কর্তব্যরত অবস্থায় এক পুলিশকর্মী নিজের রাইফেল বার করে এক কিশোরের দিকে তাক করেন। বেশ কয়েক বার বলেন, “দেখবি, গুলি চালিয়ে দেব?” হঠাৎ ছুটে যায় গুলি। লাগে বছর বারোর ওই কিশোরের ডান হাতে। চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পরে তাকে পাঠানো হয়েছে এসএসকেএমে। বুধবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির পোলবার রাজহাটে।
পোলবা থানার অভিযুক্ত কনস্টেবল প্রদীপ সরকার ঘটনার পরেই চম্পট দেন। তাঁকে পুলিশ লাইনে ‘ক্লোজ’ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার (সদর) তথাগত বসু। প্রদীপের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি। হোটেলকর্মীদের অভিযোগ, মাঝে মধ্যে নেশা করে ওই পুলিশকর্মী হোটেলে খেতে আসতেন। ঘটনার সময় মদ্যপ ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, কারুকুমার চৌহান নামে জখম ছেলেটির আদি বাড়ি রাঁচিতে। তার মা ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে কিছু দিন আগেই কাজের খোঁজে চলে এসেছিলেন পোলবায়। রাজহাটে একটি হোটেলে কাজ পায় কারু। তার মা কাছেই একটি ইটভাটার শ্রমিক। |
প্রদীপবাবু এ দিন ডিউটি করছিলেন রাজহাটে দিল্লি রোডের ধারে একটি পেট্রোল পাম্পের সামনে। দুপুর ২টো নাগাদ তিনি পাম্প-লাগোয়া ওই হোটেলটিতে খেতে ঢোকেন। কারু বলে, “আমি হোটেলের বাইরে খাটিয়ায় বসেছিলাম। ওই পুলিশকাকু বন্দুক তুলে খালি বলছিল, দেখবি, গুলি চালাব! হঠাৎই একটা গুলি ছিটকে আমার হাতে লাগে।” ছেলেটির কনুইয়ে লেগে গুলিটি হোটেলের অ্যাসবেসটসের ছাদ ফুটো করে বেরিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়ে কারু। যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকে। তা দেখেই প্রদীপ সরে পড়েন। আশপাশের লোকজন জড়ো হয়েছে তত ক্ষণে। সে সময়ে পোলবা থানার একটি গাড়ি ওই পথ দিয়ে যাচ্ছিল। ঘটনার কথা শুনে পুলিশই ছেলেটিকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করায়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ছেলেটির ডান হাতের তালুতে লেগে গুলিটি কব্জির হাড় ভেঙে কাঁধের কাছ দিয়ে বেরিয়ে যায়। ইমামবাড়া হাসপাতালে অস্ত্রোপচার হলেও পরবর্তী চিকিৎসার জন্য তাকে পাঠানো হয়েছে কলকাতায়।
হোটেলের রাধুনি পাগলা হালদার বলেন, “ওই পুলিশকর্মী রোজই এখানে খেতে আসেন। প্রতিদিনই মদ খেয়ে থাকেন।” |