হোম থেকে নিখোঁজ মানসিক ভারসাম্যহীন এক কিশোরের দেহ মিলল রেললাইনে। ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার ওন্দার ভাদুল এলাকায়। রবিবার রাতে রেললাইনের পাশে থেকে কিশোরটির দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর ডান হাত কাটা ছিল।
রেলপুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত কিশোরের বয়স আনুমানিক ১৪ বছর। ২০১১ সালে মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানার পুলিশ ওই কিশোরটিকে উদ্ধার করে। ওই বছরই ওন্দার কমলা গ্রামের একটি বেসরকারি হোমে তাকে পাঠানো হয়। হোম কর্তৃপক্ষ তার নাম রাখেন সন্দীপ। শনিবার সন্ধ্যা থেকেই সে নিখোঁজ ছিল। রবিবার সকালে ওন্দা থানায় হোম কর্তৃপক্ষ নিখোঁজ ডায়েরি করেন। ওই হোম থেকে প্রায় দু’কিলোমিটার দূরে তার দেহ উদ্ধার হয়। প্রাথমিক ভাবে রেলপুলিশের অনুমান, চলন্ত ট্রেনে উঠতে গিয়েই কিশোরটির ডান হাত ছিঁড়ে যায় ও ছিটকে পড়ে তার মৃত্যু হয়। কিশোরটির পরনে প্যান্ট ছিল না। শরীরে বিশেষ একটা চোট আঘাত ছিল না বলেই প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে রেলপুলিশ।
জেলা সমাজকল্যাণ আধিকারিক সুরেন্দ্র প্রসাদ ভকত বলেন, “ওই হোমে ২৫ জন ছেলে রাখার কথা। কিন্তু, ওরা ৩২ জনকে রাখছে। নির্দিষ্ট কোটার বেশি আবাসিক রাখতে গেলে হোমের পরিকাঠামোও উন্নত করাতে হয়। এক্ষেত্রে তা হয়নি। পুরো বিষয়টির রিপোর্ট আমি উপরমহলে পাঠাব।” ওই বেসরকারি হোম সূত্রের খবর, এর আগেও দু’বার হোম থেকে পালিয়ে গিয়েছিল সন্দীপ। তল্লাশি চালিয়ে দু’বারই তাকে পুলিশ উদ্ধার করে। জেলা প্রশাসনিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ৩২ জন মানসিক ভারসাম্যহীন কিশোর থাকলেও হোমের মূল দরজায় কোনও রক্ষী বা গেটম্যান থাকেন না। দরজাও সব সময় বন্ধ থাকে না। ফলে, রক্ষিবিহীন দরজা খোলা পেয়ে শনিবার সন্ধ্যায় হোম কর্তৃপক্ষের চোখকে ফাঁকি দিয়ে সন্দীপ পালিয়ে যায় বলে পুলিশের ধারণা।
হোম সূত্রের খবর, চলন্ত গাড়িতে ছুটে ওঠার একটা প্রবণতা ছিল ওই কিশোরের মধ্যে। সেই প্রবণতাই তার জীবন কেড়ে নিল বলে মনে করেন হোমের কর্মীরা। কিন্তু আগে দু’বার পালানোর পরেও সন্দীপের উপরে বিশেষ নজর কেন রাখেনি হোম কর্তৃপক্ষ, কেনই বা হোমের দরজায় কোনও প্রহরী রাখার ব্যবস্থা করা হয়নি, এ সব প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি হোমের সম্পাদক সত্যেন্দ্রনাথ সামন্ত। তাঁর কথায়, “আমরা সমস্ত আবাসিকের উপরেই বিশেষ নজর রাখি। কিন্তু, আবাসিকদের তুলনায় আমাদের কর্মীসংখ্যা কম হওয়ায় একটা সমস্যা রয়েছে। এমনিতে হোমের দরজা বন্ধই থাকে। তবে, ছেলেটি পালানোর মতো ফাঁক কী ভাবে পেল, তা খতিয়ে দেখছি।” |