১৮৮৬ সালের ১৫ অগস্ট গভীর রাতে মৃত্যু হয়েছিল শ্রীরামকৃষ্ণের। পর দিন কাশীপুর শ্মশানে দাহ করা হয়েছিল তাঁকে। সে সময়ে কে স্বাক্ষর করেছিলেন শ্মশানের রেকর্ড বুকে? কোন চিকিৎসকই বা দিয়েছিলেন তাঁর ডেথ সার্টিফিকেট? আজ বুধবার সে সব তথ্য রেকর্ড করা হবে কলকাতা পুরসভার ডেটা এন্ট্রি সিস্টেমে। শুধু শ্রীরামকৃষ্ণই নন, ওই তালিকায় রয়েছেন উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, স্বাধীনতা সংগ্রামী বিনয় বসু, বাদল গুপ্ত, বাংলার বাঘ আশুতোষ মুখোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জীবনানন্দ দাস, আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়-সহ আরও অনেকে।
পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের হেফাজতে থাকা একশো বছরেরও বেশি পুরনো ওই সব রেকর্ড প্রায় নষ্ট হতে বসেছিল। মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ বলেন, “ওগুলো শুধু সার্টিফিকেটই নয়, ঐতিহাসিক দলিলও। কোনও ভাবে যেন নষ্ট না হয় তা দেখতে হবে। সংরক্ষণের পাশাপাশি তা কম্পিউটরে রেকর্ড করে রাখাটাও জরুরি। বুধবার থেকে ওই কাজ শুরু হচ্ছে।” তিনি জানান, কাশীপুর শ্মশানের রেজিস্টার থেকে জানা গিয়েছে, শ্রীরামকৃষ্ণের দেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার পরে তা দাহ করার জন্য রেজিস্টারে স্বাক্ষর করেছিলেন শ্রীম (মহেন্দ্র গুপ্ত)। ওই রেকর্ড থেকেই জানা গিয়েছে, ডেথ সার্টিফিকেট দিয়েছিলেন চিকিৎসক মহেন্দ্রলাল সরকার।
পুর সূত্রের খবর, দাহ করার সময়ে শ্মশানের রেজিস্টারে নথিভুক্ত বিশিষ্ট জনেদের সব তথ্যই রেকর্ড করা হচ্ছে। যাতে তাঁদের নিয়ে গবেষণার সময়ে সেগুলি কাজে আসে। পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের ওই বিভাগের অফিসার দেবাশিস সেন জানান, ২০০৩ থেকে পুরসভার জন্ম ও মৃত্যু সার্টিফিকেট কম্পিউটরে রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগে সে ব্যবস্থা ছিল না। ১০০ বছরের পুরনো রেকর্ডের হাল আরও খারাপ। সম্প্রতি ব্রিটেনের সাংবাদিক মার্ক টুলি (যিনি কলকাতায় জন্মেছেন) জন্মনথির জন্য পুর-প্রশাসনের কাছে আবেদন জানান। প্রায় ৬৫ বছর আগের রেকর্ড থেকে তা বার করে তাঁকে দেওয়া হয়।
পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের এক পদস্থ আধিকারিক জানান, পুরনো রেকর্ড ঘেঁটে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। আগামী কয়েক দিন ধরে ওই কাজ চলবে। প্রথম দিন প্রায় ৫০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির মৃত্যু-নথি কম্পিউটরে রেকর্ড করা হবে। |