বামফ্রন্ট সরকারের ৩৪ বছরে আবাসন দফতর খরচ করেছিল মাত্র ৬৬ কোটি টাকা। নতুন সরকার মাত্র আড়াই বছরে ৬০০ কোটি টাকা খরচ করে ফেলেছে, মঙ্গলবার কর্মরতা মহিলাদের জন্য হস্টেলের উদ্বোধনে এমনই দাবি করলেন রাজ্যের আবাসন ও যুবকল্যাণ দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। তিনি বলেন, “বাম আমলে রাজ্যে মাত্র দু’টি কর্মরতা মহিলাদের জন্য হস্টেল গড়া হয়েছিল। আমাদের সরকার এর মধ্যেই দুটি হস্টেল গড়ে ফেলেছে। একটি দুর্গাপুরে এবং অন্যটি সল্টলেকে।”
এ দিন উদ্বোধন হওয়া হস্টেল তাঁরা তৈরি করেছেন, অরূপবাবু এই দাবি করায় অবশ্য ক্ষুব্ধ সিপিএম। হস্টেলটির কাজ তাদের আমলেই শুরু হয়েছিল বলে দাবি তাদের। দুর্গাপুরের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক বিপ্রেন্দু চক্রবর্তী বলেন, “বাম আমলে তৈরি হওয়া বিভিন্ন প্রকল্প একের পর এক নতুন করে নীল-সাদা রঙ করে মানুষের কাছে কৃতিত্ব দাবি করা হচ্ছে। মানুষ নিশ্চয়ই সব দেখছেন।”
আবাসন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কর্মসূত্রে বাইরে থেকে দুর্গাপুরে এসে থাকার ব্যবস্থা করতে নাকাল হন মহিলারা। চড়া বাড়িভাড়া একটি সমস্যা। সমস্যা মেটাতে কর্মরতা মহিলাদের জন্য এই হস্টেল গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ডিসেম্বরে নির্মাণ কাজ শেষ হয়। দ্বিতল এই হস্টেলে আপাতত ৪০ জন থাকতে পারবেন। |
খরচ হয়েছে প্রায় দেড় কোটি টাকা। মঙ্গলবার উদ্বোধনে অরূপবাবু জানান, পরে আরও দু’টি তলা গড়া হতে পারে। অনুষ্ঠানে ছিলেন কৃষিমন্ত্রী মলয় ঘটক, ছোট ও মাঝারি শিল্প ও প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের প্রতিমন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। ছিলেন এডিডিএ-র চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে হাজির ছিলেন না দুর্গাপুরের আর এক বিধায়ক তথা শহরের মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অরূপবাবু দাবি করেন, বাম আমলে আবাসন দফতর প্রায় কিছুই করেনি। দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী আবাসন দফতরের থেকে আবাসন পর্ষদের কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকতেন। তিনি বলেন, “রাজ্যের নতুন সরকার এসে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে সব তথ্য তুলে ধরা হচ্ছে ওয়েবসাইটে।” তিনি জানান, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সরকারি আবাসনগুলির বেহাল দশা হয়ে গিয়েছিল। রাজ্য সরকার সে সব সংস্কারের কাজ হাতে দিয়েছে। দুর্গাপুরের সরকারি আবাসনগুলিও দ্রুত সংস্কার করে রং করে দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি তাঁর।
সিটি সেন্টারের রেন্টাল হাউসিং এস্টেটে কর্মরতা মহিলাদের জন্য এই হস্টেল ২০০৮ সালে শিলান্যাস করেছিলেন বাম সরকারের তৎকালীন স্বনিযুক্তি দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী রেখা গোস্বামী, দাবি সিপিএমের। তাদের আরও দাবি, কাজও শুরু হয়েছিল বাম আমলেই। দ্বিতলের ছাদ ঢালাইও হয়ে গিয়েছিল। নতুন সরকারের আমলে শুধু প্লাস্টার ও রং করার কাজ হয়েছে বসে দাবি করেছে সিপিএমের। |