মাস খানেক পরেই স্কুলে ইউনিট টেস্ট। অথচ ছাত্রছাত্রীদের হাতে এখনও এসে পৌঁছয়নি সরকারি পাঠ্যপুস্তক। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা, কী ভাবে তারা পরীক্ষা দেবে তা নিয়ে চিন্তিত অভিভাবকের এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাঢ় করেছেন। ক্ষুব্ধ শিক্ষক এবং ছাত্রছাত্রীরাও। এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমার হিঙ্গলগঞ্জের দক্ষিণ চক্রের ৫৯টি স্কুলে। ওই সব স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, আগামী মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে ছাত্রছাত্রীদের ইউনিট টেস্ট। অথচ কোনও স্কুলে সপ্তম, কোনও স্কুলে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের হাতে এখনও পৌঁছয়নি সরকারি বই। কোথাও আবার বই এলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় কম থাকায় সকলকে দেওয়া যায়নি। ফলে একজনের বই অন্যরা দেওয়া নেওয়া করে ব্যবহার করছে। এর ফলে পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে। বার বার সমস্যার কথা সংশ্লিষ্ট দফতরে জানিয়েও কোনও ফল হয়নি।
এ ব্যাপারে হিঙ্গলগঞ্জ দক্ষিণ চক্রের এসআই উজ্জ্বল রায় বলেন, “সর্বশিক্ষা দফতর থেকে বই আসতে দেরি হওয়ায় কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। তা ছাড়া হিঙ্গলগঞ্জের প্রত্যম্ত এলাকার স্কুলে বই পৌঁছনোর ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা রয়েছে। তবে চেষ্টা করা হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে তাড়াতাড়ি স্কুলগুলিতে সরকারি বই পৌঁছে দেওয়ার।”
হিঙ্গলগঞ্জের দক্ষিণ চক্রের অধীনে স্কুলের সংখ্যা ৫৯। সরকারি বই না পাওয়ার জন্য ওই সব স্কুলের সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করতে পারছে না। গোবিন্দকাটি শিক্ষা নিকেতনের সহকারি প্রধান শিক্ষক আশিস মণ্ডল বলেন, “যেখানে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে বই দেওয়ার কথা, সেখানে ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ হয়ে গেলেও অষ্টম শ্রেণির বিজ্ঞান, ভূগোল ও ইতিহাস বই এখনও পায়নি ছাত্রছাত্রীরা। অন্যান্য ক্লাসের বই পাওয়া গেলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা কম। এ দিকে মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে ইউনিট টেস্ট। কী ভাবে ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা দেবে বুঝতে পারছি না। তার উপর অভিভাবকেরা ভাবছেন স্কুলের গাফিলতিতেই এটা ঘটছে।” অভিভাবকদের অভিযোগ, ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে। সব কিছু জানা সত্ত্বেও শিক্ষা দফতর কেন ব্যবস্থা নেয়নি।
মালেকান ঘুমকি রামকৃষ্ণ বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষক রঞ্জিত কুমার মণ্ডলের কথায়, “অষ্টম শ্রেণির ভূগোল, ইতিহাস ও বিজ্ঞান বই না পেয়ে আমরা খুবই সমস্যায় পড়েছি। ছাত্রছাত্রীদের পঠনপাঠনেরও প্রভূত ক্ষতি হচ্ছে। অথচ সমস্যা নিয়ে বার বার সংশ্লিষ্ট দফতরের দ্বারস্থ হলেও কোও কাজের কাজ হয়নি।” সুন্দরবন লাগোয়া কালীতলা হাইস্কুলে আবার সপ্তম শ্রেণির একটি এবং অষ্টম শ্রেণির চারটি বই পৌঁছয়নি। প্রধান শিক্ষক বৃন্দাবন মণ্ডল বলেন, “সরকারি বই না পাওয়ায় ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে। অথচ সামনেই পরীক্ষা।’’ |