|
|
|
|
পাশে বিজেপি, তেলঙ্গানা বিল পেশ তবু অনিশ্চিত |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি
১০ ফেব্রুয়ারি |
আশঙ্কা ছিল, বিজেপি বড় বাধা হবে। কিন্তু তাঁদের শীর্ষনেতারা জানিয়ে দিয়েছেন, বিলটিতে তাঁরা সমর্থনই করবেন। এই আশ্বাস পেয়ে মনমোহন সরকার আগামী কাল পৃথক তেলঙ্গানা বিল রাজ্যসভায় পেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সরকারের এই উদ্যোগ নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। রাজ্যসভার সেক্রেটারি জেনারেল এক চিঠিতে রাজ্যসভার চেয়ারপার্সন হামিদ আনসারিকে জানিয়েছেন, এই বিলটির সঙ্গে বিপুল অর্থিক বিষয় জড়িত। এটি তাই আগে লোকসভায় পেশ করা উচিত। এর আগে প্রতি বার নতুন রাজ্য গঠনের বিল লোকসভাতেই আগে পেশ করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
মনমোহন সরকার চাইছিল বিলটি আগে রাজ্যসভায় পেশ করতে। যাতে এ যাত্রায় পাশ না হলেও আগামী সংসদেও বিলটি জিইয়ে থাকে। লোকসভায় বিল পেশের পরে তা পাশ না হলে, ভবিষ্যতে আবার কেঁচে গণ্ডুষ করতে হবে নতুন সরকারকে। কিন্তু সরকারের এই ভাবনায় কার্যত জল ঢেলে দিয়েছে রাজ্যসভার সেক্রেটারি জেনারেলের তোলা আপত্তি। ফলে বিলটি শেষ পর্যন্ত কাল পেশ হবে কি না, হলে কোন কক্ষে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েই গিয়েছে।
নিয়মের কারণে যদি বিলটি আগে রাজ্যসভায় পেশ করা না যায়, বিজেপি-র তরফে সমর্থনের আশ্বাস পেয়ে সরকার এখন লোকসভাতেই বিলটি পেশ করতে পারে। তবে তার পরেও বিলটি পাশ করানো নিয়ে অনিশ্চয়তা কম নয়। কারণ আজও অন্ধ্রপ্রদেশ ভাগের বিরোধিতা করে রাজ্যসভায় উত্তাল হয়েছেন সীমান্ধ্র এলাকার সাংসদরা। শুধু স্লোগান তুলেই থেমে থাকেননি, কাগজ ছিঁড়ে, মাইক ভাঙার চেষ্টা করে হুলুস্থূল বাঁধিয়েছেন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে সরকারের তরফে বলা হয়, হট্টগোল করলে দরকারে সাংসদদের সাসপেন্ড করে হলেও বিল পাশ করা হবে।
রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় আজ বিলটিতে অনুমোদন জানিয়ে সই করেছেন। সংসদের গরিমা অক্ষুণ্ণ রাখার ব্যাপারে সব দলের সাংসদকেই যত্নশীল হওয়ার অনুরোধ করেছেন তিনি। এ দিন সংসদে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, “ভারতীয় গণতন্ত্রের গঙ্গোত্রী হল সংসদ। তা দূষিত হলে গঙ্গা বা তার কোনও শাখা- প্রশাখাই দূষণমুক্ত থাকতে পারে না।”
গোড়ায় কংগ্রেসের মনে হয়েছিল, সুষমা স্বরাজ, অরুণ জেটলিরা যে কোনও ভাবে বিলটি রুখে দেওয়ারই চেষ্টা করবেন। কিন্তু সরকারের শীর্ষ সারির নেতাদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকের পর সেই বিজেপি নেতৃত্বই আজ জানান, তাঁরা বিলটি পাশের পক্ষে। শর্ত একটাই, সীমান্ধ্রের জন্য ভাল উন্নয়ন প্যাকেজ দিতে হবে।
ঘরোয়া আলোচনায় বিজেপি নেতারা বলছেন, তেলঙ্গানা বিলটি এ যাত্রায় পাশ হলেই ভাল। নইলে ভবিষ্যতে বিজেপি ক্ষমতায় এলে তাঁদেরও ফের ঝঞ্ঝাট পোহাতে হবে। তবে কংগ্রেসের কৌশল নিয়ে জেটলিরা সংশয়ে। তাঁদের আশঙ্কা, কংগ্রেসই হয়তো চাইছে না বিলটি পাশ হোক। তাই হয়তো তারা সীমান্ধ্রের কংগ্রেস সাংসদদের তলে-তলে তাতাচ্ছে। যদিও কংগ্রেসের দাবি, এমন জল্পনার কোনও ভিত্তি নেই।
কংগ্রেসের ধারণা, বিলটি যদি এ যাত্রায় শুধু রাজ্যসভাতেও পাশ হয়, লোকসভা ও বিধানসভা ভোটে তেলঙ্গানা অঞ্চলে দল ভাল ফল করতে পারবে। এমন একটা জল্পনাও রয়েছে যে, রাজ্য ভাগের প্রতিবাদে কিরণকুমার রেড্ডি নতুন দল গড়লে বাকি অন্ধ্রের ভোট তিনি টানতে পারবেন। ভোটের পরে তিনি আবার পুরনো দলের পাশে চলে এলে বাকি অন্ধ্রে দলীয় ক্ষতি ঘুরপথে পুষিয়ে নিতে পারবে কংগ্রেস। তবে কংগ্রেসকে ভাবাচ্ছে দুনীতি মোকাবিলার ৬টি বিল। বিলগুলি পাশ করানোর দাবি করছেন রাহুল গাঁধী। তিনি যাতে সফল না হন, সেই চেষ্টা বিজেপি করবেই। এই অবস্থায় পরশু সুষমা-জেটলি-সহ বিজেপি-র চার নেতাকে মধ্যাহ্নভোজে ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। সংসদ চালাতে বিজেপি যাতে সাহায্য করে সে জন্য জেটলিকে একটি চিঠিও লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী। যদিও ভোটের মুখে এই কূটনীতি কতটা সফল হবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে সকলেরই। |
|
|
|
|
|