দলীয় সভায় ডেকে ধাক্কাধাক্কি করে হেনস্থার অভিযোগ তুলে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন জলপাইগুড়ি পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলার চিত্রা চট্টোপাধ্যায়। ষাটোর্ধ চিত্রাদেবীকে হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে দলেরই কাউন্সিলর তথা জলপাইগুড়ি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান পিনাকী সেনগুপ্তের বিরুদ্ধে। সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটে এক ক্লাবের সামনে। কাউন্সিলরের অভিযোগ, পুর ভাইস চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে হেনস্থা করে পদত্যাগের জন্য চাপ দেওয়া হয়। তিনি রাতেই ভাইস চেয়ারম্যান পিনাকী সেনগুপ্ত সহ দলের ৪ সমর্থকের বিরুদ্ধে কোয়োয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। সম্প্রতি চিত্রাদেবীর ছেলে সৈকতবাবু তৃণমূলে যোগ দিয়ে যুব তৃণমূলের জেলা সংগঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন।
চিত্রাদেবী অভিযোগ করে বলেন, “ভাইস চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে দলের কয়েকজন সমর্থক আমাকে মারধর করে। ঘটনাস্থলে আমি অসুস্থ হয়ে পরি। চিৎকার শুনে এলাকার বাসিন্দারা আমাকে উদ্ধার করে।” ঘটনার পরে কোতোয়ালি থানায় পৌঁছলে বুকে ব্যথা অনুভব করায় তাঁকে শহরের একটি নার্সিং হমে ভর্তি করানো হয়। কোতোয়ালির আইসি অভিজিৎ দাস বলেন, “তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”
যদিও দলীয় কাউন্সিলারের উপরে হামলার অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু। তিনি বলেন, “শারীরিক কারণে চিত্রাদেবী কাউন্সিলারের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন। ওই বিষয়ে আলোচনার জন্য ওয়ার্ডের দলীয় কর্মী সমর্থকরা সভা ডাকেন। সেখানে আমি নিজে ছিলাম। কাউন্সিলারকে হেনস্থার মত ঘটনা ঘটেনি।” পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান শহর ব্লক কংগ্রেস সভাপতি পিনাকী সেনগুপ্ত পাল্টা অভিযোগ করেন, “চিত্রাদেবী বিশ্বাসঘাতকতা করে তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের ডেকে কংগ্রেসের সভা ভন্ডুল করার চেষ্টা করেন। ওই সময় বাধা দিতে গিয়ে কয়েক জন কংগ্রেস কর্মী জখম হন। এক জন মহিলার উপরে কেন হামলা করতে যাব, উনি তৃনমূল নেতা ছেলের কথায় ঝামেলা করে নাটক করছেন।”
সৈকতবাবুর দলবদলের পরেই চিত্রাদেবীর সঙ্গে দলীয় নেতৃত্ব পুর কর্তাদের সম্পর্কের অবনতি ঘটে বলে সূত্রের খবর। পুর দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আন্দোলন শুরু করেন। চিত্রাদেবী শারীরিক কারণে অব্যাহতি চেয়েছেন পুর চেয়ারম্যানের ওই দাবি করলেও চিত্রা দেবী বলেন, “ওই ধরনের আবেদন করিনি। পুরোটাই সাজানো। ওয়ার্ডে সভা ডাকা হলেও আমাকে জানানো হয়নি।” খবর পেয়ে সেখানে গেলে কয়েকজন কর্মী তাঁর উপরে ঝাপিয়ে পড়ে। তিনি চিৎকার করলে বাসিন্দারা তাঁকে উদ্ধার করে। যদিও পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, “উনি তো তৃণমূল করছেন। কেন দলীয় সভায় তাঁকে আমন্ত্রণ জানাব।” |