|
|
|
|
স্কুলছুটদের ফেরাতে শিবির |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
স্কুলে যাও না কেন? প্রশ্নকর্তার মুখের দিকে কিছুক্ষণ অপলক চেয়ে স্কুলছুট ছেলেটির পাল্টা প্রশ্ন, “স্কুলে গেলে ঘরের গরুগুলো চরাবে কে? বাবা-মা তো দিনমজুরির কাজে ভোরের আলো ফোটার আগেই বেরিয়ে যান।” আবার এক স্কুলপড়ুয়া স্কুলে এসে সারাদিন বেঞ্চির এক কোণে চুপ করে বসে থাকে। পড়াশুনায় তার মন নেই। ওই পড়ুয়ার সমস্যা অন্য। অভিভাবকদের প্রত্যাশা তাঁদের সন্তান আরও ভাল ফল করবে। কিন্তু কিশোরটি চাপের সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে না। পিছিয়ে পড়ছে।
|
|
সেবায়তন স্কুলে শিবির। ছবি: দেবরাজ ঘোষ। |
এমন কয়েক জন স্কুলছুট ও সমস্যয় থাকা পড়ুয়াদের আলোর দিশা দেখানোর চেষ্টা করলেন ‘মনের বন্ধু’রা। জঙ্গলমহলের প্রত্যন্ত এলাকার স্কুলছুট পড়ুয়াদের স্কুলমুখী করতে মঙ্গলবার সেবায়তন উচ্চমাধ্যমিক বালক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ‘পাঠ অভিমুখীকরণ এবং স্কুলছুট ও তাদের অভিভাবকদের কাউন্সেলিং শিবির’ হয়।
উদ্যোগটা সেবায়তন উচ্চমাধ্যমিক বালক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং ‘প্যারেন্ট টিচার স্টুডেন্ট ইউনাইটেড ফোরাম’ নামে একটি সংগঠনের। এ দিন ওই স্কুলেরই ৩৭ জন স্কুলছুট ও ৪৫ জন প্রবলেম স্টুডেন্টদের কাউন্সেলিং করা হয়। অভিভাবকদের সঙ্গেও কথা বলেন ‘মনের বন্ধু’রা। এ দিন সেবায়তনের ওই স্কুলে এক মনোবিদ-সহ চারজন কাউন্সিলিং করেন।
প্যারেন্ট টিচার স্টুডেন্ট ইউনাইটেড ফোরামের আহ্বায়ক উষারঞ্জন মাইতি বলেন, “জঙ্গলমহলের স্কুলছুটের হার কমাতে আমরা অন্যান্য স্কুলগুলির সঙ্গেও একযোগে এই কাজ করার প্রয়াস চালাব। অভিজ্ঞ মনোবিদ, সোস্যাল কাউন্সিলর ও শিক্ষাবিদদের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।” সেবায়তন বালক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রঞ্জিতকুমার ঘোষ বলেন, “২০১২ শিক্ষাবর্ষে আমাদের স্কুলছুট ছিল ১৮ জন। ২০১৩ শিক্ষাবর্ষে স্কুলছুটের হার বেড়ে হয় ২৪ জন। স্কুলছুটের সংখ্যা কমাতে আমরা সরাসরি কাউন্সেলিংয়ের উদ্যোগ নিয়েছি।” রঞ্জিতবাবু জানান, চলতি মাসের ১ থেকে ৮ ফেব্রুয়ারি এলাকার বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে স্কুলছুট ও তাদের অভিভাবকদের বোঝানো হয়। মঙ্গলবার কাউন্সিলিংয়ের পরে ৩৭ জন স্কুলছুট ছাত্রকে স্কুলমুখী করা গিয়েছে। এদিন পাঠ অভিমুখীকরণ সম্পর্কে এক আলোচনাসভাও হয় স্কুলে। |
|
|
|
|
|