দশ দিন ধরে খাবার জুটছে না একটি সরকারি হাসপাতালের রোগীদের। যাঁদের বাড়ি থেকে খাবার আনা সম্ভব, শুধু তাঁরাই খেতে পাচ্ছেন। বাকিদের দিন কাটছে মুড়ি, বিস্কুট খেয়ে। হাসপাতালটি রাজ্যের বর্তমান সচিবালয় নবান্ন থেকে এক কিলোমিটার দূরে। নাম দক্ষিণ হাওড়া রাজ্য সাধারণ হাসপাতাল।
স্বাস্থ্য দফতরের নিয়মে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের সকালে, দুপুরে ও রাতে হাসপাতাল থেকেই খাবার দেওয়ার কথা। কিন্তু ওই হাসপাতালের রোগীদের গত ১০ দিন ধরে কোনও খাবারই দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। কারণ যে সংস্থা খাবার সরবরাহ করে, তারা কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। বিষয়টি স্বাস্থ্যকর্তাদের আগাম জানানো সত্ত্বেও তাঁরা কোনও ব্যবস্থা নেননি বলে অভিযোগ।
রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী বলেন, “রোগীদের এমন ভোগান্তি মেনে নেওয়া যায় না। কেন এমন হল, খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি।” জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, মাত্র ৩০ শয্যার ওই হাসপাতালে খাবার সরবরাহ করত একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠী। কিন্তু ২৪ জানুয়ারি তাদের পক্ষ থেকে জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, আর্থিক সমস্যার জন্য ১ ফেব্রুয়ারি থেকে তারা আর খাবার সরবরাহ করতে পারবে না। এক সপ্তাহ আগে বিষয়টি জানা সত্ত্বেও স্বাস্থ্যকর্তারা কোনও বিকল্প ব্যবস্থা করেননি। ফলে বিপাকে রোগীরা।
প্রশ্ন হল, আগে জেনেও কেন অন্য কোনও ব্যবস্থা করা হল না? হাসপাতাল সুপার উচ্চশিক্ষার জন্য ছুটিতে যাওয়ায় গত নভেম্বর থেকে দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন জেলার অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সত্যনারায়ণ চৌধুরী। তিনি বলেন, “বিষয়টি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানিয়েছিলাম। তিনিই বলতে পারবেন কেন ব্যবস্থা হয়নি।”
হাওড়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস রায় বলেন, “খবরটা দেরিতে পেয়েছিলাম। সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছি। সরকারি নিয়ম মেনে টেন্ডার ডেকে অন্য স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ব্যবস্থা করতে গিয়ে দেরি হয়েছে। বুধবার থেকেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।” হাসপাতালে ভর্তি কানাইলাল সাহা, অশোক দাস, রামচন্দ্র রুইদাসরা অবশ্য এই আশ্বাসে আস্থা রাখতে পারছেন না। তাঁদের বক্তব্য, না আঁচালে বিশ্বাস নেই! |