তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষ, গড়বেতায় জখম ৮ জন
গোষ্ঠী সংঘর্ষে দাঁড়ি পড়ছে না। এ বার তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ উত্তেজনা ছড়িয়েছে গড়বেতার গরঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। জখম হয়েছেন দু’পক্ষের অন্তত ৮ জন। এঁদের মধ্যে ৬ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, গড়বেতার ওই এলাকায় একটা গোলমাল হয়েছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।
বাম-আমলে পশ্চিম মেদিনীপুরের যে দু’টি এলাকায় তৃণমূল সব থেকে বেশি কোণঠাসা ছিল, রাজ্যে পালাবদলের পর থেকে সেই গড়বেতা আর কেশপুরে ঘনঘন গোষ্ঠী সংঘর্ষে জড়িয়েছে তারা। এতে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব উদ্বিগ্ন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের এক নেতা মানছেন, “এর ফলে সাধারণ মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাচ্ছে।”
আহতেরা মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি।—নিজস্ব চিত্র।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার বিকেলের পর গরঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের কাঁকড়াশোলে আচমকাই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী। সংঘর্ষ বাধে দলের বর্তমান ব্লক সভাপতি দিলীপ পালের অনুগামীদের সঙ্গে প্রাক্তন ব্লক সভাপতি তথা গরঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুভাষ মাঝির অনুগামীদের। গড়বেতার এই দুই নেতার মতবিরোধ দীর্ঘদিনের। বিভিন্ন সময় তা প্রকাশ্যেও এসেছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, গরঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকায় তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর (সুভাষ অনুগামী) প্রভাব বেশি। সোমার এলাকায় তৃণমূলের সভা ছিল। সভা ডেকেছিল ক্ষমতাসীন দিলীপ গোষ্ঠী। সভায় তেমন লোকজন হয়নি। অভিযোগ, এরপরই ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর লোকেরা বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর লোকেদের উপর হামলা করে। মারধর ছাড়াও বাড়িতে ঢুকে আসবাব ভাঙচুর করা হয়। সংঘর্ষে জখম হন দু’পক্ষের অন্তত ৮ জন। ৬ জনকে শুরুতে গড়বেতা গ্রামীণ হাসপাতাল, পরে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। জখমদের মধ্যে রয়েছেন রাজকুমার ভক্তা, জয়ন্ত মানা, জগন্নাথ ঘড়া, আশিস দাস।
মঙ্গলবার হাসপাতালের শয্যায় বসে রাজকুমার বলেন, “আচমকাই আমাদের উপর হামলা হয়। এক সময় যারা সিপিএম করত, এখন তৃণমূল করে, তারাই হামলা করেছে।” তাঁর কথায়, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূল করছি। সেই ’৯৮ সাল থেকে। গড়বেতায় তৃণমূল করার জন্য তপন ঘোষের (সিপিএম নেতা) লোকেদের হাতে মারও খেয়েছি। এখন নব্য তৃণমূলীদের হাতে আক্রান্ত হচ্ছি।” রাজকুমারের মাথায় আঘাত রয়েছে। তৃণমূলের প্রাক্তন গড়বেতা ব্লক সভাপতি তথা গরঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুভাষ মাঝির তোপ, “পরিকল্পনা করেই হামলা চালানো হয়েছে।” তাঁর অভিযোগ, “দিলীপ পাল প্রত্যেক বুথে এক-দু’জন করে গুন্ডা পুষেছে! তারাই হামলা করেছে।” অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের গড়বেতা ব্লক সভাপতি দিলীপ পাল। তিনি বলেন, “মিথ্যে অভিযোগ। ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।”
গড়বেতা দীর্ঘদিন ধরে সিপিএমের ‘দুর্গ’ বলে পরিচিত ছিল। ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটে পরিবর্তনের প্রবল ঝড়ের মধ্যেও গড়বেতা কেন্দ্র থেকে জেতেন সিপিএম প্রার্থী প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষ। রাজ্যে পালাবদলের পর পর অবশ্য পরিস্থিতি পাল্টায়। এলাকায় তৃণমূলের প্রাধান্য বাড়ে। পাল্লা দিয়ে বাড়ে তৃণমূলের আভ্যন্তরীণ কোন্দল। সোমবারের ঘটনায় স্পষ্ট সেই কোন্দলে রাশ টানা যায়নি।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.