মাস আড়াই আগেই এসেছিলেন অন্ধ্রপ্রদেশের ওয়াইএসআর কংগ্রেসের প্রধান জগন্মোহন রেড্ডি। এ বার তাঁর কট্টর বিরোধী শিবির, তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি)-র প্রধান চন্দ্রবাবু নায়ডুও নবান্নে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে গেলেন। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জগন্মোহন আর চন্দ্রবাবু দু’জনেরই আলোচনার বিষয়বস্তু অবশ্য এক। ভোটের মুখে ফেডারেল ফ্রন্ট গঠন।
সোমবার নবান্নে বৈঠকের পরে অন্ধ্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু জানান, ফেডারেল ফ্রন্ট নিয়ে আলোচনা ইতিবাচক। ২০ নভেম্বর জগন্মোহনও নবান্নে এসে মমতার সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের মধ্যেও ফেডারেল ফ্রন্ট গঠন নিয়েই কথা হয়েছিল।
অন্ধ্রে জগন্মোহন এবং চন্দ্রবাবুর দলের অহিনকুল সম্পর্ক। নিজেদের রাজ্যে তাঁরা বিরোধী শিবিরের নেতৃত্ব দিলেও দু’জনেই নবান্নে এসে মমতার সঙ্গে কথা বললেন একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে। কিন্তু মমতার প্রস্তাবিত ফেডারেল ফ্রন্টে অন্ধ্রের ওই দু’দলের সহাবস্থান আদৌ সম্ভব কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছে। এর মধ্যে বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও কয়েক বার দেখা করেছেন চন্দ্রবাবু। তাঁদের মধ্যে দীর্ঘ ক্ষণ বৈঠকও হয়েছে। অন্য দিকে গত সপ্তাহে জগন্মোহনও সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাটের সঙ্গে দিল্লিতে গিয়ে বৈঠক করেছেন। |
নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে চন্দ্রবাবু। —নিজস্ব চিত্র। |
গত ৩০ জানুয়ারি ব্রিগেডে কেন্দ্রে অ-কংগ্রেস এবং অ-বিজেপি সরকার গড়ার ডাক দিয়েছিলেন মমতা। বিভিন্ন রাজ্যে তাঁদের বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে জোরদার ফেডারেল ফ্রন্ট গড়ার কথাও বলেছিলেন তিনি। কিন্তু তার পরেই সিপিএমের উদ্যোগে তৃতীয় ফ্রন্টের ছাতার তলায় ১৩টি আঞ্চলিক দল একজোট হওয়ায় মমতার ফেডারেল ফ্রন্টের বাস্তবতা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। সে-দিক থেকে কলকাতায় এসে মমতার সঙ্গে চন্দ্রবাবুর এই আলোচনা করে যাওয়ার মধ্যে আলাদা তাৎপর্য দেখছে বিভিন্ন রাজনৈতিক শিবির।
এ দিন দেড়টা নাগাদ নবান্নে আসেন টিডিপি-প্রধান। মমতার সঙ্গে প্রায় আধ ঘণ্টা একান্তে বৈঠক করেন তিনি। পরে নবান্ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় চন্দ্রবাবু বলেন, “আমাদের মধ্যে ফেডারেল ফ্রন্ট গঠন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আলোচনা যথেষ্ট ইতিবাচক।” ফেডারেল ফ্রন্টের আগামী লোকসভা নির্বাচনে কেমন ফল করবে? জবাবে চন্দ্রবাবু বলেন, “অপেক্ষা করুন। ভালই হবে।”
নবান্ন সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকে লোকসভার আসন্ন অধিবেশনে তেলঙ্গানা বিল নিয়েও মমতার সমর্থন চেয়েছেন চন্দ্রবাবু। এ প্রসঙ্গে চন্দ্রবাবু বিস্তারিত ভাবে কিছু বলতে চাননি। তিনি শুধু বলেন, “আমরা লোকসভায় তেলঙ্গানা বিলের বিরোধ করব।”
চন্দ্রবাবুর সঙ্গে তাঁর বৈঠকে কোন বিষয়ে কতটা কী আলোচনা হয়েছে, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি মমতা। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, এটা ছিল সৌজন্য-সাক্ষাৎ। |