বোরো চাষের জল পাওয়াকে কেন্দ্র করে খানাকুলের মোস্তাফাপুরে দুই পাড়ার চাষিদের মধ্যে অশান্তি চলছিল দিন দুয়েক ধরেই। সোমবার সকালে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এক পক্ষ সিপিএম এবং অন্য পক্ষ তৃণমূল সমর্থক হওয়ায় গোলমালে রাজনীতির রং লাগে। পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত বলেন, “পরিকল্পিত ভাবেই সিপিএম ব্রিগেড সভা থেকে ফিরে সন্ত্রাস শুরু করেছে। এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা বিনষ্ট করলে কাউকেই ছেড়ে কথা বলা হবে না। পুলিশ প্রশাসনকে কড়া পদক্ষেপ করতে বলেছি।” পক্ষান্তরে, সিপিএমের খানাকুল জোনাল কিটির সম্পাদক মণীন্দ্র রানা বলেন, “বোরো চাষের জল নিয়ে দুই পাড়ার চাষিদের ঝগড়া-মারপিটে অযথা রাজনীতির রং লাগাচ্ছে তৃণমূল।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি বছর বোরো চাষের জল নিয়ে খানাকুলের প্রায় সর্বত্রই মারপিট হয় চাষিদের। ডিভিসি-র ছাড়া জল মুণ্ডেশ্বরী এবং দামোদর হয়ে খানাকুলে পৌঁছয় ফ্রেব্রুয়ারি মাসের গোড়ায়। নিচু এলাকাগুলিতে অবশ্য জল পৌঁছয় কিছুটা দেরিতে। মোস্তফাপুরের তৃণমূল প্রভাবিত মধ্যপাড়ার চাষিরা তাঁদের এলাকার সব জমিতে জল না যাওয়া পর্যন্ত তা আটকে রাখছেন, এই অভিযোগ তোলে সিপিএম প্রভাবিত দক্ষিণপাড়ার চাষিরা। গত শনিবার থেকে তাঁরা জল আটকে রাখা যাবে না বলে দাবি তোলেন। রবিবার বিকালে দুই গ্রামের চাষিরা এ নিয়ে বৈঠক করেন। সিদ্ধান্ত হয়, জল আটকে রাখা হবে না। কিন্তু তার পরেও এ দিন ওই জল নিয়েই গোলমাল বাধে। তৃণমূলের অভিযগ, সিপিএমের লোকজন তাঁদের ঘর ভাঙচুর ও লুঠপাটও করে।
দক্ষিণপাড়ার চাষিদের পক্ষে সিপিএমের নেতা হরিপদ মালের অভিযোগ, “বৈঠকের পরও ওরা জল আটকে রেখেছিল। আমরা তারই প্রতিবাদ করতে গেলে ওরা মারধর করে। আমাদের পাড়ার লোকরা প্রতিবাদ করে। দু’পক্ষের লাঠালাঠি এবং ইট-পাথর ছোড়াছুড়ির মধ্যে কিছু বাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। লুটপাটের অভিযোগ মিথ্যা।” অন্য দিকে, মধ্যপাড়ার তৃণমূল নেতা অরিন্দম শী বলেন, “বোরো চাষের জলকে অজুহাত করে সিপিএম ক্ষমতা প্রদর্শন করল।” তৃণমূলের পক্ষে সিপিএম নেতা হরিপদ মাল-সহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয় থানায়। পুলিশ জানায়, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তরা পলাতক। তাঁদের ধরার চেষ্টা হচ্ছে। |