ছেলেবেলার স্কুলমঞ্চ ঢাকতে শেড গড়ল পরিবার
রদুপুরে হঠাৎ বৃষ্টি নামলেই আধখাওয়া থালা ফেলে ছুট লাগাতে হয় পড়ুয়াদের। তাছাড়া খোলা মঞ্চে স্কুলের নানা অনুষ্ঠানও অনেকসময়েই ভেস্তে যায় বৃষ্টিতে। বৃষ্টির হাত থেকে খুদেদের রেহাই দিতে তাই ছেলেবেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়কে লম্বা টিনের শেড বানিয়ে দিতে চলেছেন বড়শূলের একদা জমিদার বাড়ির সদস্যেরা।
বর্ধমানের ধর্মতলার ওই স্কুলের খোলা মঞ্চে নানা অনুষ্ঠান হয়। ছেলেমেয়েরা মিড-ডে মিলও খায় ওখানে বসে। কিন্তু বৃষ্টি নামলেই মুশকিল। ওই মঞ্চ ঢাকতেই চল্লিশ ফুট লম্বা ও তিরিশ ফুট চওড়া একটি শেড তৈরি করে দিচ্ছেন দে পরিবার। মাসখানেক আগে ২ লক্ষ টাকা খরচ করে শেডটি নির্মিত হয়েছে। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২২ ফেব্রুয়ারি ওই শেডের উদ্বোধনে হাজির থাকার কথা উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও বর্ধমানের মন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপধ্যায়ের।
স্কুলের সহ-শিক্ষক জয়ন্ত বিশ্বাস জানান, বছর দুই আগে, সর্বশিক্ষা অভিযানের টাকায় তাঁরা দু’টি ক্লাসঘরের পাশাপাশি একটি মঞ্চ তৈরি করেছিলেন। কিন্তু, পাওয়া ৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা ক্লাসঘর আর মঞ্চ করতেই খরচ হয়ে গিয়েছিল। ফলে মঞ্চ ঘিরে যে শেড দেওয়ার কথা ছিল তা আর করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তাঁর কথায়, “তখনই আমাদের মনে হয়, দে পরিবারের অনেকে এই স্কুলের ছাত্রছাত্রী ছিলেন। তাঁরা হয়তো এই ব্যাপারে আমাদের সাহায্য করতে পারেন।”

নবনির্মিত সেই শেড। —নিজস্ব চিত্র।
এরপরেই দে পরিবারের ঘনিষ্ঠ স্থানীয় সমাজসেবী গৌরহরি দত্তকে সঙ্গে নিয়ে তাঁরই সহপাঠী চিকিৎসক মুক্তিপ্রসাদ দে-র কাছে যান স্কুলের শিক্ষকেরা। পেশায় চিকিৎসক, ৬২ বছরের মুক্তিপ্রসাদবাবু থাকেন নদিয়ার কৃষ্ণনগরে। তিনি এই শেড নির্মাণে স্কুলকে সাহায্য করতে রাজি হয়ে যান। কেন জানতে চাওয়া হলে ফোনে মুক্তিপ্রসাদবাবু বলেন, “ওই স্কুলের সঙ্গে আমাদের শৈশব জড়িয়ে রয়েছে। আমাদের পরিবারের বেশ কয়েকজনের শিক্ষার শুরু ওই স্কুলেই। স্কুল থেকেই তো আমি লেখাপড়া শিখে চিকিৎসক হয়েছি। তাই মনে হল, সকলে মিলে এই কাজে এগিয়ে আসা দরকার। তাই পরিবারের সকলের সঙ্গে কথা বললাম।” তারপরেই পরিবারের প্রায় দশজন সদস্য মিলে শেড তৈরির ২ লক্ষ টাকা তুলে ফেলেন। তা তুলে দেন স্কুলের হাতে। স্কুলের প্রধানশিক্ষক জাকির আলি মল্লিক বলেন, “ওই টাকা হাতে পেয়েই আমরা শেড তৈরির জন্য টেন্ডার ডাকি। মাত্র ছ’মাসের মধ্যে সেটা তৈরি হয়ে গিয়েছে। এর ফলে আমাদের স্কুলের ছোটছোট ছেলেমেয়েদের অন্তত ঝড়বৃষ্টি মাথায় করে মিড-ডে মিলের থালা নিয়ে পালাতে হবে না।”
মুক্তিপ্রসাদ বাবুর বাবা চণ্ডীচরণ দে ছিলেন বর্ধমানের বাণীপীঠ স্কুলের শিক্ষক। তাঁর নামেই বড়শূল নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের ওই মঞ্চের নামকরণ করা হয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.