দোকান বন্ধ করে ফেরার পথে বাড়ির অদূরেই গুলিতে খুন হলেন ব্যান্ডেল স্টেশন এলাকার এক পানীয় জল বিক্রেতা। সোমবার রাতের ঘটনা। নিহতের নাম শশী শাহ (৩৪)। বাড়ি ব্যান্ডেলের কুলিপাড়ায়। তবে, কে বা কারা তাঁকে খুন করল তা নিয়ে পুলিশ ও পরিবারের লোকজন ধন্দে। হুগলির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তথাগত বসু জানিয়েছেন, পুরনো শত্রুতার জেরে ওই যুবককে খুন করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। দেহটি ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। খুনের মামলা করে তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চার জন আটক হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যান্ডেল স্টেশন এলাকায় শশীর বোতলবন্দি পানীয় জলের দোকান রয়েছে। প্রতিদিনের মতো সোমবারও রাত ১১টা নাগাদ দোকান বন্ধ করে তিনি হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ির অদূরে কুলিপাড়া মোড়ের কাছে পৌঁছতেই তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পিছন থেকে তাঁকে গুলি করা হয়। তাঁর পিঠে গুলি লাগে। তবে, কে বা কারা তাঁকে গুলি করল তা বুঝতে পারেননি শশী। গুলির শব্দে স্থানীয় বাসিন্দারা চলে এসে ওই যুবককে কাতরাতে দেখে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিত্সকেরা শশীকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে তদন্তে আসে।
দুই ছেলেমেয়ে এবং স্ত্রীকে নিয়ে সংসার ছিল শশীর। পরোপকারী মানুষ হিসেবে পরিচিত ওই যুবকের খুনের ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। শশীর যে কোনও শত্রু থাকতে পারে তা ভাতেই পারছেন না পড়শিরা। নিহতের দাদা দীপক ওই এলাকাতেই থাকেন। তিনি থানায় একটি খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি বলেন, “ভাই অন্যের দুঃখকষ্ট সহ্য করতে পারত না। পরোপকারী ছিল। ওর যে শত্রু থাকতে পারে ভাবতে পারছি না। তা হলে সতর্ক করে দিতাম। প্রাণটা বেঘোরে যেত না।” দীপকের পড়শি রাজু সিংহের কথায়, “ওর পরিবার অথৈ জলে পড়ে গেল। ভাবতেই পারছি না শশীকে কেউ খুন করতে পারে। দোষীদের ধরে পুলিশ আইনমাফিক উপযুক্ত শাস্তি দিক।” দিন কয়েক আগেই ব্যান্ডেলে দোকান বন্ধ করে ফেরার পথে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হয়েছিলেন মগরার ছোট খেজুরিয়ার এক চাল ব্যবসায়ী। তার আগে ব্যান্ডেল স্টেশন ও সংলগ্ন এলাকায় চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি এমনকী খুনের ঘটনাও ঘটেছিল। সাধারণ মানুষ পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নও তুলেছিলেন। সোমবার রাতের অন্ধকারে ফের যুবক খুনের ঘটনায় ওই এলাকার সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ী মহলে। ব্যান্ডেল স্টেশন হকার্স ইউনিয়নের সদস্য প্রমোদ অগ্রবালের কথায়, “এলাকায় দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য যে ভাবে বাড়ছে, তাতে আমরা সব সময়ে আতঙ্কে থাকি। প্রাণটা যে কোনও সময়ে বেঘোরে চলে যেতে পারে।” |