অটো নিয়ে আদালতের নির্দেশ পালনের জন্য রাজ্যকে আরও চার সপ্তাহ সময় দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এই নির্দেশে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র। সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, অটোর বিরুদ্ধে প্রশাসনের নজরদারি-অভিযান চলবে।
প্রায় এক বছর আগে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ অটোয় মিটার বসানোর নির্দেশ দেয়। বলেছিল, কাটা রুট ও বেআইনি অটো বন্ধের কথাও। কিন্তু রাজ্য তা পালন করেনি। অটোয় মিটার বসেনি। চলছে কাটা রুট, বেআইনি অটো। বেড়েছে চালকদের অসভ্যতাও। এর প্রেক্ষিতেই রমাপ্রসাদ সরকার নামে এক আইনজীবী রাজ্যের মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র ও পরিবহণ সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করেন।
মঙ্গলবার তার শুনানি হয়। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, ২০০৩ ও ২০০৫-এ তারা অটোয় মিটার বসানোর পরিকল্পনা করেছিল। সেই আবেদন দু’টি তারা জমা দিতে চায়। বলা হয়, সরকার হাইকোর্টের নির্দেশ পালন করার জন্য ইতিমধ্যেই বেশ কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। তাদের আশা, আর কিছু দিন সময় পেলে হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী অটো বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যকে নির্দেশ পালন করার জন্য চার সপ্তাহ সময় দেয়। পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র এ দিন বলেন, “আদালতের রায় অবমাননা করার প্রশ্নই ওঠে না। তবে আমাদেরও কিছু অসুবিধে রয়েছে। কোর্ট আরও সময় দেওয়ায় আমরা খুশি।”
তবে অটোর লাগামহীন দৌরাত্ম্যের বিরুদ্ধে পুলিশ ও প্রশাসনের অভিযান যে জারি থাকবে, তা এ দিন আরও এক বার স্পষ্ট করে দিয়েছেন মন্ত্রী। এ দিনই তিনি অটো নিয়ে পরিবহণ সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কলকাতা পুলিশের বিশেষ কমিশনার (দুই) সোমেন মিত্রের রিপোর্ট সরকারি ভাবে গ্রহণ করেন। মন্ত্রী জানিয়েছেন, আগামী ৩০ জুনের মধ্যে কলকাতার সব অটোকে ‘হাই সিকিউরিটি রেজিস্ট্রেশন প্লেট’ বা নম্বর প্লেট লাগিয়ে নিতে হবে। এ ছাড়া, সমস্ত অটোচালককে ‘নেভি ব্লু’ রঙের ইউনিফর্ম পরতে হবে। ওই ইউনিফর্মের ডান দিকের পকেটে চালকের নাম এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স নম্বর লিখে রাখতে হবে। চালকের সিটের পিছনে লিখে রাখতে হবে সরকারি হেল্পলাইন নম্বর। লাইসেন্স ছাড়াও অটোচালকদের সঙ্গে রাখতে হবে রুট অনুযায়ী পারমিট, ট্যাক্স টোকেন, রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, সার্টিফিকেট অব ফিটনেস। তবে নম্বর প্লেট ছাড়া বাকি বিষয়গুলির সময়সীমা এখনও নির্দিষ্ট করেনি সরকার। মন্ত্রী বলেন, “যত দ্রুত সম্ভব এই সব নির্দেশ পালন করতে হবে।” এ ছাড়াও মন্ত্রী জানান, কলকাতার প্রতিটি নোটিফায়েড রুটের জন্য স্ট্যান্ড নির্দিষ্ট করে দেবে সরকার। তিনি বলেন, “সরকারই অটো স্ট্যান্ড চিহ্নিত করবে।”
অটো নিয়ে প্রশাসনের অভিযানের পরেও অবশ্য অটোচালকের দুর্ব্যবহারের ঘটনা ঘটছেই। মন্ত্রীর বক্তব্য, “অভিযোগ পেলেই আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।” অটো সংক্রান্ত রিপোর্টে ভাড়া নিয়ে কিছু উল্লেখ করা হয়নি। এ নিয়ে মন্ত্রী কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে পরিহণ-কর্তাদের বক্তব্য, “যেহেতু বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন, তাই তা নিয়ে রিপোর্টে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।” |
