হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস-এর শেয়ার নিলাম সংক্রান্ত জট কাটাতে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক চায় ইন্ডিয়ান অয়েল (আইওসি)। সংস্থার দুই যুযুধান মালিক, রাজ্য সরকার ও চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসতে আগ্রহী এই নবরত্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, আইনি বিবাদে থমকে থাকা শেয়ার নিলাম প্রক্রিয়া ফের সচল করতে এটাই কার্যকর উপায় বলে মনে করছে নিলামের একমাত্র দরদাতা ইন্ডিয়ান অয়েল।
গত বছর অক্টোবর মাসে হলদিয়া পেট্রোকেমের শেয়ার কিনতে চেয়ে দরপত্র দিয়েছিল ইন্ডিয়ান অয়েল। কিন্তু চার মাসের উপর কেটে গেলেও মালিকানা নিয়ে আইনি লড়াইয়ের কারণে তাদের শেয়ার হাতে পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। সেই কারণে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের প্রয়োজনীয়তার কথা রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগমের কাছে পৌঁছে দিতে ইন্ডিয়ান অয়েল উপদেষ্টা সংস্থা ডেলয়েটের সহায়তা চেয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর।
গত ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি রাজ্য সরকারকে একটি চিঠি দেয় ইন্ডিয়ান অয়েল। রাজ্য সরকারি সূত্রের খবর, সেই চিঠিতে হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস-এর আইনি লড়াই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল তারা। কারণ এই বিবাদের জেরেই শেয়ার হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় দেরি হচ্ছে বলে জানিয়েছিল ইন্ডিয়ান অয়েল। একই সঙ্গে শেয়ার নিলাম নিয়ে পর পর মামলা হওয়ার জেরে এই গোটা প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন তোলে তারা। তার কারণ রাজ্য সরকার চুক্তিপত্র এবং অন্যান্য নথিপত্রে সব সময়ে ৬৭.৫০ কোটি শেয়ার বিক্রির কথা বলে এসেছে। এর মধ্যে বিতর্কিত ১৫.৫০ কোটি শেয়ারও রয়েছে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী ওই শেয়ারের মালিকানা দাবি করে আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতে যেতে পারে চ্যাটার্জি গোষ্ঠী। সে ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের চুক্তিপত্রের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে ইন্ডিয়ান অয়েল। এমনকী, তারা জানতে চায় চুক্তিভঙ্গ হচ্ছে কি না, তাও স্পষ্ট করে বলুক রাজ্য। কিন্তু কোনও উত্তর দেয়নি রাজ্য। তবে শিল্প দফতরের দায়িত্ব পাওয়ার পরে নয়া শিল্পমন্ত্রী হিসেবে অমিত মিত্র ফোনে ইন্ডিয়ান অয়েলের চেয়ারম্যান আর এস বুতোলার সঙ্গে কথা বলেছেন। |
গত বছর মে মাসে নিজেদের শেয়ার বিক্রি করে দিতে চেয়ে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল রাজ্য সরকার। ইচ্ছাপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা ছিল ১০ জুন। এর পরে শেয়ার কিনতে চেয়ে দাম জানানোর সময়সীমা ৩১ অগস্ট ঠিক হয়। কিন্তু শেয়ার কেনার চুক্তিপত্রের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় আরও পিছিয়ে যায় সময়সীমা।
রাজ্য সরকারের শেয়ার নিলামের সিদ্ধান্ত প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই সম্ভাব্য ক্রেতা হিসেবে উঠে এসেছিল গেইল, ইন্ডিয়ান অয়েল, ও এন জি সি-র মতো রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা। তালিকায় ছিল বেসরকারি রিলায়্যান্স, কেয়ার্ন ও এসার। চূড়ান্ত পর্ব যত এগোয়, লড়াইটা ইন্ডিয়ান অয়েল বনাম রিলায়্যান্স হয়ে যায়।
এর পর পেট্রোকেমের শেয়ার কিনতে চেয়ে অক্টোবরে দরপত্র জমা দেয় শুধু মাত্র ইন্ডিয়ান অয়েল। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, দরপত্র জমা দেওয়ার দিন সকাল এগারোটা নাগাদ রিলায়্যান্স গোষ্ঠী ফোন করে জানায়, শেয়ার নিলামে তারা অংশ নিচ্ছে না। প্রসঙ্গত, সংস্থায় ইতিমধ্যেই ইন্ডিয়ান অয়েলের সাড়ে পনেরো কোটি শেয়ার রয়েছে। |