গ্যাংনাম নাচার দিন-ক্ষণ-জায়গা এখনই ঠিক করে ফেলতে চান একজন।
অন্য জন ফেরত চান চার কোটি!
যুবরাজ সিংহ আর বিজয় মাল্য—আইপিএল নিলামের প্রথম দিনের শেষে চুম্বকে এই হল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু শিবিরের দুই ছবি।
আইপিএলের সপ্তম সংস্করণের আগে নিলামে সর্বোচ্চ, চোদ্দো কোটি দাম ওঠায় যথেষ্ট খুশি দিনের নায়ক যুবরাজ। তবে অলরাউন্ডারের জন্য চক্ষু চড়কগাছ দরটা হেঁকেছেন যিনি, সেই আরসিবি মালিক বিজয় মাল্যর অভিযোগ গ্রাহ্য হলে, যুবরাজ আর এই আইপিএলের সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার থাকবেন না। সেটা হয়ে যাবেন বারো কোটির দীনেশ কার্তিক।
সকালে বিশ্বের অন্যতম সেরা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটারের জন্য আইপিএল রেকর্ড চোদ্দো কোটি খরচ করে যতটা চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছিলেন, সন্ধ্যায় প্রায় ততটাই চাঞ্চল্যকর দাবিতে মাল্য জানিয়েছেন, নিলামের ভুলে তাঁরা যুবরাজ জন্য চার কোটি টাকা বাড়তি দিতে বাধ্য হন। এ ব্যাপারে আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের কাছে সরকারি অভিযোগও পাঠিয়েছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।
|
এত দিন জাতীয় দলের সতীর্থ ছিলেন। এ বার আইপিএলে। |
মাল্যর দাবি, যুবরাজের দাম দশ কোটি ওঠার পরে নিলামের হাতুড়ি পড়ে গিয়েছিল। কলকাতা নাইট রাইডার্স তার পরে এগারো কোটির দর হাঁকে। যুবরাজকে ছাড়তে নারাজ মাল্যরা কলকাতার ফ্র্যাঞ্চাইজিকে শেষ পর্যন্ত হারান চোদ্দো কোটির দর হেঁকে। মাল্য এ দিন বলেছেন, “ওই সময়ে দশ কোটিতেই হাতুড়ি পড়ে গিয়েছিল। আর আমরা যতটুকু জানি, হাতুড়ি পড়ে গেলে আর নিলামে দাম বাড়ানো যায় না।” মাল্যদের অভিযোগ হাতুড়ি পড়ার প্রায় একই সময় কলকাতা নতুন দর হাঁকায় নিলাম চালিয়ে যাওয়া হয়। মাল্য বলেছেন, “আমরা লিখিত অভিযোগ করেছি। আশা করি গভর্নিং কাউন্সিল বিষয়টা বিবেচনা করবে।” তবে দাম যা-ই দিতে হয়ে থাক, যুবরাজকে দলে পেয়ে মাল্য ‘দারুণ খুশি’।
দারুণ খুশি যুবরাজও। “গ্যংনামটা যেন ক’টা থেকে শুরু হচ্ছে?” আইপিএলের তিন নতুন টিমমেট, বিরাট কোহলি, ক্রিস গেল আর এ বি ডে’ভিলিয়ার্সকে বার্তা পাঠান টুইটারে। বিরাট-গেলদের সঙ্গে গ্যাংনাম নাচার দিন-ক্ষণ-স্থান ঠিক করে ফেলার পরের টুইটে স্বস্তির নিঃশ্বাসও ফেলেন। যুবরাজ লেখেন, “আরসিবি-র হয়ে খেলতে মুখিয়ে আছি। পাওয়ার প্যাকড টিম, দর্শকও। সব থেকে খুশি এটা জেনে যে, ক্রিস্টোফার হেনরি গেলের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র নেটে বল করতে হবে!”
হালফিল ফর্মে না থাকা যুবরাজের জন্য এত দাম উঠতে পারে সেটা অনেকেই ভাবতে পারেননি। সকালে মুরলী বিজয়, মাহেলা জয়বর্ধনে আর কেভিন পিটারসেনের পর নিলামে ওঠা চতুর্থ নামটাই ছিল যুবরাজের। যাঁর বেস প্রাইস ছিল দু’কোটি টাকা। ঠিক আগে পিটারসেনের দাম উঠেছে ৯ কোটি। তবু যুবরাজের জন্য রাজস্থান রয়্যালস আর কিংস ইলেভেন পঞ্জাব যখন দর হাঁকাহাঁকি শুরু করে তখনও কেউ ভারতে পারেননি কতটা দাম উঠতে চলেছে।
দাম তিন কোটি ছাড়িয়ে যাওয়ার পর আসরে নামেন মাল্যরা এবং আরসিবি পাঁচ কোটি থেকে এক লাফে দশ কোটি দাম দেওয়ায় পিছিয়ে যায় অন্য দুই ফ্র্যাঞ্চাইজি। আরসিবি যুবরাজকে পেয়ে গিয়েছে বলে যখন ধরেই নেওয়া হচ্ছে, ঠিক তখন এগারো কোটি ডাকে কলকাতা নাইট রাইডার্স। জবাবে আরসিবি বলে, বারো কোটি। কলকাতা বলে, তেরো। কিন্তু যুবরাজকে পেতে মরিয়া মাল্যরা চোদ্দো কোটি দর দেওয়ায় পিছিয়ে যায় শাহরুখ খানের কলকাতা।
রেকর্ড দামে বিক্রি হওয়ার পরেই বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে যুবরাজের জন্য অভিনন্দনের বন্যা শুরু হয়। যা দিনভর থামেনি। |