প্রায় দুই বছর ধরে ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরে ঘোরাঘুরি করেও পারিবারিক সূত্রে পাওয়া দুই বিঘা জমি নিজের নামে করতে পারেননি সুজাপুর চাষপাড়ার বাসিন্দা মাদ্রাসার শিক্ষক আসরাফুল হক। শেষ পর্যন্ত ওই জমি উদ্ধার করতে কলকাতায় কালীঘাটে ছুটে গিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। আর এরপরই নড়চড়ে বসেছে জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক সমস্যা মেটাতে ১৭ ফেব্রুয়ারি জেলা ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরেরে আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছেন।
এই প্রসঙ্গে মালদহের জেলাশাসক শরদ কুমার দ্বিবেদি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর অফিস থেকে চিঠি পাওয়ার পরেই জমির বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরেরে আধিকারিকদের ডাকা হয়েছে। কীভাবে ওই মদ্রাসার শিক্ষকের জমি অন্যের নামে রের্কড হল, এর পিছনে কারা রয়েছে তা খতিয়ে দেখার পরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” আর জেলা ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিক সঞ্জীব চাকি বলেন, “বিষয়টি দেখা হচ্ছে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর অফিসের চিঠি এখনও হাতে পাইনি।”
ওই শিক্ষকের পরিবারের দাবি, কালিয়াচকের সুজাপুরের চাষপাড়ার বাসিন্দা আসরাফুল হকের দাদু হাজি মহলত হোসেনের সাড়ে দশ বিঘা জমি রয়েছে ইংরেজবাজারের যদুপুরের দাইগ্রামে। পারিবারিক সূত্রে সেই জমির চার বিঘা জমি আসরাফুল হকের বাবা আমজাদ আলি পায়। আমজাদ আলি মারা যাওয়ার পর তাঁর ছোট ছেলে আবদুল রহমান দুই বিঘা জমি নিজের নামে রেকর্ড করলেও বড় ছেলে আসরাফুল হক নিজের নামে জমি রেকর্ড করতে গিয়ে দেখেন, জমি সুজাপুরের করিমুল্লার নামে এক ব্যক্তির নামে রেকর্ড হয়ে গিয়েছে। আসরাফুলবাবু বলেন, “দুই বছর ধরে ইংরেজবাজার ব্লক ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরে ঘোরাঘুরি করছি। জমি নিজের নামে রেকর্ড করাতে পারেনি। দালাল টাকাও চায়। বাধ্য হয়ে কলকাতা ৩ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি যাই। সমস্যার শুনে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে থাকা এক আধিকারিক মালদহের জেলাশাসককে চিঠি লিখে বিষয় দেখার জন্য অনুরোধ করেন। ওই চিঠি জেলাশাসক অফিসে জমা দিয়েছি।”
অন্য দিকে, যার নামে ওই দুই বিঘা জমি ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরে কর্মীরা রেকর্ড করেছেন, সুজাপুরের সেই করিমুল্লা বলেছেন, “ওই জমি আমার নয়। কী ভাবে আমার নামে রেকর্ড হয়েছে তা বলতে পারব না।” |