রাজ্য সরকারের অনুমোদনের ছ’বছর পরেও শূন্যপদে ৪০ জন শিক্ষক ও ২০ জন অশিক্ষক নিয়োগ না করতে পারার অভিযোগ উঠেছে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠনপাঠন থেকে শুরু করে কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশ অফিসার জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের একাংশও ক্ষুব্ধ।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, শিক্ষাকর্মীর অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ২১টি কলেজের লক্ষাধিক ছাত্রছাত্রীর রেজিস্ট্রেশন থেকে শুরু পরীক্ষা ব্যবস্থা সামাল দিতে হিমসিম খাচ্ছেন কর্মী-অফিসারেরা। পাশাপাশি, রাজ্য সরকার অতিরিক্ত ২০ জন শিক্ষক পদের অনুমোদন না দেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইউজিসির কাছে আর্থিক অনুমোদনের (১২বি) জন্য আবেদনই করতে পারছে না। ফলস্বরূপ, চালু হওয়ার সাত বছর পরেও বিশ্ববিদ্যালয় ইউজিসির কাছে থেকে এক টাকাও আর্থিক সাহায্য পায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোপালচন্দ্র মিশ্র বলেন, “শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। খুব শীঘ্রই সমস্ত পদে নিয়োগ করা হবে। ইউজিসি-র সাহায্য পেতে রাজ্য সরকারের কাছে অতিরিক্ত শিক্ষকের অনুমোদন চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। ইউজিসি-র অনুদান না মেলায় গবেষণার কাজও ভীষণভাবে ব্যাহত হচ্ছে।”
২০০৮ সালে ১৯ ফেব্রুয়ারি গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় চালু হয়। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৮ বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্সে আড়াই হাজারের বেশি ছাত্রছাত্রী পড়াশুনা করছেন। চালু হওয়ার এক বছর পরই রাজ্য সরকার ২০০৯ সালে ৯৬ জন শিক্ষকের অনুমোদন দেয়, যার মধ্যে ১৮ জন প্রফেসর, ২৬ জন অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর, ৫২ জন অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর। কিন্তু সাত বছর হতে চললেও অনুমোদিত ৯৬ জন শিক্ষকের বদলে ৫৬ জন শিক্ষক কাজ করছেন। ৪০টি পদ ফাঁকা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসারদের একাংশই জানান, ইউজিসি-র সাহায্য পেতে ১১৬ জন শিক্ষকের অনুমোদন দরকার। কিন্তু রাজ্য সরকার ৯৬ জন শিক্ষকের অনুমোদন দিয়েছে। পদার্থবিদ্যা, উদ্ভিদবিদ্যা, জীববিদ্যা, অর্থনীতিবিদ্যা-সহ ১০টি বিষয়ে এক জন করে মোট ২০ জন শিক্ষকের অনুমোদনের প্রয়োজন।
বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে ছাত্র সংগঠনগুলিও। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ জেলা সভাপতি প্রসেনজিৎ দাস বলেন, “সমস্যা মেটাতে আমরা দ্রুত শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর দ্বারস্থ হচ্ছি।” আর ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি বাবুল শেখ বলেন, “এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার কোনও পরিবেশ নেই। সেই কারণে শিক্ষকেরাও এখানে আসতে চান না। শিক্ষকের অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠনপাঠন মার খাচ্ছে।” |