দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের (ডিএসপি) ক্যাপটিভ পাওয়ার প্ল্যান্টের ২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন নতুন দু’টি ইউনিট গড়ার কাজ আগামী দু’তিন বছরের মধ্যেই হয়ে যাবে বলে জানালেন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের দায়িত্বে থাকা সংস্থা ‘এনটিপিসি-সেল পাওয়ার কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড’ (এনএসপিসিএল)। সংস্থার জেনারেল ম্যানেজার তথা বিজনেস ইউনিটের প্রধান কেআরসি মূর্তি বলেন, “প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। আশা করছি, ২০১৬-১৭ আর্থিক বছরে ইউনিট দু’টি চালু করে ফেলা যাবে।”
পাঁচের দশকে ডিএসপি গড়ে ওঠে। তখন লক্ষ্যমাত্রা ছিল বছরে ১০ লক্ষ টন ক্রুড ইস্পাত প্রস্তুত করা। বর্তমানে এই কারখানায় বছরে ২.০৮৮ মিলিয়ন টন হট মেটাল, ১.৮ মিলিয়ন টন ক্রুড ইস্পাত এবং ১.৫৮৬ মিলিয়ন টন বিক্রয়যোগ্য ইস্পাত উৎপাদন হয়ে থাকে। ডিএসপি-র নিজস্ব ৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দু’টি ইউনিট ছিল। কারখানা ও কারখানার বাইরে টাউনশিপ, একাধিক স্কুল, ৬৪০ শয্যার ডিএসপি হাসপাতাল, চারটি প্রেক্ষাগৃহ, স্টেডিয়াম, পার্কে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় এই ক্যাপটিভ পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকেই। বর্তমানে ডিএসপি নিজে ক্যাপটিভ পাওয়ার প্ল্যান্টের দেখভাল করে না। সেল এবং এনটিপিসি-র যৌথ ভাবে গড়ে তোলা এনএসপিসিএল ২০০১ সালের মার্চে ডিএসপি-র ৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ইউনিট দু’টি অধিগ্রহণ করে যাত্রা শুরু করে। |
দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট। |
কারিগরি কারণে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার পরে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইউনিটগুলির কার্যকারিতা কমতে থাকে। অথচ, কারখানা ও কারখানার বাইরে বিদ্যুতের চাহিদা দিন-দিন বাড়ছে। বাড়ছে মাথাপিছু বিদ্যুৎ ব্যবহারের পরিমাণও। এখন প্রতি দিন গড়ে দুর্গাপুরের জন্যই এনএসপিসিএলের ১৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দরকার। তাই দুর্গাপুরের চাহিদা মেটাতেই বিদ্যুৎ ধার নিতে হয় সংস্থাকে। এর বাইরেও সংস্থা নাগরিক প্রয়োজনে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে থাকে দেশের অন্য কিছু এলাকাতেও। সব মিলিয়ে যত দিন যাচ্ছে, বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েই চলেছে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়ে বর্ধমান-দুর্গাপুরের সাংসদ সাইদুল হক কেন্দ্রীয় ইস্পাত মন্ত্রী বেণীপ্রসাদ বর্মার কাছে দরবার করেছিলেন। সাংসদ জানান, মন্ত্রী তাঁকে আশ্বস্ত করেছিলেন, দু’টি নতুন ইউনিট গড়ার প্রস্তাব ইতিমধ্যে অনুমোদন করেছে সেল বোর্ড। বাজেট ধরা হয়েছে প্রায় সাড়ে তিনশো কোটি টাকা। এনএসপিসিএল-এর এক আধিকারিক বলেন, “প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল ৬০ মেগাওয়াট বাড়ানোর জন্য। ৪০ মেগাওয়াটের অনুমোদন মিলেছে।” সম্প্রতি সেই কাজে হাত দিয়েছে সংস্থা। এনএসপিসিএলের জেনারেল ম্যানেজার কেআরসি মূর্তি জানান, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ শুরুর আগে কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের ছাড়পত্র নিতে হয়। সে জন্য মন্ত্রকে প্রয়োজনীয় আবেদনপত্র পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, “ছাড়পত্র চলে এলেই নির্মাণ শুরু হয়ে যাবে। ২-৩ বছরেরমধ্যে কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে বলে আশা করছি।” |