মানসিক ভারসাম্যহীন এক তরুণীকে ধর্ষণ করে ছাদ থেকে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল ডানকুনিতে। দুই নাবালক-সহ গ্রেফতার করা হয়েছে ৪ জনকে।
ওই তরুণীর বাড়ি পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে। গত ৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় মেয়েটি একাই বাড়িতে ছিল। অভিযোগ, সে সময়ে পড়শি চার জন হাজির হয়। পাশেই এক আত্মীয়ের সদ্য তৈরি হওয়া বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায় মেয়েটিকে। তাঁর মায়ের অভিযোগ, “ঘটনার কথা কাউকে না জানানোর জন্য মেয়েকে ওরা শাসিয়েছিল। মেরে ফেলারও হুমকি দেয়। কিছু ক্ষণ বাথরুমে আটকে রাখে।” ধর্ষণের পরে মেয়েটিকে একতলার ছাদ থেকে ঠেলে ফেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তবে বিশেষ আঘাত পাননি তিনি। মায়ের অভিযোগ, পড়শি এক কিশোর ধর্ষণ করে। বাকিরা বাইরে পাহারায় ছিল। |
আদালতের পথে ধৃত দুই নাবালক-সহ চার জন।—নিজস্ব চিত্র। |
পরিবারের দাবি, আতঙ্কিত ওই তরুণী কয়েক দিন ঘটনা চেপে থাকলেও সোমবার মাকে সব বলেন। থানায় চার জনের নামে অভিযোগ দায়ের হয়। তার ভিত্তিতেই ধরা পড়ে চার জন। ডানকুনি থানার ওসি পার্থসারথি পাল রাতেই অভিযুক্ত চার জনকে স্থানীয় এলাকা থেকে গ্রেফতার করেন। মঙ্গলবার তাদের শ্রীরামপুর আদালতের এসিজেএম রতনকুমার দাসের তোলা হয়। নাবালক দু’জনকে জুভেনাইল আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। অন্য দু’জনকে ৫ দিন পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়।
ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন সিপিএমের মহিলা শাখার তরফে পুলিশের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। সংগঠনের নেত্রী তথা সিপিএমের চণ্ডীতলা জোনাল কমিটির সদস্য শিবানী চক্রবর্তী বলেন, “রাজ্যে একের পর এক মহিলাদের উপর অত্যাচারের ঘটনা ঘটছে। আমরা স্তম্ভিত। পরিবারটির জন্য উপযুক্ত নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করুক পুলিশ-প্রশাসন।” জেলার পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী বলেন, “ওই তরুণীকে ছাদ থেকে ফেলা হয়েছিল কিনা, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে তরুণীর গোপন জবানবন্দির জন্য পুলিশের তরফে আবেদন জানানো হয়েছে।”
বছর চব্বিশের মেয়েটি উচ্চতা মেরেকেটে সাড়ে তিন ফুট। মানসিক ভাবেও সুস্থ নন তিনি। তাঁর বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, ঘটনার কথা যাতে পাঁচকান না হয়, সে জন্য স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর জয়নাল মল্লিক তাঁদের ডেকে পাঠিয়ে বিষয়টি কাউকে জানাতে নিষেধ করেন। অভিযুক্তদের সঙ্গে কথাও বলেন। জয়নাল অবশ্য অভিযোগ মানেননি। জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সুবীর মুখোপাধ্যায় বলেন, “দলের কাউন্সিলের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকলে, দলীয় স্তরে তা খোঁজ নেওয়া হবে।” তরুণীর মায়ের অভিযোগ, “জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আমাদের সঙ্গে বিবাদ চলছিল আত্মীয়দের। বিচার চাইতে আমরা আদালতে যাই। আদালত থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। সেই আক্রোশেই মেয়েটার এমন সর্বনাশ করল। ছাদ থেকে ফেলে মেয়েটাকে মারতে পর্যন্ত চেয়েছিল।” |