‘সারাক্ষণ লোকাল সেন্টিমেন্ট নিয়ে ভাবলে টিম তৈরি করা যায় না’
১২ ফেব্রুয়ারি
ক্তার নাম বেঙ্কি মাইসোর। নাইট রাইডার্সের দল গড়ার পিছনে প্রধান মাথা। গোটা ভারত এবং বিশেষ করে বাংলা যে এই টিম নিয়ে ছ্যা ছ্যা করছে, তাতে প্রভাবিত নন নাইট মহাকর্তা। বরঞ্চ নিলাম টেবলে যা ঘটল, তাতে যথেষ্ট তৃপ্ত।

প্রশ্ন: শাহরুখ নাকি সহবাগকে চেয়েছিলেন। আর আপনারা বিড না করায় খুব আশ্চর্য।
বেঙ্কি: না, না, তেমন কিছু নয়।

প্র: এই টিম দেখে এসআরকে সন্তুষ্ট?
বেঙ্কি: টিম গড়াটড়ার এ সব ব্যাপারে এসআরকে থাকেন না। হয়তো হালকা জিজ্ঞেস-টিজ্ঞেস করলেন এই পর্যন্ত। বরঞ্চ উনি প্রেফার করেন, আমরা যারা এর পিছনে সময়-টময় দিই, তাদের ওপর ছেড়ে দিতে।

প্র: আজ নিলামের মধ্যে এসএমএস করেননি?
বেঙ্কি: নাহ।

প্র: টিমটা যা দাঁড়িয়েছে, আপনি নিজে খুশি?
বেঙ্কি: আই অ্যাম ভেরি হ্যাপি। গত তিন বছরের অভিজ্ঞতা আমাদের শিখিয়েছে, আমরা বাইরে যত না খারাপ খেলি, তার চেয়ে বেশি হারি ইডেনে। অথচ ইডেনে উইনিং টোটাল সাধারণত থাকে ১৫০-১৬০-র মধ্যে। আপনার টিমের যদি বোলিং অ্যাটাক ভাল থাকে, তা হলে এই রানটা তুলে ফেললেই ম্যাচ জিতে যাওয়া সম্ভব। আমাদের এ বারের বোলিং অ্যাটাকটা শুধু ভাবুন। সুনীল নারিন, পীযূষ চাওলা, সাকিব-আল-হাসান, মর্নি মর্কেল, উমেশ যাদব, বিনয় কুমার, জাক কালিস। আর তেমন দরকার পড়লে ইউসুফ পাঠান। এরা সবাই ইন্টারন্যাশনাল বোলার। যে কোনও কন্ডিশনে যে কোনও মাঠে ভাল বল করার ক্ষমতা রাখে।

প্র: কিন্তু কারেন্ট ইন্ডিয়া টি-টোয়েন্টি প্লেয়ার তো এক জনও নেই।
বেঙ্কি:সেটা যে থাকতেই হবে তার কোনও মানে নেই।

প্র: ব্যাটসম্যান কোথায় আপনার টিমের? হার্ড হিটারই তো নেই।
বেঙ্কি: যথেষ্ট রয়েছে। গম্ভীর, কালিস, উথাপ্পা, ইউসুফ, সাকিব। টেল এ বার কত ভাল। আমরা কত ম্যাচ হেরেছি জাস্ট ১০-১৫ রানে। টেল ভাল ব্যাট করতে না পারায়। এ বার পীযূষ চাওলার মতো ব্যাটসম্যান আসবে আট নম্বরে। ব্যাটিং কতটা ডিপ, ভাবতে পারছেন? টেলএন্ডাররাই এ বার ম্যাচ ফিনিশ করে দিতে পারবে।

প্র: আপনি বিদেশি ক্রিকেটার নিয়েছেন মাত্র চার জন। হাতে টাকা নিয়েও আপনি কোরি অ্যান্ডারসনের মতো কাউকে নেওয়ার যে চেষ্টা করলেন না, সেটা
বেঙ্কি:
বিস্ময়কর কেন হতে যাবে? কোরি আগে ইন্ডিয়ায় ম্যাচ খেলুক। খেলে নিজেকে প্রমাণ করুক। তার আগেই ওর পিছনে এতগুলো টাকা ফেলে দেব? আমাদের এ বারের মন্ত্র হচ্ছে স্মার্ট বায়িং। বুদ্ধি করে খেলো। অন্ধ আবেগ দিয়ে নয়।

প্র: জোকার কার্ড দিয়ে ইউসুফকে কেনাটা কি যথেষ্ট জোক নয়? গত তিন বছর ওর কী পারফরম্যান্স আছে?
বেঙ্কি: প্রথমত ওকে আমরা কিনেছি গত বারের তিন ভাগের এক ভাগ টাকায়। সেকেন্ডলি, ইউসুফ নিজে কতটা কনফিডেন্স পাবে, যখন বুঝবে ততটা ভাল না করতে পারার পরেও ফ্র্যাঞ্চাইজি ওর ওপর থেকে কনফিডেন্স হারায়নি।

প্র: অমিত মিশ্র ইন্ডিয়া টিমের প্লেয়ার। তাঁর পিছনে আপনারা গেলেন না। প্রজ্ঞান ওঝার দিকে যেতে চাইলেন না। কাছাকাছি টাকা দিয়ে পীযূষ চাওলাকে কিনে ফেললেন।
বেঙ্কি: পীযূষ ব্যাটটাও করতে পারে। প্লাস বাড়তি পঞ্চাশ লাখ টাকা যেত। যুবরাজের বেলাতেই তো। আমরা তেরো কোটি টাকা অবধি ওর জন্য গেছিলাম। কিন্তু তার পরেও ভাবছিলাম যদি নিতে হয় তেরো কোটি বেরিয়ে যাবে। বাকি সব প্ল্যান ভণ্ডুল হয়ে যাবে।

প্র: নিলামে টপ প্লেয়ার তুলতে গেলে তো টাকা খরচ করতেই হবে। তা ছাড়া বড় প্লেয়ার থাকলে তো টিম ঘিরে উৎসাহও বাড়ে। এনডোর্সমেন্ট মার্কেটে টিমের চাহিদা বাড়ে। আপনার এ বারের দলে তো বড় কোনও স্টারই নেই, যার নিজস্ব ফ্যান বেস রয়েছে।
বেঙ্কি: কে বলল নেই। গম্ভীর, কালিস, মর্কেল এরা যথেষ্ট বড় বড় স্টার।

প্র: মর্নি মর্কেলের বেশি দর ওঠেনি তাঁর ফিটনেস নিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের মধ্যে সন্দেহ থাকায়।
বেঙ্কি: ফিট আছে। সাউথ আফ্রিকায় ক্লাব লেভেলে টি -টোয়েন্টি খেলছে তো মর্নি।

প্র: ওয়াসিম আক্রম যখন টিমেরই অংশ হিসেবে এ বার ফিরে এসেছেন, তাঁকে নিলামে রাখলেন না কেন? অন্য টেবলগুলোয় এত বড় বড় ক্রিকেট-মাথা!
বেঙ্কি: ওয়াসিম তো কোনও বারই নিলামে থাকে না। তা ছাড়া আমাদেরও ক্রিকেটিং ব্রেন ছিল তো! রামন। দাহিয়া। ওরা এ সব লোকাল প্লেয়ারদের সম্পর্কে দারুণ জানে-টানে।

প্র: নাইট সমর্থকদের সবচেয়ে আশ্চর্য লেগেছে, শামিকে আপনারা নিলেন না দেখে। একটা জোকার কার্ড তো শামির জন্য আপনারা রাখতে পারতেন!
বেঙ্কি: শামিকে রাখাটাই আমাদের প্ল্যান ছিল। ওর জন্য একটা কার্ড ধরে রেখেছিলাম। কিন্তু কালিসের দরটা হঠাৎ বেড়ে গেল। শামির বেস প্রাইসের চেয়ে অনেক বেশি উঠে গেল। তবে একটা কথা মনে রাখবেন, বাংলা টিমের আগে প্রথম শামিকে নিয়েছিলাম আমরাই।

প্র: কলকাতার লোকাল সেন্টিমেন্ট অসম্ভব আহত যে, বাংলা এ বার রঞ্জিতে এত ভাল করার পরে। শামির মতো কেউ ইন্ডিয়ায় রেগুলার হওয়ার পরেও আপনারা টিমে এক জনও স্থানীয় প্লেয়ার রাখেননি।
বেঙ্কি: আমরা নিতে চেয়েছিলাম। প্রত্যেকের জন্যই কিছু না কিছু পর্যায় অবধি আমরা গেছি। লক্ষ্মীর জন্য তো দেড় কোটি টাকা অবধি গেছিলাম। কিন্তু ওদের টাকাটা এ বার অনেক বেড়ে গেছে। তাই ম্যানেজ করা যায়নি।

প্র: আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন ইমোশনাল ইডেন গার্ডেন্স দর্শকের ব্যাপারটা একেবারেই ভাল মনে হয়নি।
বেঙ্কি: দেখুন স্থানীয় সেন্টিমেন্টের কথা ভেবে তো সমগ্র ক্রিকেট টিম তৈরি করা যায় না। অনেক কিছু ফ্যাক্টর মাথায় রাখতে হয়। আর আমার মনে হয় না লোকে এই ভাবে প্লেয়ারভিত্তিক সমর্থন করে বলে। তারা ভালবাসে একটা গোটা ইউনিটকে। কেকেআরের থিম সেটাই। ব্যক্তি নয়, টিম।

প্র: সিএবি কর্তারাও খুব ক্ষুব্ধ। কোষাধ্যক্ষ তো উত্তেজিত বিবৃতিই দিয়েছেন কেকেআরের বিরুদ্ধে। আপনার কী প্রতিক্রিয়া?
বেঙ্কি: যখন নিয়ম হল যে, ক্যাচমেন্ট এরিয়ার প্লেয়ার আর নিতে হবে না, তখনই তো সিএবি-র প্রোটেস্ট করা উচিত ছিল। আজ এ সব বলে কী লাভ? আর কোষাধ্যক্ষ কী বলেছেন আমি পাল্টা বলতে চাই না। ধুর...।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.