|
|
|
|
ভিন্ রাজ্যে মমতার হয়ে প্রচার করতে পারেন অণ্ণা |
অনমিত্র সেনগুপ্ত • নয়াদিল্লি
১০ ফেব্রুয়ারি |
স্বঘোষিত শিষ্য তিনি। তবু গুরু অণ্ণা হজারেকে প্রচারে নামাতে পারেননি অরবিন্দ কেজরিওয়াল। অথচ এ বার লোকসভা নির্বাচনের আগে ঠিক সেটাই করে দেখাতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সব কিছু ঠিক থাকলে ‘ফাইট ফর ইন্ডিয়া’ নামে একটি অরাজনৈতিক মঞ্চ থেকে তৃণমূল নেত্রীর হয়ে প্রচারে নামতে চলেছেন অণ্ণা।
চলতি লোকসভা নির্বাচনে শুধু পশ্চিমবঙ্গেই সীমাবদ্ধ থাকতে চাইছে না মমতা। বাংলার পাশাপাশি অন্য রাজ্য থেকে নির্বাচনে লড়বে তাঁর দল। ইতিমধ্যেই দশটি রাজ্যকে চিহ্নিত করেছে তৃণমূল শিবির, যেখান থেকে দলের আসন জেতার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তাঁরা মনে করছেন। দলের বক্তব্য, কংগ্রেস বা বিজেপি কোনও বড় দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না। এ ক্ষেত্রে যে আঞ্চলিক দল যত বেশি আসন পাবে, সরকার গড়ার চাবিকাঠি তার হাতে থাকবে।
সেই কারণেই ভিন্ রাজ্যের প্রচারে বিশেষ করে অণ্ণাকে ব্যবহার করতে চাইছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের বক্তব্য, দলীয় নেতা-নেত্রীরা ছাড়াও দলের হয়ে বলার জন্য এমন একটি মুখ দরকার, যাঁর সবর্জনগ্রাহ্যতা রয়েছে। সর্বভারতীয় রাজনীতিতে অণ্ণার বক্তব্যের গুরুত্ব রয়েছে। সে ক্ষেত্রে বর্তমানে দলের কাছে অণ্ণার চেয়ে ভাল বাজি আর নেই বলেই মত তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের।
অধিকাংশ আঞ্চলিক দল এখন জল মাপতে ব্যস্ত। নির্বাচনের পরে জোটের কান্ডারি কে হবেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এই অবস্থায় যদি অণ্ণা মমতার হয়ে সওয়াল করেন, সে ক্ষেত্রে নেতৃত্বের প্রশ্নে অন্তত কয়েক ধাপ এগিয়ে থাকবেন তৃণমূল নেত্রী। অন্তত তেমনটাই মনে করে দল। রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন এ প্রসঙ্গে বলেন, “অণ্ণা ও মমতা দু’জনের মধ্যে স্বাভাবিক মিল রয়েছে। দু’জনেই সরল, অনাড়ম্বর জীবনযাপনে বিশ্বাসী। দু’জনেই সাধারণ মানুষের উন্নতিতে সক্রিয় রয়েছেন।”
ইতিমধ্যে অণ্ণা ও মমতা পরস্পরের কাছে আসার ইঙ্গিতও দিয়েছেন। দু’পক্ষের মধ্যে চিঠি বিনিময় হওয়া ছাড়াও অণ্ণার ১৭ দফা পরামর্শের মধ্যে অনেকগুলিই মেনে নেওয়া এবং তা আগামী দিনে দলীয় ইস্তাহারে অন্তর্ভুক্ত করার ইঙ্গিত দিয়েছে তৃণমূল শিবির। অণ্ণার চিঠির প্রত্যুত্তরে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় তাঁকে জানিয়েছেন, “দল আপনার মতো বর্ষীয়ান ব্যক্তিত্বের পরামর্শ মেনে এগোনোয় বিশ্বাস করে।” ওই চিঠি পাওয়ার দিন কয়েকের মধ্যে অণ্ণা দিল্লি এসে মমতার প্রশংসায় সরব হয়েছেন।
তবে অণ্ণার দু’দিনের দিল্লি সফরে তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন অরবিন্দ কেজরিওয়ালও। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর এটাই ছিল গুরু-শিষ্যের প্রথম সাক্ষাৎ। কিন্তু অণ্ণা শিবিরের বক্তব্য, প্রশংসা তো দূরস্থান! সরকারি বাংলো ও গাড়ি ব্যবহার নিয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী যে ভাবে একের পর এক বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন তার সমালোচনাই করেছেন অণ্ণা। পরে সংবাদমাধ্যমে অণ্ণা বলেন, “অনেকে মুখে অনেক কিছুই দাবি করছেন। কিন্তু বাস্তবে করছেন উল্টো কাজ। অথচ বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে দেখুন, উনি মুখ্যমন্ত্রী হয়েও নিজের বাড়িতেই রয়ে গিয়েছেন। সরকারি গাড়ি পর্যন্ত নেন না।” |
|
|
|
|
|