|
|
|
|
বোঝা নিয়েই আজ অন্তর্বর্তী বাজেট রেলের |
অনমিত্র সেনগুপ্ত • নয়াদিল্লি
অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় • কলকাতা ১১ ফেব্রুয়ারি |
তৃণমূলের হাতে থাক বা কংগ্রেস, লাভের মুখ আর দেখা হল না রেলের।
তৃণমূল ইউপিএ জোট ছাড়ার পরে তাদের হাত থেকে কংগ্রেসের হাতে রেলের ভার এসেছে প্রায় দেড় বছর হতে চলল। ইতিমধ্যে একাধিক বার ভাড়া বেড়েছে। কিন্তু কোষাগারের হাল ফেরেনি রেলের ব্যর্থ রেল মন্ত্রক। কাল অন্তর্বর্তী রেল বাজেটের আগে তৈরি রেলের লাভ-লোকসানের খতিয়ান বলছে, এ বারও পণ্য পরিবহণের লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারেনি রেল। ওই খাতে আয় কমেছে প্রায় হাজার কোটি টাকা। দফায় দফায় টিকিটের দাম বাড়ানো সত্ত্বেও যাত্রী পরিবহণে আয় কমেছে প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া অন্যান্য খাত মিলিয়ে সার্বিক ক্ষতির পরিমাণ আট-নয় হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি। পাঁচ বছর আগে অর্ন্তবর্তী বাজেটে লালু প্রসাদ দাবি করেছিলেন তিনি রেলের কোষাগারে উদ্বৃত্ত ৯০ হাজার কোটি টাকা রেখে যাচ্ছেন। ফলে সেই বাজেটে দেশবাসীকে সওগাত বিলি করেছিলেন লালু প্রসাদ। আর এ বারের মন্ত্রী মল্লিকার্জ্জুন খার্গের বড়ই করুণ দশা। নিজের রাজ্য কর্নাটকের জন্য একটি রেল কারখানা আপাতত তাঁর ঝুলিতে এসেছে। এ ছাড়া গুলবর্গায় রেলের নতুন ডিভিশন বানানোর প্রস্তাব চূড়ান্ত ছাড়পত্র পায় কি না, সেটাই এখন দেখার।
রেল মন্ত্রক কংগ্রেসের হাতে আসার পরেই ভাড়া বাড়ানোর মতো কঠিন কিন্তু বাস্তবমুখী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী পবন বনশল। ঠিক হয়েছিল বাজারে ডিজেলের দাম বাড়লে পণ্য মাসুল ও যাত্রী ভাড়াও বাড়ানো হবে। সে উদ্দেশ্যে টিকিটে ‘ফুয়েল অ্যাডজাস্টমেন্ট কমপোনেন্ট’ (এফএসি) জোড়ার কথাও ভেবেছিল রেল মন্ত্রক। এখন ভোটের আগে সেই অপ্রিয় সিদ্ধান্ত খার্গের পক্ষে নেওয়া কঠিন বলেই মনে করছে রেল মন্ত্রক। তবে দেশের প্রধান ২০টি ট্রেনে ‘ডায়নামিক’ ভাড়া চালুর পরিকল্পনা নিয়েছে রেল। অর্থাৎ ছুটি ও উৎসবের মরসুমে ওই ট্রেনগুলির ভাড়া বেশি রাখা হবে। আবার কম চাহিদার সময়ে ভাড়া অন্য ট্রেনের সমতুল হবে।
খার্গের স্বল্প সময়কালে যে ভাবে একাধিক ট্রেনে অগ্নিকাণ্ড সামনে এসেছে, তাতে নিরাপত্তাজনিত খাতে অর্থ বরাদ্দের জন্য সরকারের কাছে দরবার করেছে মন্ত্রক। রেলকর্তাদের দাবি, এ বিষয়ে আশ্বাস মিলেছে। কিন্তু ওই খাতে টাকা বরাদ্দের দায়িত্ব সম্ভবত নতুন সরকারের ঘাড়ে এসে পড়বে।
চলতি বাজেটে গোটা দেশে ৩০-৩৫টির মতো নতুন ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ডজন খানেক ট্রেনের যাত্রাপথ বাড়ানোর কথা ভাবছে রেল। এ ছাড়া ডাবল লাইন, বিদ্যুদয়নের বিষয়গুলিতে বাড়তি বরাদ্দের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। জোর দেওয়া হয়েছে, যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের উপরেও। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের ভাগ্যে নতুন ট্রেন-সহ একটি বা দু’টি কারখানা, বেশ কয়েকটি রেলওয়ে ওভারব্রিজ ও আন্ডারপাস নির্মাণের শিকে ছিড়তে পারে বলে রেল সূত্রে খবর।
কলকাতার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর আর্থিক বরাদ্দ বাজেটে প্রাধান্য পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। গত আর্থিক বছর থেকেই রেল প্রতিমন্ত্রী অধীররঞ্জন চৌধুরী তাঁর কেন্দ্রের জন্য একটি রেল কারখানার দরবার করছেন। এই বাজেটে ওই কারখানার অনুমোদন মিলতে পারে। রাজ্যের ভাগ্যে ৮-১০টির মতো নতুন ট্রেন জুটতে পারে। যেমন হাওড়া-পুণে, হাওড়া-মুম্বই, হাওড়া-বেঙ্গালুরু, শিয়ালদহ-রাজস্থান, সাঁত্রাগাছি-আনন্দবিহার এক্সপ্রেস। এ ছাড়া, মালদহ-ভাগলপুর-নয়াদিল্লি রাজধানীর মতো একটি সুপারফাস্ট ট্রেন চালানোর পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। উত্তরবঙ্গের নিউ জলপাইগুড়ি থেকে রাঁচি পর্যন্ত একটি ট্রেনও অনুমোদন পেতে পারে। |
|
|
|
|
|