দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে একটি স্কুলের এক নিরাপত্তারক্ষীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। স্কুলের ছাদে নিয়ে গিয়ে মুখে রুমাল চাপা দিয়ে তাকে ধর্ষণ করা হয় বলে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের সন্দেহ। শিলিগুড়ির মাটিগাড়া এলাকার একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের ওই ছাত্রী তিন দিন ধরে অসুস্থ ছিল। সোমবার তার বাড়ির লোকজন তাকে বেসরকারি একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকেরা পরীক্ষার পরে তাকে ধর্ষণ করা হতে পারে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন। সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশকে খবর দেন ওই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ।
খবর পেয়েই উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব ওই ছাত্রীর বাড়ির লোকজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। মন্ত্রীর নির্দেশে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগ মোহন নার্সিংহোমে গিয়ে ওই ছাত্রীর বাড়ির লোকজনদের সঙ্গে কথা বলে আশ্বস্ত করেন। বিকেলের মধ্যে স্কুলের তিন নিরাপত্তা রক্ষীকে আটক করে পুলিশ জেরা করে। এ দিন রাতে রাজেশ এক্কা ওরফে রণবীর নামে এক নিরাপত্তা রক্ষীকে পুলিশ গ্রেফতার করে। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার বলেন, “দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। কয়েক জনকে জেরা করা হয়েছে। স্কুলের এক নিরাপত্তা রক্ষীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” পরে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ওই ছাত্রীকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, ছাত্রীটির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলেও সে প্রচন্ড আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। আজ, মঙ্গলবার ছাত্রীটির সঙ্গে মনোবিদেরা কথা বলবেন। এই ব্যাপারে স্কুলের অধ্যক্ষা বলেন, “প্রতিটি ছাত্রীই আমাদের কাছে অত্যন্ত আদরের। কারও যাতে এতটুকুও ক্ষতি না হয়, তা নিশ্চিত করাই আমাদের কর্তব্য। স্কুলের ইতিহাসে এমন অভিযোগ আগে কখনও ওঠেনি। যাই হোক, আমরাও বিশদে খোঁজখবর করছি।” উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী জানান, পুলিশকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষকেও নিরাপত্তা আরও বাড়ানোর জন্য পরামর্শ দেওয়া হবে বলেও মন্ত্রী জানিয়েছেন।
শিলিগুড়ির অভিভাবক মঞ্চের সম্পাদক সন্দীপন ভট্টাচার্য বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। প্রতিটি ছাত্রীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা স্কুল কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। আশা করব, আগামী দিনে ওই স্কুলে দিনের বেলায় কোনও পুরুষ নিরাপত্তা রক্ষী রাখা হবে না। এখন প্রচুর মহিলা নিরাপত্তা রক্ষী মেলে। সব মেয়েদের স্কুলে তাঁদের রাখতে হবে। উপরন্তু মেয়েদের স্কুলের বাসে শুধু পুরুষ ক্লিনার রাখায় নানা অভিযোগ উঠছে। মেয়েদের স্কুলবাসেও আয়া রাখা বাধ্যতামূলক করতে হবে।” |