মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাবিত ‘কিষাণ মান্ডি’কে, অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাজ শেষ করার নির্দেশ দিলেন রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর শাখা সচিবালয় উত্তরকন্যার প্রথম অধিবেশনে যোগ দেওয়ার ফাঁকে শিলিগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজারের কার্যালয়ে ঘুরে যান তিনি। উত্তরবঙ্গের কৃষি অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে এবং কৃষকদের স্বনির্ভর করে তুলতে মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছাতেই এই মান্ডি করা হয়েছে বলে অরূপবাবু জানান। এই মান্ডি তৈরি হলে উত্তরবঙ্গের কৃষি বিপণনের চেহারাই বদলে যাবে বলে তিনি মনে করছেন। এ জন্য মোট ২৬ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
অরূপবাবু বলেন, “উত্তরবঙ্গের বিপণন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে আমরা উদ্যোগী হয়েছি। মুখ্যমন্ত্রী চান বিপণনকে কেন্দ্র করে কৃষকদের অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটাতে। সেই সঙ্গে দালাল চক্র বা ফড়ে রাজের বিলোপ ঘটাতেই এই উদ্যোগ।” কৃষক ও বিক্রেতার মাঝের মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে না পারলে এলাকার চাষিরা লাভের মুখ দেখতে পাবেন না বলে মনে করা হচ্ছে কৃষি বিপণন দফতর থেকে। সেই উদ্দেশ্য দুটি পর্যায়ে উত্তরবঙ্গে কিষাণ মণ্ডিকে ভাগ করে নেওয়া হয়েছে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে। মোট ৪২ টি মণ্ডি তৈরি করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে তৈরি হবে ১৪ টি মণ্ডি। তার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে কোচবিহারে ৩টি, দার্জিলিঙে ১টি, জলপাইগুড়িতে ২টি, উত্তর দিনাজপুরে ২টি, দক্ষিণ দিনাজপুরে ৫টি এবং মালদহে ১টি মান্ডি তৈরি করা হচ্ছে। কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। চলতি বছরের বর্ষার আগেই তা শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হলেও তা শেষ করা যাবে না বলেই মনে করছেন কৃষিমন্ত্রী। তবে খুব শীঘ্রই তা শেষ করে ফেলা যাবে বলেও জানানো হয়। শিলিগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজার কমিটির সম্পাদক সন্দীপ দাস বলেন, “দার্জিলিং জেলার মান্ডিটি তৈরি হচ্ছে শিলিগুড়ির কাছে শালবাড়িতে।”
দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ২৮টি মান্ডি তৈরি করা হবে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে। এর মধ্যে কোচবিহারে ৫টি, দার্জিলিঙে ১টি, জলপাইগুড়িতে ৯টি, উত্তর দিনাজপুরে ৪টি, দক্ষিণ দিনাজপুরে ২টি, এবং মালদহে ৭টি মান্ডি তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। প্রকল্পের প্রথম ভাগ চলতি বছরেই শেষ করে পরের ভাগের কাজ শুরু করা হবে। ‘আমার ফসল, আমার গাড়ি’ ও ‘আমার ফসল, আমার গোলা’ প্রকল্প দুটিকে সামনে রেখেই বিপণনে জোর দেওয়া হচ্ছে। অরূপবাবু বলেন, “সাধারণ নিয়ন্ত্রিত বাজারের সঙ্গে মণ্ডিগুলির পার্থক্য হল এই মণ্ডিগুলিতে তাঁদের বিপণি বসানো ও বিক্রির জন্য সরকারকে কোনও লেভি দিতে হবে না। সরাসরি তাঁরা নিজেদের উৎপাদন খরচের উপরে লাভ রেখে পাইকারি ব্যবসায়ীদের বিক্রি করতে পারবেন। সেই সঙ্গে সরকারি খাদ্য নিগমকেও তাঁদের কাছ থেকে সরাসরি শস্য কিনতে হবে। রাজ্য সরকার শুধু মাত্র খাদ্য নিগমের ক্রয়ের উপরে কর আদায় করবে। এতে বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণ থাকবে। |