যুবকের মৃত্যুতে চোলাইয়ের ঠেক নিয়ে বিক্ষোভ
নিখোঁজ যুবকের দেহ পুকুরে উদ্ধার হওয়াকে কেন্দ্র করে সোমবাহ উত্তেজনা ছড়াল দেগঙ্গা থানার তরফদারকাটি গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে মৃতের নাম অবিজিৎ কর্মকার (২৬)। বাড়ি দিঘিরআটি গ্রামে। তবে গ্রামবাসীদের অনেকের দাবি, চোলাই খেয়ে বাড়িতে ফেরার সময় অভিজিৎ পুকুরে পড়ে যায়। তাতেই সে মারা যায়। আবার একাংশের দাবি, দুষ্কৃতীদের মারধরের চোটেই অভিজিতের মৃত্যু হয়েছে। পরে তাকে পুকুরে দেওয়া হয়। এ দিন পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধারে গ্রামে গেলে তাদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। তাঁদের অভিযোগ, এলাকায় চোলাইয়ের রমরমার কারণে দুষ্কৃতীদের উপদ্রব বেড়ে গিয়েছে। তা ছাড়া গ্রামের গরিব গুরবো মানুষ রোজগারের প্রায় পুরো টাকাটাই চোলাইয়ের নেশায় উড়িয়ে দিচ্ছে। ঘরে ঘরে অশান্তি। পুলিশ সব জনেও নির্বিকার। ফলে দুষ্কৃতীরা বেপরোয়া। পরে দেগঙ্গা থানার ওসি বাহিনি নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে এলাকায় চোলাইয়ের ঠেক ভেঙে ফেলার প্রতিশ্রুতি দিলে বিক্ষোভ থামে। পুলিসের উপস্থিতিতেই এলাকায় এক চোলাই কারবারীর বাড়ির পাশ থেকে কয়েকশো লিটার চোলাই-সহ ২৪টি ব্যারেল এবং চোলাই তৈরির সরঞ্জাম আটক করা হয়। ওসি পলাশ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “দেহ ময়নাতদন্তের জন্য বারাসত হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আপাতত একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে।”
গ্রামে উদ্ধার চোলাই ও চোলাই তৈরির সরঞ্জাম।—নিজস্ব চিত্র।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, দেগঙ্গার চাঁপাপুকুর পঞ্চায়েতের তরফদারকাটি গ্রাম-সহ আশপাশের এলাকায় ব্যাপকহারে চোলাই বিক্রি হয়। চোলাইয়ের ঠেকের কারণে এলাকায় দুষ্কৃতীদের আনাগোনাও রয়েছে। ফলে বেড়েছে চুরি-ছিনতাই। হামাদামা বাজারে কাঠের দোকানের মালিক আফতার দেওয়ানের দোকানে কাজ করত অভিজিৎ। ইদানীং বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে চোলাইয়ের নেশা ধরেছিল সে।
আফতাবের দাবি, রবিবার রাত ৯টা নাগাদ কাজ শেষ করে সাইকেলে বাড়ির উদ্দেশে বেরিয়ে পড়েছিল অভিজিৎ। রাতে সে বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন খোঁজাখুজি শুরু করেন। কিন্তু কোনও সন্ধান মেলেনি। পরদিন সকালে রফদারকাটি গ্রামে একটি স্কুলের পাশ দিয়ে যাওয়া রাস্তায় তার সাইকেল পনে থাকতে দেখা যায়। রাস্তার অন্য পাশে পুকুরে তার দেহ ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ দেহ তুলতে গেলে গ্রামবাসীরা অভিযোগ করে, প্রভাত ঘোষ নামে এক ব্যক্তি এলাকায় চোলাইয়ের ব্যবসায় যুক্ত। অবিলম্বে তাকে গ্রেফতার করতে হবে। শেষ পর্যন্ত জনতার দাবি মেনে পুলিশ প্রভাতবাবুর বাড়িতে তল্লাশি চালায়। তবে তার আগেই তিনি পরিবার নিয়ে পালিয়ে যান। বাড়িতে কিছু না পেলেও প্রভাতবাবুর বাড়ির কাছেই আনারসের খেত থেকে পুলিশ চোলাইভর্তি ব্যারেল, চোলাই তৈরির সরঞ্জাম প্রভৃতি উদ্ধার করেছে।
দেগঙ্গা পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন ভূমি কর্মাধ্যক্ষ তথা তৃণমূল নেতা হুমায়ুন রেজা চোধুরী বলেন, “এলাকায় চোলাইয়ের ঠেকের রমরমার পাশপাশি দুষ্কৃতী-তাণ্ডবও বেড়েছে। কিন্তু পুলিশ নির্বিকার।” মৃতের বাবা হারান কর্মকারের দাবি, “ছেলে যদি মদ খেয়ে থাকহে তাহলে তো সাইকেল নিয়েই পুকুরে পড়ার কথা। অথচ সাইকেল পড়ে রইল রাস্তায়। ছেলের দেহ মিলল পুকুরে। আমি চাই ঘটনার সঠিক তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দেওয়া হোক। পাশাপাশি এলাকা থেকে নির্মূল করে দেওয়া হোক চোলাইয়ের সমস্ত ঠেক।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.