বাজির শব্দ না গুলির,
সংশয়ে খোদ সাক্ষীও
য়েক সপ্তাহ স্থগিত থাকার পরে বুধবার থেকে ফের শুরু হল সজল ঘোষ হত্যা মামলা। এ দিন নবদ্বীপের অতিরিক্ত জেলা ও সেশন জজ সুধীর কুমারের আদালতে দুপুর দু’টোয় স্বাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
প্রথম সাক্ষ্য দেন কাজল শেখ। কালো প্যান্ট ও সাদা ফুল শার্টে আদালতে হাজির ছিলেন মামলার অন্যতম অভিযুক্ত পাড়ুলিয়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রদীপ সাহাও। শুরুতেই প্রদীপবাবুর আইনজীবী প্রতিমসিংহ রায় কাজল শেখকে মামলার তদন্তকারী অফিসার এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে দেওয়া জবানবন্দির নানা অসঙ্গতি নিয়ে প্রশ্ন শুরু করেন। জানতে চাওয়া হয়, ঘটনার দিনে পূর্বস্থলী কলেজের ছাত্র সংসদের নির্বাচন ঘিরে গোলমালে কতজন আহত হয়েছিলেন, তাঁদের আঘাত কীরকম ছিল। কাজল শেখ জানান, তিন জন। তাঁদের মধ্যে হালিম শেখের কপালের পাশে কেটে গিয়েছেল ও কয়েকটি সেলাইও করতে হয়। পরে প্রতিমবাবু জানতে চান, ওই রাতে নবদ্বীপ হাসপাতালে পূর্বস্থলীর বিধায়ক যখন আহত শৌভিক আইচ ও হালিম শেখের সঙ্গে কথা বলছিলেন তখন এসএফআইয়ের সন্তু ভৌমিকের কাছে এক জন অপরিচিত এসে কথা বলেন। তার চেহারা কেমন ছিল? সাক্ষী বলেন, জানি না। কাজল শেখকে প্রশ্ন করা হয়, এত রাতে হাসপাতালে ওই ব্যক্তি কোথা থেকে এল তা নিয়ে তিনি কোনও প্রশ্ন করেছিলেন কি। সাক্ষী বলেন, না। আইনজীবী জানতে চান, কাজল শেখ ও তাঁর অন্যান্য সঙ্গীরা ওই রাতে হাসপাতালে ঢোকার জন্য কার অনুমতি নিয়েছিলেন। সাক্ষী বলেন, গেট কিপার।
ঘটনার রাতে তাঁরা কোথা থেকে, কত জন, কী ভাবে নবদ্বীপ হাসপাতালে আসেন তা জানতে চান আইনজীবী। কাজল শেখ বলেন, পূর্বস্থলীর তৃণমূল পার্টি অফিস থেকে বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়ের গাড়িতে সজল ঘোষ, পঙ্কজ গঙ্গোপাধ্যায়, ফজলুল হক মণ্ডল-সহ মোট সাত জন হাসপাতালে এসেছিলেন। প্রতিমবাবু জানতে চান, কী গাড়ি? সাক্ষী বলেন, চার চাকা গাড়ি। প্রতিমবাবু জানতে চান, তিনি কানে শুনে গুলির আওয়াজ ও বাজির আওয়াজ আলাদা করে চিনতে পারেন কি না। সাক্ষী বলেন, না। তাহলে সাক্ষী কী করে জবানবন্দিতে বললেন, তিনি গেটের দিক থেকে গুলির আওয়াজ শুনেছেন। তিনি গুলি করতে দেখেছিলেন? কাজল শেখ উত্তর দেন, না। প্রতিমবাবু জানতে চান, সজল ঘোষ গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরে সাক্ষী তাঁকে কোথায় পড়ে থাকতে দেখেন। সাক্ষী বলেন, সজল ঘোষ যখন গুলি খেয়ে পড়ে যাচ্ছিলেন তখনই তাঁকে ধরে ফেলা হয়। কে কে ধরেছিলেন? সাক্ষী উত্তর দেন, তিনি নিজে, পঙ্কজ গঙ্গোপাধ্যায়, গৌতম নাথ, ফজলুন হক মণ্ডল অনেকেই তখন ছিলেন। প্রতিমবাবু জানতে চান, সজল ঘোষ গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরে তাঁদের কেউ গিয়ে হাসপাতালের গেট বন্ধ করার চেষ্টা করেন কি না। সাক্ষী বলেন, না। এরপরে জানতে চাওয়া হয়, সেই রাতে ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে প্রদীপ সাহা বলেছিলেন ‘সজল ঘোষকে প্রাণে মেরে দিতে না পারলে পূর্বস্থলী কলেজের ভোট করা যাবে না’-এ কথা সাক্ষী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জানিয়েছিলেন কি না। সাক্ষী বলেন না।
এরপরে কাজল শেখকে জেরা করেন, অভিযুক্তের পক্ষের আরেক আইনজীবী সামসুল ইসলাম মোল্লা। জানতে চান সাক্ষীর আগে পঙ্কজ গঙ্গোপাধ্যায় পূর্বস্থলীর প্রধান ছিলেন কি না। সাক্ষী বলেন, হ্যা।ঁ জানতে চাওয়া হয় সাক্ষীকে প্রধান করার জন্য সজল ঘোষ সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন কি না। উত্তরে সাক্ষী জানান, আমাকে পার্টি প্রধান করে। প্রশ্ন করা হয়, সাক্ষী প্রধান হওয়ার পরে পার্টি দু’টি ভাগে ভাগ হয়ে যায়। সাক্ষী বলেন, ঠিক নয়। সেই রাতে তিনি কোথা থেকে নবদ্বীপ হাসপাতালে এসেছিলেন জানতে চাওয়া হলে সাক্ষী বলেন, তৃণমূল পার্টি অফিস থেকে। এরপরে আইনজীবী জানতে চান, সাক্ষী কবে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দী দিয়েছিলেন। সাক্ষী বলেন, ২০১২ সালের ২১ জানুয়ারি। আপনি ঈদের নামাজ পড়েন? হ্যাঁ। ২০১২ সালের ঈদ কোন তারিখে পড়েছিল? সাক্ষী বলেন, মনে নেই। সাক্ষীর বড় ছেলের জন্ম তারিখ জানতে চাওয়া হলেও বলতে পারেননি তিনি।
এরপর জেরা শুরু করেন অভিযুক্ত পক্ষের অপর আইনজীবী বিষ্ণু শীল। বিষ্ণুবাবু জানতে চান, তদন্তকারী অফিসার এবং জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দিতে তিনি কি বলেছেন, যে গুলির শব্দ শুনে পিছন ফিরে দেখি যে প্রদীপ সাহা সজল ঘোষকে জড়িয়ে ধরে রেখেছে। সাক্ষী বলেন, হ্যাঁ বলেছি।
এ দিনের সাক্ষ্য শেষ হয়, সজল ঘোষ হত্যা মামলার এফআইআর লেখক জীবেশ চক্রবর্তীর জেরা দিয়ে। আজ, বৃহস্পতিবার মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.