ঝাঁকুনিতেই মালুম, গোল বেধেছে ট্রেনে
বিকট আওয়াজ তুলে প্রবল বেগে ঘনঘন ঝাঁকুনিতেই বোঝা গিয়েছিল, কিছু একটা হয়েছে। তবু ট্রেন থামেনি।
দ্রুত গতিতে ছুটছিল দিল্লি থেকে হাওড়াগামী দুরন্ত এক্সপ্রেস। তত ক্ষণে ধড়ফড় করে ঘুম চোখে উঠে পড়েছেন যাত্রীরা। কামরার ভিতরে ধুলো-ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছে। রেললাইনের পাথর ছিটকে উঠে আসছে। অনেকের আবার দাবি, জানালা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে আগুনের ফুলকিও দেখেছেন। আগুন লেগে গেলো না কি, এই আশঙ্কায় ভুগতে শুরু করেছিলেন যাত্রীরা। সকলে যখন কী করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না, ট্রেনের চেন টেনে দেন এস-৫ নম্বর কামরার অ্যাটেন্ড্যান্ট নরেন সাহা। আরও প্রায় ২০০ মিটার দূরে গিয়ে থেমে যায় ট্রেন। ধাতস্থ হতে খানিকটা সময় লাগলেও স্বস্তি পেলেন যাত্রীরা।

ব্যাগপত্র নিয়ে নেমে পড়ছেন দিল্লি-হাওড়া দুরন্ত এক্সপ্রেসের যাত্রীরা।
এ দিন ঘটনাস্থলে এসে সব কিছু দেখার পরে রেলের আধিকারিকেরা জানান, ওই অবস্থায় আরও খানিকক্ষণ ট্রেনটি চললে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। নরেনবাবু সময় মতো চেন টানায় এ যাত্রায় রক্ষা পাওয়া গিয়েছে। নরেনবাবু বলেন, “এই রকম অভিজ্ঞতা এই প্রথম হল। কামরার বেশির ভাগ যাত্রী ঘুমোচ্ছিলেন। আমি অন্য কাজ করছিলাম। বরাকর নদের সেতুর উপরে ওঠার পরেই বিকট শব্দ শুরু হয়। সেতুটা সবে মাত্র পেরিয়েছে, প্রবল ঝাঁকুনি আরম্ভ হল। আমরা সবাই আতঙ্কিত হয়ে ভাবলাম, এই বুঝি লাইন থেকেই ছিটকে যাবে ট্রেন। কে কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। ট্রেনও থামছে না। বুঝলাম, চালক টের পাননি। আর দেরি করিনি, দৌড়ে গিয়ে চেন টেনে ধরি।”
যাত্রীরা জানান, ট্রেন থামার পরে নেমে দেখেন, রেললাইনের যেখানে-সেখানে ইতস্তত ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে যন্ত্রাংশ। এক যাত্রীর কথায়, “এমনিতেই আলো ফোটেনি। তার উপরে, ধুলো-ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছিল কামরার ভিতর। তাই কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। কোনও ভাবে হাতড়ে হাতড়ে দরজা খুলে নিচে নামি। ততক্ষণে অন্য যাত্রীরাও নেমে এসেছেন।” যাত্রীদের অনেকের অভিযোগ, ট্রেনটি ছাড়ার পর থেকে মাঝে মাঝেই ঝাঁকুনি দিচ্ছিল। তাই আশঙ্কা হচ্ছিল, কোথাও কিছু একটা গণ্ডগোল আছে।

রেলের কর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছলে বিক্ষোভ।
যাত্রীদের এই অভিযোগের কথা অবশ্য মানতে চাননি আসানসোলের এডিআরএম অনিলকুমার শুক্ল। তিনি বলেন, “এই ট্রেনের কামরা উন্নত মানের। ট্রেন চলার সময়ে একটা ঝাঁকুনি হবে। কিন্তু সেটা কোনও কারিগরি ত্রুটি নয়।” তবে এই ঘটনায় রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত ত্রুটি থাকতে পারে, সে কথা মেনে নিয়েছেন তিনি। এই ট্রেনের এ-১ নম্বর কামরায় ছিলেন পিয়ালী বিশ্বাস। দিল্লি থেকে ফিরছিলেন রিষড়ায় নিজের বাড়িতে। সঙ্গে ছিল তিন বছরের শিশু। এই ঘটনার পরে তিনি বলেন, “এত ভাড়া গুণে এই ট্রেনে চেপেও যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে সুরক্ষা কোথায়!”

ছবি: শৈলেন সরকার।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.