|
|
|
|
মোদীর শর্ত মেনে গুজরাতে গিয়ে বৈঠকে বসছেন পাওয়েল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি
১১ ফেব্রুয়ারি |
এ যেন পাহাড়ই এল মহম্মদের কাছে। নরেন্দ্র মোদী ও মার্কিন রাষ্ট্রদূত ন্যান্সি পাওয়েলের সম্ভাব্য বৈঠকটির নেপথ্য কাহিনি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে এই মন্তব্যই করলেন বিজেপি নেতা অরুণ জেটলি।
বিজেপি সূত্রের মতে, মার্কিন রাষ্ট্রদূত অনেক দিন আগেই মোদীর সঙ্গে দেখা করতে রাজি হয়েছিলেন। কিন্তু আমেরিকা চাইছিল, মোদী দিল্লিতে এসে বৈঠকে বসুন। কিন্তু মোদী জানিয়ে দিয়েছিলেন, দীর্ঘ ন’বছর পর বরফ গলার বার্তা যদি দিতেই হয়, তা হলে গুজরাতে গিয়েই বৈঠকটি করতে হবে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে, তিনি দিল্লি যাবেন না। শেষ পর্যন্ত মোদীর শর্ত মেনে গাঁধীনগরে গিয়ে বৈঠকে রাজি হয়েছেন ন্যান্সি। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, এ মাসের ১৩ তারিখে এই বৈঠক হতে পারে।
মোদী প্রসঙ্গে বরফ গলানোর চেষ্টা তলে তলে অনেক দিন ধরেই চলছিল। মোদীর সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতের বিষয়ে মার্কিন বিদেশ দফতরের খুব একটা আপত্তি ছিল না। কিন্তু মার্কিন কংগ্রেসের একটা বড় অংশের বিরোধিতা তারা উড়িয়ে দিতে পারেনি। বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় ধীরে ধীরে মার্কিন কংগ্রেসের আপত্তি কমানোর চেষ্টা করেছে সে দেশের বিদেশ দফতর। এখনও যে আপত্তি পুরোপুরি মিটেছে তা নয়। এই অবস্থায় এই বৈঠক কয়েক মাস আগেই হতে পারত। কিন্তু মাঝে দেবযানী খোবরাগাড়ের বিতর্ক সামনে এসে পড়ায় বৈঠক পিছিয়ে যায়।
মার্কিন বিদেশ দফতরের মুখপাত্র আজ আনুষ্ঠানিক ভাবে মোদী-পাওয়েলের বৈঠকের বিষয়টি জানিয়ে বলেন, নভেম্বর মাস থেকেই ভারত-মার্কিন সম্পর্ক সূদৃঢ় করার ক্ষেত্রে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। ভারতের বিভিন্ন শীর্ষ রাজনীতিক ও শিল্পপতির সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। মোদীর সঙ্গে বৈঠক তারই অঙ্গ। মোদীকে কি এ বার মার্কিন ভিসা দেওয়া হবে? এই প্রশ্নের জবাবে অবশ্য মার্কিন বিদেশ দফতরের মুখপাত্র বলেন, “আমাদের ভিসা নীতির বদল হয়নি। কেউ ভিসার আবেদন করলে মার্কিন আইন ও নীতি অনুসারে তা খতিয়ে দেখা হয়। ফলাফল আগে আঁচ করা সম্ভব নয়।”
তবে বিজেপি নেতাদের ধারণা, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এই বৈঠকের পরে দু’পক্ষের সম্পর্কের উন্নতি ঘটলে মোদীর ভিসা পাওয়ার ব্যাপারে আর বাধা থাকবে না। তবে ঘনিষ্ঠ মহলে মোদী জানিয়েছেন, এর মধ্যে তিনি আমেরিকার ভিসার জন্য আবেদনও করেননি। বিজেপি সূত্রের খবর, মোদী-পাওয়েল বৈঠকে ভিসা-প্রসঙ্গ নিয়ে কোনও আলোচনা হবে না। তাঁর শর্ত মেনে যে ভাবে আমেরিকার রাষ্ট্রদূতকে গুজরাতে গিয়ে বৈঠক করতে হচ্ছে, ভোটের আগে সেটিকেই প্রচারে আনতে চাইছেন মোদী। বিজেপি নেতৃত্বের কথায়, মোদী যে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন, গোটা দেশে সেই ধারণা তৈরি হয়ে গিয়েছে। সে জন্যই আমেরিকাকে এখন নরম হতে হচ্ছে। বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, “আদালত ক্লিনচিট দেওয়ার পরেও কংগ্রেস নেতারা মোদী সম্পর্কে অপপ্রচার করে যাচ্ছেন। আমেরিকাই বলুক, কেন তারা মনোভাব বদলাল।”
সাম্প্রদায়িকতা-বিরোধিতা যুক্তি তুলে এককাট্টা হওয়ার চেষ্টা করা অকংগ্রেসি দলগুলি অবশ্য মোদী-পাওয়েলের বৈঠক নিয়ে উৎসাহ দেখাচ্ছে না। তৃতীয় মোর্চার ঘটকালিতে ব্যস্ত সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, “আমেরিকা একটি সার্বভৌম দেশ। সে দেশের সরকার তাদের নীতি অনুযায়ী কী পদক্ষেপ করবে, সেটা তারাই বলতে পারবে।” মার্কিন দূতাবাসের কাছ থেকে অনুরোধ পেয়ে মোদী-পাওয়েল বৈঠকের আয়োজনে সাহায্য করছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ অবশ্য বলছেন, “মোদী কোনও ভাবেই ভারতের মুখ হতে পারেন না।” |
|
|
|
|
|