শহরের জায়গায় জায়গায় রমরমিয়ে চলছে বেআইনি চোলাই মদের ব্যবসা। কিন্তু সব কিছু দেখে শুনেও নির্বিকার প্রশাসন। এমনই অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
উলুবেড়িয়া আবগারি দফতর ও থানার নাকের ডগাতেই চলছে চোলাই মদ বিক্রি। শহরের প্রাণকেন্দ্রে রয়েছে উলুবেড়িয়া রবীন্দ্রভবন এবং দু’টি হাইস্কুল। একটি বীণাপানি গার্লস স্কুল অন্যটি উলুবেড়িয়া হাইস্কুল। রয়েছে উলুবেড়িয়া বাজার। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীরাও যাতায়াত করেন ওই রাস্তা দিয়ে। ঠিক তার পাশেই ঝুপড়িতে চলছে রমরমিয়ে ব্যবসা। অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ। চোলাই বিক্রির পাশাপাশি চলছে অসামাজিক কাজকর্ম। শেখ মুস্তাফি নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “দুপুর এবং সন্ধের পর থেকেই মদ খেয়ে খোলা রাস্তায় মাতলামো করে কিছু মানুষ। সাধারণ মানুষের যাতায়াত করতে অসুবিধা হয়।” |
উলুবেড়িয়ার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে মুম্বই রোড। দু’পাশে রয়েছে অজস্র ছোট ছোট খাবারের দোকান। এখানেও গোপনে চলে চোলাইয়ের ব্যবসা। কম দামে এই সমস্ত জিনিস পেয়ে যুবকেরা নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে সহজেই। মদ্যপান করে চালকেরা গাড়ি চালানোর ফলে প্রতিদিনের দুর্ঘটনায় প্রাণ যাচ্ছে বহু মানুষের। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, পুলিশ-প্রশাসনের একাংশের মদতেই চলছে অসাধু ব্যবসা। উলুবেড়িয়ার মদাই, শাঁখাভাঙা, ধূলাশিমলা, বাগান্দা ইত্যাদি এলাকায় বাড়ি বাড়ি চোলাই তৈরি করা হয়। ১০ টাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দামের প্যাকেট। দোকানে গিয়ে বলতে হয় ‘প্লাস্টিক চয়েস’। পুলিশ লোক দেখানো কয়েক বার ধরাধরি করলেও ফের শুরু হয়ে যায় ব্যবসা। উলুূবেড়িয়ার রবীন্দ্রভবনের পাশে এমনই এক চোলাই বিক্রেতা মহিলা বলেন, “সংসার চালানোর জন্যই এই ব্যবসা করছি। বহু দিন ধরেই এলাকায় বিক্রি করি।” তিনি জানান, প্রতিদিন ১০০-১৫০ টাকা রোজগার হয়।
উলুবেড়িয়া ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা বারবার পুলিশকে বলেছি, তা সত্ত্বেও কোনও কাজ হয়নি।” তাঁর অভিযোগ, পুলিশ ও আবগারি দফতর চোলাই ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাসোহারা পায়, তাই কিছু বলে না। একই কথা বলেন মুম্বই রোডের অন্যান্য ব্যবসায়ীরাও। পুলিশ অবশ্য এ কথা মানতে নারাজ। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “আমরা যখনই খবর পাই, অভিযান চালিয়ে তুলে দিই। খোঁজ নিয়ে দেখছি কোথায় কোথায় এখনও চোলাই মদের কারবার চলছে।” উলুবেড়িয়া আবগারি দফতরের আধিকারিক মানেকুজ্জামানকে ফোন করা হলেও তিনি অবশ্য এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। |