ফের আসছে ঝড়, সতর্কতা ব্রিটেনে
বহবিদদের আশঙ্কা সত্যি করে নতুন করে দুর্যোগের কবলে ব্রিটেন। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, প্রায় ১০০ মাইল বেগে ধেয়ে আসছে ঝড়। বুধবার বিকেলেই তা আছড়ে পড়ার কথা ওয়েলসের উপকূলবর্তী এলাকায়। আবহবিদরা জানাচ্ছেন, ঝড়ের সঙ্গে বাড়বে বৃষ্টির মাত্রা। তার ফলে নতুন করে বিপদসীমার উপর দিয়ে বইতে পারে নদীগুলি। আবহাওয়া দফতরের এই সতর্কবার্তার পরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছে প্রশাসন।
আজ দুপুর থেকে নতুন করে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। তাতে বলা হয়েছে, বুধবার সন্ধে থেকে পশ্চিম ওয়েলস ও উত্তর-পশ্চিম ইংল্যান্ডের পরিস্থিতি বেশি করে খারাপ হতে পারে। এই চূড়ান্ত সতর্কতা জারি ব্রিটেনের ইতিহাসে বিরল। সাধারণত অতিরিক্ত দুর্যোগ ও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করলেই এমন ধরনের সতর্কতা জারি করে আবহাওয়া দফতর। এমনিতেই ইংল্যান্ড, ওয়েলস, স্কটল্যান্ডের বিস্তীর্ণ এলাকা জলের তলায়। তার উপর নতুন করে সতর্কতা জারি হওয়ায় আতঙ্কিত উপকূলের বাসিন্দারা।
গত কয়েক দিন ধরেই বলা হচ্ছে, সেই ১৯৪৭-এর পরে এমন ভয়াবহ বন্যা দেখেনি ব্রিটেন। আবহাওয়া দফতরও জানাচ্ছে, আড়াইশো বছরে এমন শীতকালীন বৃষ্টি হয়নি ওয়েলস আর ইংল্যান্ডে। এই পরিস্থিতিতে নতুন করে বিপর্যয় মোকাবিলার বিষয়ে ভাবনা-চিন্তা করতে হচ্ছে ক্যামেরন সরকারকে। আজ সকালেই কোবরা কমিটির সঙ্গে আপৎকালীন বৈঠক সেরেছেন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। নিজের চোখে উদ্ধার ও ত্রাণ কাজ দেখবেন বলে ইতিমধ্যেই পশ্চিম এশিয়া সফর বাতিল করেছেন তিনি। প্রশাসনের প্রতি তাঁর স্পষ্ট নির্দেশ, “ত্রাণের ক্ষেত্রে অর্থ যেন কোনও ভাবেই বাধা না হয়।”
পোষ্যকে নিয়ে আশ্রয়ের খোঁজে। বুধবার টেমসের ধারে স্টেন্স শহরে। ছবি: এপি।
আবহাওয়া দফতরের নতুন সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, ঝড়ে প্রচুর গাছ উপড়ে পড়তে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে বিদ্যুতের লাইনও। ফলে নতুন করে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়তে পারে উপকূলবর্তী আরও কয়েকশো বাড়ি। গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বেরোনোর ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। কয়েক দিনের বন্যায় এমনিতেই ব্যাহত হচ্ছে ব্রিটেনের রেল পরিষেবা।
কয়েক দিনেও পরিস্থিতির উন্নতির লক্ষণ তো নেই। উল্টে টেমস, সেভার্ন, উই নদীর জলস্তর আরও বাড়তে পারে আগাম জানিয়ে রেখেছে আবহাওয়া দফতর। এর মধ্যে টেমসই আপাতত ঘুম কেড়ে নিয়েছে প্রশাসনের।
কিন্তু ইংল্যান্ডের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই নদী তার একের পর তীরবর্তী শহর-গ্রাম ভাসিয়ে চলেছে। টেমস তীরবর্তী লন্ডন শহর বন্যার হাত থেকে রেহাই পেলেও ঝড়-বৃষ্টিতে ভীষণ ভাবে ব্যাহত হচ্ছে জনজীবন। মেডেনহেড, বার্কশায়ার, সারের অবস্থা সব চেয়ে শোচনীয়। স্থানীয় স্কুলগুলিকেই আপাতত ত্রাণ শিবিরের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
আর এর মধ্যেই উদ্ধার কাজ নিয়ে সরকারের সমালোচনা শুরু হয়েছে। বিভিন্ন উপকূল এলাকায় বাসিন্দারা দাবি করছেন, এই বন্যায় তাঁরাই সব চেয়ে উপেক্ষিত। তাঁদের দিকে প্রশাসন সাহায্যের হাত বাড়াচ্ছে না বলে গত কালই অভিযোগ করেছিলেন র্যাসবারি এলাকার বাসিন্দারা।
পরিবহণ মন্ত্রী প্যাট্রিক ম্যাকলাফলিন সেই অভিযোগ কার্যত স্বীকারও করে নিয়েছেন। ব্রিটেন যে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, তাতে সবাইকে একসঙ্গে খুশি করা প্রশাসনের পক্ষে সম্ভব না বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে তাঁর কথায়, “বিগত ভুল থেকে আমরা শিখছি।” উদ্ধার কাজে গতি আনতে আজ থেকে নামানো হয়েছে আরও ছ’শো সেনাকে। পরিস্থিতি সামলাতে আরও এক হাজার উদ্ধারকর্মী তৈরি রয়েছেন বলেও জানানো হয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.