঠিন শাস্তির দাবি করছি।” জেলার পুলিশ সুপার সব্যসাচীরমণ মিশ্র বলেন, “নিহত ওই ব্যক্তি অসামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে আমরা জানতে পেরেছি এলাকার সমাজবিরোধীদের মধ্যে গন্ডগোলের জেরে এই খুন।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে উদয়পুরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে একটি ধাবার সামনে কৃষ্ণবাবু ও তাঁর সঙ্গীদের বেধড়ক মারধর করে বেশ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা ও ধাবার লোকজন। খবর পেয়ে শান্তিপুর থানার পুলিশ গিয়ে তিন জনকে উদ্ধার করে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে পুলিশ জানতে পারে যে কৃষ্ণ বিশ্বাস নামে আরও একজন জখম অবস্থায় ঘটনাস্থলে পড়ে রয়েছেন। পুলিশ ফের উদয়পুর এলাকায় গিয়ে ধাবার পিছনের সর্ষে খেত থেকে কৃষ্ণবাবুকে উদ্ধার করে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে জানিয়ে দেন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ বেশ কয়েকটি রক্তমাখা লাঠি
উদ্ধার করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুরে ওই এলাকায় একটি চায়ের দোকানে স্থানীয় কয়েক জনের সঙ্গে গণ্ডগোল হয় কৃষ্ণবাবুর। সেখানে তাঁকে মারধরও করা হয়। রাতে লোকজন নিয়ে তিনি ফের সেখানে গিয়ে গণ্ডগোল শুরু করলে ঘটনাটি ঘটে। বিশ্বজিৎবাবু বলেন, “আমি ওই খুনের ঘটনার সঙ্গে কোনওভাবেই জড়িত নই। বিজয়ার দিন ওরা আমার পরিবারের উপরে যেভাবে আক্রমণ করেছিল আমি তার প্রতিবাদ করে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলাম। তারই বদলা নিতে আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করছে।” সিপিএমের শান্তিপুর জোনাল কমিটির সম্পাদক শান্তনু চক্রবর্তী বলেন, “তৃণমূলের সমাজবিরোধীরা মানুষকে হত্যা করেছে এতদিন। এবার ওরা নিজেদের লোককেই খুন করতে শুরু করেছে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত বলেন, “এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। এটা দুই এলাকার মানুষের মধ্যে পুরনো গণ্ডগোলের জের।” |