|
|
|
|
সরকারি তালিকায় মৃত, বন্ধ বার্ধক্য ভাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঘাটাল |
থেকেও নেই বার্ধক্য ভাতার তালিকায়!
দাসপুর-১ ব্লকের রাজনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের সুরা নারায়ণপুর গ্রামের বছর চুরাশির গৌরীবালা চক্রবর্তী এখনও নিয়মিত ঘরে-বাইরে লাঠি হাতে উঠানে বসে পড়শিদের সঙ্গে গল্প করে, নাতিকে কোলে নিয়ে নানা গল্প শুনিয়ে দিন কাটান। প্রতিবন্ধকতা বলতে এখন দু’টি চোখে আর দেখতে পান না। ছেলে নেই, দিনমজুর মেয়ে-জামাইয়ের কাছেই কোনও রকমে দিন কাটে তাঁর। সম্বল বলতে বিস্তর ঘোরাঘুরির পর বছর ছ’য়েক আগে চালু হওয়া হাজার টাকার বার্ধক্য ভাতা। তা-ও মেলে তিন-চার মাস অন্তর! টাকা এসেছে, এই খবর পেয়ে দু’মাসের টাকা তুলতে গত সোমবার নাতিকে নিয়ে ছুটেছিলেন ব্যাঙ্কে। লাভ হয়নি। পরে ব্লক অফিস থেকে তিনি জানতে পারেন বার্ধক্য ভাতার তালিকায় আর তাঁর নাম নেই। কেননা, তিনি যে মৃত! |
|
দাওয়ায় বসে গৌরীবালাদেবী।—নিজস্ব চিত্র। |
গৌরীবালাদেবীর অবস্থা দেখে পরিজনরা গোটা বিষয়টি লিখিত ভাবে জানান স্থানীয় বিডিও, মহকুমাশাসক-সহ সংশ্লিষ্ট মহলকে। সাধারণত নিয়ম হল, মারা গেলে কিংবা অন্য কোনও ভাতা চালু হলে তালিকা থেকে নাম বাদ পড়ে। কেননা, একই সঙ্গে একাধিক সরকারি ভাতার সুবিধা নেওয়া যায় না। তা হলে দিব্যি বেঁচে থাকা সত্বেও কী করে তালিকা থেকে নাম বাদ গেল! নাতি সত্যম্বর চক্রবর্তীর অভিযোগ, “আমি সিপিএম করি। তাই তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত ইচ্ছাকৃত ভাবে ওই কাজ করেছে।” ওই অভিযোগ পুরোপুরি উড়িয়ে দিয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান সুমিতা আলু। তিনি বলেন, “একটা ভুল হয়ে গিয়েছে। উঁনি যাতে দ্রুত টাকা পান তার ব্যবস্থা করছি।” গৌরীবালাদেবী বলেন, “ওই টাকাটাই আমার একমাত্র সম্বল। কী থেকে যে কী হয়ে গেল জানি না! ওই টাকাটা মনের জোর অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছিল।”
বিডিও ছুটিতে থাকায় ওই ব্লকের দায়িত্বে রয়েছেন যুগ্ম বিডিও উপল পারশা। তিনি বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। কেন মৃত তালিকায় নাম উঠল তার তদন্ত শুরু হয়েছে।” সমস্যার দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন ঘাটালের মহকুমাশাসক অদীপ রায়। |
|
|
|
|
|