|
|
|
|
|
|
|
লগ্নির পদ্ধতি হিসেবে এসআইপি সম্পর্কে জানতে আগ্রহী।
১) এসআইপি কী?
২) কী ভাবে এতে লগ্নি করা হয়?
৩) এর সুবিধা কী?
শান্তনু ঘোষ |
এসআইপি-র পুরো কথাটা সিস্টেম্যাটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান। এটি মিউচুয়াল ফান্ডে নিয়মিত, নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে লগ্নি করে যাওয়ার একটি পদ্ধতি।
এখানে একসঙ্গে অনেক টাকা লগ্নি করতে হয় না। সাধ্যমতো অল্প অল্প করে জমা রেখে বড় তহবিল গড়ে তোলা যায়। একজন লগ্নিকারী নিজের সুবিধা মতো টাকার পরিমাণ বেছে নিতে পারেন, যা একটি মেয়াদ পর্যন্ত প্রতি মাস বা ত্রৈমাসিকের নির্দিষ্ট তারিখে জমা দিয়ে যেতে হয়। চাইলে ওই মেয়াদ ইচ্ছেমতো বাড়ানোও যায়।
উদাহরণ: ধরা যাক, আপনি ফান্ড ‘ওয়াই’ বেছে নিলেন। তাতে ১২ মাসের জন্য ‘এক্স’ টাকার এসআইপি করবেন। এর মানে হল, আপনি ১২ মাস ধরে প্রতি মাসের একটি নির্দিষ্ট দিনে (যা এসআইপি শুরু করার সময়েই স্থির করা হয়) ওই টাকা জমা করবেন। আপনার অনুমতি নিয়ে নির্দিষ্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতি মাসের একটি নির্দিষ্ট তারিখে টাকাটা কেটে নেবে মিউচুয়াল ফান্ড সংস্থাই। এ বার ভবিষ্যতে চাইলে ওই ১২ মাসের মেয়াদ আপনি ক্রমশ বাড়িয়ে যেতে পারেন।
সুবিধা/উপযোগিতা:
১) নিয়মিত এবং নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে লগ্নি। ফলে সঞ্চয়ে তেমন উদ্যোগী না-হলেও, নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে আপনার টাকা জমতে থাকবে।
২) চাইলে খুব অল্প টাকার এসআইপি করা যায়। ফলে আর্থিক চাপ পড়ে না।
৩) নির্দিষ্ট সময় অন্তর একটি নির্দিষ্ট তারিখে আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে এসআইপি-র টাকা সংশ্লিষ্ট সংস্থাই কেটে নিতে পারে। অর্থাৎ প্রতি বার চেক কাটার দরকার পড়ে না। কোনও মাসে বাদ পড়ে যাওয়ারও ভয় নেই।
৪) সব খরচ মিটিয়ে যাঁদের হাতে সামান্য বাড়তি পুঁজি পড়ে থাকে, সেই সব সাধারণ লগ্নিকারীদের জন্য এই পদ্ধতি আদর্শ।
৫) অল্প অল্প করে অনেক দিন ধরে টাকা জমা করে অনেক বড় তহবিল গড়া যায়।
৬) আচমকা প্রয়োজন পড়লে এসআইপি-র কিছু টাকা তুলেও নেওয়া যেতে পারে। যত টাকা পড়ে থাকবে তা ফান্ডের ন্যাভ অনুযায়ী বাড়তে থাকবে।
|
|
বয়স ৩১ বছর। বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করি। বেতন মাসে ৪০ হাজার টাকা। পিএফ ৩,৫০০ টাকা। জীবন বিমার প্রিমিয়াম দিতে হয় বছরে ৩৪ হাজার। স্বাস্থ্যবিমা জন্য খরচ বছরে ৪,০০০ টাকা। স্ত্রী আছেন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে। মাসে পান ১৩ হাজার। তাঁর পিএফ জমে মাসে ১,৫০০ টাকা। বছরে জীবনবিমার প্রিমিয়াম ১৭ হাজার ও স্বাস্থ্যবিমার ৪,০০০ টাকা।
এই অবস্থায় আমরা ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে কলকাতায় একটি ফ্ল্যাট কিনতে চাই। আমার অ্যাকাউন্টে আছে ৪ লক্ষ টাকা। কী ভাবে সম্ভব?
সুদীপ্ত হালদার, চুঁচুঁড়া |
আপনারা দু’জনেই চাকরি করেন। কলকাতায় ফ্ল্যাট নিতেই পারেন। তবে আগে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখুন
১) কোথায় ফ্ল্যাট কিনতে চান
২) কত আয়তনের (কার্পেট এরিয়া বা সুপার বিল্ট)
৩) দাম আমার সাধ্যের মধ্যে তো?
৪) প্রথমেই কিছু টাকা ডাউন-পেমেন্ট করতে হবে। কতটা পারবেন?
৫) প্রতি মাসে কত টাকার ইএমআই দেওয়া সম্ভব
এ বার আপনার নগদের জোগান, লগ্নি ইত্যাদি দেখে আমি একটা ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করছি যে, কত টাকার ইএমআই আপনার পক্ষে দেওয়া সম্ভব। এবং তার থেকে আন্দাজ পাওয়া যাবে মোটামুটি কত টাকার গৃহঋণ নেওয়ার কথা ভাবতে পারেন আপনি।
• মাসে দু’জনের মোট রোজগার:
৪০,০০০+১৩,০০০=৫৩,০০০
• মাসে দু’জনের মোট খরচ/লগ্নি:
জীবনবিমা বাবদ- ২৮৩৩ (৩৪,০০০/১২) + ১৪১৬ (১৭,০০০/১২)= ৪,২৫০ (প্রায়)
মেডিক্লেম বাবদ- ৩৩৩.৩ (৪,০০০/১২) + ৩৩৩.৩ (৪,০০০/১২)= ৬৬৭ টাকা (প্রায়)
অর্থাৎ ৪,২৫০+৬৬৭= ৪,৯১৭ টাকা (প্রায়)
• প্রতি মাসে হাতে থাকছে:
৫৩,০০০-৪,৯১৭= ৪৮,০৮৩ টাকা (প্রায়)
• মাসে খরচ:
এটার হিসেব দেননি। তাই সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী ধরছি সেটা উদ্বৃত্তের (৪৮,০৮৩) ৫০%। ২৪০৪১ টাকা (প্রায়)
• সম্ভাব্য ঋণ:
যদি ২৪ লক্ষ টাকা ১০.৫% সুদে ২০ বছরের জন্য ঋণ নেন, তা হলে ইএমআই দিতে হতে পারে মাসে ২৩,৯৬১ টাকা পর্যন্ত। যা সম্ভব
• এর থেকে বেশি ঋণ নিতে:
আরও লম্বা মেয়াদের ঋণ নিতে পারেন, যাতে ইএমআই কম দিতে হয়
• ডাউনপেমেন্টের জন্য:
অ্যাকাউন্টের টাকা কাজে দেবে
• অতএব:
সব দিক বিচার করে বলা যায় খুব বেশি হলে ২৫ থেকে ৩০ লক্ষ টাকার ফ্ল্যাট কেনার কথা ভাবতে পারেন আপনি। তবে আমি আপনাকে শুধুমাত্র একটা ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করলাম। এটাকে কোনও পরামর্শ বলে ধরবেন না। কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই একজন পেশাদারি পরামর্শদাতা বা আপনার ব্যাঙ্কের সঙ্গে কথা বলে সব জেনে-বুঝে নেবেন। |
(পরামর্শদাতা নীলাঞ্জন দে, শৈবাল বিশ্বাস) |
|
|
|
|
|