মানসিক ভারসাম্যহীনাকে মেরে
শ্লীলতাহানির অভিযোগ মহিলার
মানসিক ভারসাম্যহীন এক মহিলাকে মারধর করার অভিযোগে এক ব্যবসায়ীর স্ত্রীকে মারধর করেছিল জনতা। এই ঘটনায় ওই ব্যবসায়ীর স্ত্রী স্থানীয় কাউন্সিলার-সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে তাঁকে মারধর, শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্তদের মধ্যে ৫ জন মহিলাও রয়েছেন। সোমবার দুপুরে বসিরহাট থানার নতুন বাজারের সামনে ইটিন্ডা রোডে এই ঘটনা ঘটেছে। মারের চোটে নাকমুখ ফেটে যাওয়ায় বেবি চক্রবর্তী নামে মানসিক ভারসাম্যহীন ওই মহিলাকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। থানায় ওই ব্যবসায়ীর স্ত্রীর দায়ের করা অভিযোগ নিয়ে মঙ্গলবার স্থানীয় মানুষ বসিরহাট টাউন হলের কাছে ইটিন্ডা রোডে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের বক্তব্য, নিরীহ মানসিক ভারসাম্যহীন একটি মেয়েকে ও ভাবে মারধর করায় তাঁরা প্রতিবাদ করলে উল্টে ওই মহিলা তাঁদের হুমকি দেন। জনতার মারের বদলা নিতেই মহিলা শ্লীলতাহানি, ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছেন। বসিরহাট থানার আইসি প্রসেনজিত্‌ দাস বলেন, “দু’পক্ষই অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের চেষ্টার দু’টি মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে দিনের বেলায় প্রকাশ্যে শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের চেষ্টার যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, নতুন বাজারের পাশে ওই ব্যবসায়ীর বাড়ি। তিনি টেলারিংয়ের ব্যবসা করেন। সোমবার দুপুরে পুরসভায় যাবেন বলে তাঁর স্ত্রী বাড়ি থেকে বের হন। অভিযোগ, ইটিন্ডা রোড দিয়ে যাওয়ার সময় মানসিক ভারসাম্যহীন বেবি তাঁকে গালিগালাজ করেন। স্থানীয় মানুষের বক্তব্য, পথ চলতি সবাইকেই বেরি গালিগালাজ করে। তাই তা নিয়ে কেউই মাথা ঘামান না। কিন্তু এদিন ওই মহিলা হঠাত্‌ পায়ের চটি খুলে তা দিয়ে ও ইট দিয়ে বেবিকে মারতে থাকেন। মারের চোটে তাঁর নাক-মুখ ফেটে যায়। একজন অসহায় মহিলাকে এ ভাবে মারতে দেখে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে ওই মহিলাকে বারণ করেন। কিন্তু তিনি পাল্টা হুমকি দেওয়ায় জনতা তাঁকে মারধর শুরু করে বলে অভিযোগ। এর পরেই তিনি থানায় গিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলার চন্দ্রিমা চক্রবর্তী-সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মারধর, শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ করেন। স্থানীয় লোকজনের দাবি, কিছুদিন আগেও ওই মহিলা প্রতিবেশীদের সঙ্গে গণ্ডগোলের জেরে তাঁদের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেছিলেন। ফলে পাড়ায় ওই পরিবারের সঙ্গে কারও সুসম্পর্ক নেই। তাঁদের আরও অভিযোগ, এলাকায় সকলেই জানে বেবি মানসিক ভারসাম্যহীন। তারপরেও ওকে মারধরের প্রতিবাদ করায় ওই মহিলা শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের চেষ্টার মিথ্যা অভিযোগ করলেন। প্রতিবাদ করলেই কি শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের চেষ্টার মতো গুরুতর অভিযোগ করা হবে? তাঁদের দাবি, ওই মহিলার মিথ্যা অভিযোগের জন্য তাঁকে ও তাঁর স্বামীকে গ্রেফতার করতে হবে। ওই ব্যবসায়ীর বক্তব্য, “স্ত্রী একজন মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলাকে মেরেছে এ কথা ঠিক। তাই বলে তাঁকেও মারধর করতে হবে? অন্যায় হয়ে থাকলে পুলিশ ডেকে ধরিয়ে দিলেই তো হত।” মহিলার বক্তব্য, “কয়েক মাস আগেও বাড়িতে হামলা চালিয়ে কয়েকজন আমার ও মেয়ের শ্লীলতাহানি করেছিল। এবারও তাদের কয়েকজনের উস্কানিতে আমাকে মারধর, শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়। অভিযুক্তদের শাস্তি না হলে যত দূর যেতে হয় যাব।” বসিরহাটের প্রাক্তন সিপিআই সাংসদ অজয় চক্রবর্তীর স্ত্রী ও কাউন্সিলার চন্দ্রিমাদেবী বলেন, “ওই মহিলার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। একজন অসুস্থ মানুুষকে মারার ফলে তার মুখ দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছে দেখে জনতা রেগে যায়। তবে এই ঘটনার সঙ্গে আমি কিংবা আমার পরিবারের কেউই জড়িত নই। তা ছাড়া একজন মহিলার বিরুদ্ধে আর একজন মহিলাকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ কী বিশ্বাসযোগ্য? সামনেই লোকসভা নির্বাচন। কারও প্ররোচনাতেই আমাদের বিরুদ্ধে এমন চক্রান্ত করা হয়েছে।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.