কিছু দিন আগেই তাঁদের একুশ বছরের দাম্পত্যে চিড় ধরেছে কিনা, তা নিয়ে শুরু হয়েছিল জোর গুঞ্জন। আর সেই গুঞ্জনে ইন্ধন জুগিয়েছিল নেলসন ম্যান্ডেলার স্মরণসভায় তোলা একটি সেলফি। আর এ বার ফরাসি সংবাদমাধ্যমের সৌজন্যে ফের প্রশ্নের মুখে মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাম্পত্য জীবন। নতুন বিতর্কের কেন্দ্রে মার্কিন পপ তারকা এবং অভিনেত্রী বিয়ন্সে।
বারাক ওবামা এবং মিশেলের মধ্যে দূরত্ব ক্রমশ বাড়ছে বলে গত কয়েক মাস ধরেই চর্চা চলছে বিভিন্ন মহলে। দাম্পত্যে ভাঙনের জল্পনার শুরু জোহানেসবার্গে। সেখানে নেলসন ম্যান্ডেলার স্মরণসভায় ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী হেলে থর্নিং-শ্মিটের পাশে বসে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনকে নিয়ে সেলফিতে ‘পোজ’ দিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সেলফি ক্যামেরাবন্দি করার ওই মুহূর্তটি ধরা পড়েছিল এক চিত্রসাংবাদিকের ক্যামেরায়। সেই ছবিতে দেখা যায়, ক্যামেরন, হেলে আর ওবামার চটুল মুহূর্তে একটু দূরত্বে গোমড়া মুখে বসে আছেন মিশেল।
আর এ বার ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাসোয়াঁ ওলাঁদের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কথা প্রকাশ্যে এনেছিলেন যিনি, সেই ফরাসি পাপারাৎজি পাস্কাল রোস্তাঁর দাবি করেছেন, ওবামা এবং বিয়ন্সে নাকি পরস্পরের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছেন। বয়সে ওবামার তুলনায় বছর কুড়ির ছোট বিয়ন্সে। তাঁদের ঘনিষ্ঠতা কোন পর্যায়ে, তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ থাকলেও এটা সকলেই মানবেন যে ওবামা-বিয়ন্সে কিন্তু বরাবরই পরস্পরের গুণমুগ্ধ। ২০১৩ সালে দ্বিতীয় বার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরেও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিয়ন্সেকেই গান গাইতে ডেকেছিলেন ওবামা। নির্বাচনী প্রচারের প্রথম থেকেই এই পপ গায়িকা ছিলেন ওবামার সমর্থক। ২০১২ সালে তিনি একটি খোলা চিঠিতে ওবামার অকুণ্ঠ প্রশংসা করেছিলেন তিনি। যাতে কৃষ্ণাঙ্গ এই গায়িকার বক্তব্য ছিল, আমেরিকায় তাঁর মেয়ে এবং ভাইপো বড় হয়ে যা হতে চায়, নিশ্চিন্তে তা-ই হতে পারবে। সেটা সম্ভব হয়েছে শুধু ওবামার জন্যই। ‘ডেনজারাসলি ইন লাভ’ ২০০৩ সালে বিয়ন্সের আত্মপ্রকাশ এই অ্যালবামের হাত ধরেই। যা তাঁকে বিশ্বজোড়া খ্যাতির পাশাপাশি এনে দিয়েছিল পাঁচ-পাঁচটি গ্র্যামি। বিক্রি হয়েছিল অ্যালবামের ১ কোটি ১০ লক্ষ কপি। |
জল্পনা উস্কে দেওয়া মুহূর্ত। ২০১৩ সালে বিয়ন্সের মুখে জাতীয় সঙ্গীত শোনার পর ওবামা। ছবি: গেটি ইমেজেস। |
নিজেকে নারীবাদী বলেই পরিচয় দিতে ভালবাসেন এই গায়িকা। ১১ বছরের কেরিয়ারে মোট ১৭টি গ্র্যামি তাঁর ঝুলিতে। অভিনয় করেছেন পিঙ্ক প্যান্থার, ড্রিমগার্লস-এর মতো ছবিতে। দারুণ জনপ্রিয় গায়িকা-অভিনেত্রীর প্রশংসায় ওবামাকেও প্রায়শই সরব হতে দেখা গিয়েছে। তিনি বলেছেন, গান তো বটেই, বিয়ন্সের অসাধারণ আভিজাত্যও তাঁকে মুগ্ধ করে। তাঁর দুই কন্যা, মালিয়া আর সাশার জন্য বিয়ন্সের চেয়ে ভাল রোল মডেল আর কে-ই বা হতে পারে!
সোমবার একটি রেডিও চ্যানেলে বিয়ন্সে-ওবামার প্রেম নিয়ে প্রথম মন্তব্যটি শোনা যায়। সেখানেই ফরাসি পাপারাৎজি বলেন, ওই বিস্ফোরক খবর একটি জনপ্রিয় মার্কিন দৈনিকে প্রকাশিত হবে মঙ্গলবার। কীসের ভিত্তিতে তিনি এই দাবি করছেন, প্রশ্ন করা হয়েছিল পাপারাৎজিকে। যার উত্তরে তিনি বলেন, “ওবামা আর মিশেলের ইদানীং কালের ছবি থেকেই তা স্পষ্ট। টেলিভিশনে হোক বা সাধারণ ছবিতে, তাঁরা নিজেদের মধ্যে যথেষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে চলেছেন।” শেষমেশ অবশ্য সব জল্পনা ফালতু বলে জানিয়ে কোনও খবরই আর প্রকাশ করেনি ওই মার্কিন দৈনিক। বিয়ন্সের মুখপাত্রও জানান, এটা গুজব ছাড়া কিছুই নয়। ওবামা-মিশেলের দাম্পত্যে ফাটল নিয়ে গুঞ্জন শোনা গেলেও বিয়ন্সের সঙ্গে র্যাপার স্বামী জে জেডে-র ছ’বছরের বিবাহিত জীবনে কোনও চিড় ধরেছে, এমন কখনও শোনা যায়নি। ওবামা দম্পতি ও বিয়ন্সে-জে জেডের পারিবারিক সম্পর্ক অনেক দিনের। ওবামা তো মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপলক্ষে আমন্ত্রণ জানান বিয়ন্সেকে। গত মাসেই মিশেলের ৫০তম জন্মদিনের পার্টিতেও গান গাইতে এসেছিলেন পপ তারকা।
সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্বামী। কিন্তু পারিবারিক সম্পর্ক পেরিয়ে কখন ওবামার মুগ্ধতা ছুঁয়ে গিয়েছে শুধু বিয়ন্সেকেই, জানে না কেউই। সম্পর্কের জল কোন দিকে ধায়, সবার নজর সে দিকেই। |